পৌষের এক দুপুরে স্বর্গ থেকে আনন্দ বার্তা এল, দেবতা স্বর্গের এক প্রজাপতিকে পৃথিবীতে পাঠাবেন!
যিনি প্রথম শুনলেন এ বার্তা, তার সে কি পুলক! বুকের ভেতর সুখের তিরতির অনুভূতি!
বিস্ময় মেশানো অবশ অনুভূতিতে হাত পা সব স্থবির করে দিল এক নিমিষে। আবেশ কাটলে সে বিধাতার কাছে কৃতজ্ঞতায় নতজানু হল।
....................................
এরপর টিপ টিপ করে পথ চলা। পৃথিবীতে তো আর স্বর্গের নিয়ম খাটে না, তাই তাকে এখানকার নিয়ম মানতে হবে। মায়ের জঠরে বাসা বাধলো সে। অতি সাবধানী মা তিল তিল করে বড় করে তোলেন তাকে। রাজ্যের সব কঠিন নিয়ম কানুন অবলীলায় মেনে চলেন। মায়ের সাথে তার চুপিচুপি অনেক কথা হয়। মা যখন হাসেন, সে ও হাসে; মা কাঁদলে বুঝিবা সেও কাঁদে.....তাই মা ভুলেও কাঁদেন না।
অনেক অনেক দিন পেরুলে, শ্রাবণের এক সন্ধ্যায় যখন সাঁঝবাতি জ্বালবার সময়.........ঠিক তখন সেই স্বর্গের প্রজাপতি, এক প্রজাপতি কন্যা হয়ে পৃথিবীর আলো দেখে। সে কন্যার হাতে বিধাতা প্রজাপতির মতন এক জন্ম চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন। তাই মা তাকে ডাকেন প্রজাপতি কন্যা, আর সে নিজের দাগটিকে বলে বাটারফ্লাই। প্রজাপতিটির নাম জাফনা। ২০০৪ সালের ৮ ই আগস্ট সন্ধ্যায় সে মায়ের শূন্য কোল ভরে দিয়েছিল।
পরম করুণাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই আমাকে মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করতে দেবার জন্য, সন্তানহীনতার হাহাকার থেকে মুক্ত করবার জন্য। সন্তান ধারণের দীর্ঘ সময়গুলোতে অনেক অনেক অনেক প্রিয়জনের ভালবাসার ছায়ায়, মমতায় সুরক্ষিত ছিলাম তাদের কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি ধন্যবাদ, আজ তাদের প্রতিও কৃতঞ্জতা। এক জীবনে না পাওয়ার চেয়ে পাওয়ার পাল্লটাই যেন বেশী ভারী হল।
সকলের কাছে জাফনার সুসাস্থ্য, এবং মানসিক বিকাশের জন্য দোয়া চাইছি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৩৪