somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্য কবিতা

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিয়ে
শ্রাবণ আহমেদ
.
ঘুমে মগ্ন আমি, হঠাৎ কে যেন দিলো ডাক।
উঠে দেখি ঘরের দরজা একহাত ফাঁক।
আয় হায় তবে কী কেউ করলো চুরি আমার ঘরে?
দামী জিনিস সব নিয়ে গেছে বোধ হয় বস্তা ভরে।

তাড়াতাড়ি উঠলাম বিছানা ছেড়ে,
খুজলাম আগে ফোন।
ঘরে ঢুকে Fardin বলে আরে বেডা
কথা আগে শোন।

খুঁজিস কী অমন করে?
হাঁপাচ্ছিস কেন এতো?
দরজা কেন খোলা রেখেছিস?
যদি ফোনটা চুরি হয়ে যেতো!

আমি তারে দিলাম দুইটা থাপ্পড়
বাঁ গাল বরাবর,
গালে হাত দিয়ে বেটা বলে, মারলি কেন?
আমি কী চোর?

বললাম আমি সংশয়ে ছিলাম
ফোন চুরির ভয়ে,
তার উপর আবার তোর ডাক শুনে
দরজার দিকে তাকিয়ে।

দেখলাম দরজার খিল খোলা, দরজা রয়েছে ফাঁক।
পরাণটা তখন উপুত কইরা ছাড়লো খানিক হাক।
যাক গে সে কথা, বল এবার ডাকলি কী জন্য?
খানিক ভেবে বললো সে, দোস্ত আমি আজ ধন্য।

বললাম, হঠাৎ তোর আবার হলোডা কী?
এতো খুশি খুশি কেন?
মনে হচ্ছে কোথাও মাগনা খাওয়ার
দাওয়াত পেয়েছিস যেন।

শুনে হ্লা কয়, তুই জানলি কেমনে
মাগনা খাওয়া কথা?
আমি বললাম, তোর ডাকাডাকিতেই
বুঝেছি আমি সেটা।

আর কোন কথা না বলে আমি,
ব্রাশটা দাঁতে ঘসে,
শার্ট, প্যান্ট আর জুতা পড়ে
দৌড় দিলাম দুজন কষে।

যাবো এখন Tanvir এর কাছে
তারপর Akash এর বাড়িতে,
হঠাৎই দেখলাম রাস্তার ধারে
দাঁড়িয়ে কেউ লাল শাড়িতে।

বললো Fardin দাঁড়া একটু
দেখে আসি মেয়েটা কে।
আমি বললাম আগে খাওয়া,
মেয়ে দেখা বাদ দে।

তবু সে ছুটলো মেয়ের কাছে,
দেখলো তাকে গিয়ে।
খানিক বাদে দেখলাম আমি,
আসছে সে মেয়েটাকে নিয়ে।

আমি তো পুরাই টাশকি, এটা তো Arika,
তাকে দেখে তো আমি শেষ।
জ্ঞান ফিরতেই খেলাম থাপ্পড়, বললো Fardin
বাহ থাপ্পড়টা দিলাম বেশ।

Arika হেসে কয়, ওই শ্রাবু
তুই এতো ক্রাশ খাইস কেন?
মনে হয় সব মেয়েরাই
তোর ক্রাশের পাত্রী যেন।

পাশে থেকে Fardin বলে, ঐ হ্লা তো লুচ্চা, ওর তো লজ্জ শরম কিছুই নাই।
ঝাড়ি দিয়ে বললাম আমি, বাদ দে সব লুচ্চামি, চল আগে ওদের বাড়ি যাই।

আমি আর Fardin হাঁটছি,
সাথে Arika ও হাঁটছে।
তারে হাঁটতে দেখে ভিতরটা
আমার ভীষণ ফাটছে।

আমি জানি এই মেয়ে সুবিধার না,
একগাদা খায় সে।
তাকে সাথে নিলে আমারা
পর্যাপ্ত খাবার পাবো না যে।

তবুও আর কী করার,
Fardin এর প্রেমিকা বলে কথা।
ওহ হো, ভুলেই গিয়েছি
Fardin এর প্রেমিকা কিন্তু মেয়েটা।

খানিক বাদে পৌঁছালাম আমরা
Tanvir এর বাড়িতে,
চোখ পড়লো পাশে থাকা একটা
কালো রংয়ের গাড়িতে।

ব্যাপার কী,
দামী গাড়ি আসলো কোথা থেকে।
Tanvirকে দেখে অবাক আমি,
হাজার হাসি তার মুখে।

বললাম, দাদা তুমি এই
দামী গাড়ি পেলে কোথায়?
আরেব্বা, নজরই দিলো না
সে আমার মূল্যবান কথায়।

পরে শুনলাম গাড়ীটা নাকি
ভাড়া করা বিয়েতে যাবে বলে।
কার বিয়ে কীসের বিয়ে, সেই চিন্তা
আমার মাথায় ঘুরে চলে।

জিজ্ঞেস করাতে বললো দাদা, বিয়ে নাকি তার।
অবাক আমি, এসব শুনছি কী! কানটা হলো ভার।
পাগড়ী, পাঞ্জাবি পড়ে দাদা বসলো গাড়িতে চেপে।
তারপর আমাদের সবার জন্য জায়গা দিলো মেপে।

এক গাড়িতে দশজন উঠবে,
মোট গাড়ি থাকবে পাঁচটা।
এমন ভাব ধরবে সবাই, যেন ভুল না হয়
বর বর সাজটা।

পরে বুঝলাম ভুয়া বিয়ে এটা,
তাদের উদ্দেশ্য বেগতিক।
বড়লোকের মেয়েকে আনবে তুলে,
বুকটা করছে ধিকধিক।

Akash আর Farabi এরা তো
আগে থেকেই সব জানে।
শুধু জানি না আমি,
কথাটা কেউ দেয়নি আমার কানে।

পাঁচটা গাড়িতে লোক সংখ্যা হলো
হাতে গোণা ত্রিশ জন।
Rasel আবির Emi Nawaz Soikot
আরো ছিলো অধিক জন।

মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে
বললো সৈকত ডেকে,
ফারাবী কষে পা রাখলো
তার গাড়িটার ব্রেকে।

শোন তোরা পৌছাবো কিন্তু
Nazim এর চাচার বাড়িতে গিয়ে,
তারই চাচার মেয়েকে আনবো তুলে,
নাম তার অগোছালো মেয়ে।

সবকিছু ফাইনাল করে চললাম
বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে,
ঘন্টা খানিক পর পৌঁছালাম
আমরা সেথায় অবশেষে।

হলো বিয়ের কাজ, মেয়েটার মুখে লাজ,
কাঁদছে দেখলাম সে।
খুঁশিতে গদগদ হবে তখন, পাত্র Tanvir
যখন এই কথাটা শুনবে সে।

খাওয়া দাওয়ার সে কী বাহার,
করলাম সবকিছু সাবার।
ভাবছি অন্য কোনোদিন অন্যকারো
বরযাত্রীর সাজ ধরবো আবার।

রাতে শোনা গেলো পাত্রীপক্ষের
লোকজন হতে,
মেয়ে বিয়ে দিয়েছে তারা অচেনা
কোনো ছেলের সাথে।

শুনে হাসি আসে, সৈকত বসে পাশে
হঠাৎই Nazim এর কল।
ফোনটা ধরেই হাসির রেওয়াজে বললাম,
কী বলবি তাড়াতাড়ি বল।

চিন্তিত কন্ঠে বললো সে আমার বোনের
ভুল মানুষের সাথে বিয়ে হয়েছে।
আমি বললাম, Tanvir এর সাথে বিয়ে দিলে ঠিক হতো, যা হয়েছে ঠিক হয়েছে।

একমাস পরে জানলো সবাই
আসলে সেই ঘটনা,
Tanvir আর অগোছালো মেয়ের বিয়েতে
কিছুরই কমতি ছিলো না।

শান্তভাবেই সমাপ্তি ঘটলো সবকিছুর,
পেলো দাদা মেয়েটাকে।
আমার জন্যও খুঁজবে তারা বলেছে আমায়,
সুন্দরী একটা মেয়েকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি তাদের কাছেই যাবে তারা তোমার মূল্য বুঝবে....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৪


মৃত্যুর পূর্বে একজন পিতা তার সন্তানকে কাছে ডেকে বললেন, 'এই নাও, এই ঘড়িটা আমি তোমাকে দিলাম। আমাকে দিয়েছিলো তোমার দাদা। ঘড়িটা দুইশত বছর আগের। তবে, ঘড়িটা নেওয়ার আগে তোমাকে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×