শরৎ সর্প কন্যা
শ্রাবণ আহমেদ
.
শরতের কাশবনে
বসিয়া সে আনমনে,
কি যেন ভাবে সে
একা একা নির্জনে।
কাশফুল ছুঁয়ে সে অনুভব করে
জগতের সকল সুখ,
দেখিয়াছি আমি তাহার
হাসি হাসি ঐ মুখ।
একদিন দেখিলাম তাহারে
নদীর ধারে এলোকেশে,
অপলক চাহিয়া থাকায়
ডাকিলো সে আমায় শেষে।
উৎফুল্ল মনে খুশিতে আমি
ছুটিয়া গেলাম তাহার কাছে।
কে জানিতো মানুষ নয় সে
হাজারও সর্প তাহার পিছে।
ভয়ে ভয়ে আমি কহিলাম,
আর আসিবো না দেখিতে তোমায়।
দুটি পা ধরি তোমার
এইবারের মতো ছাড়িয়া দাও আমায়।
শুনিয়া সর্প কন্যা হাসিলো খানিক
প্রাণ খুলিয়া,
কহিলো সে, ভয় পেও না
একটা কথা যাও বলিয়া।
কাঁপা কাঁপা পায়ে কহিলাম আমি
কি শুনিতে চাও আমার তরে?
কহিলো সে একটু ভাবিয়া
ভালোবাসবে আমায় জনম ভরে?
বিস্ময় চোখে চাহিলাম আমি
দেখিলাম তাহারে কিছুক্ষণ।
সে তো হায় সর্প কন্যা
পিরিতে আমার সায় নাহি দেয় মন।
ওহে কন্যা তুমি ভিন্ন প্রাণী
মানুষ জাত নও।
তবুও কেন কন্যা তুমি প্রতিক্ষণে
এই মনে রও?
মন যে আমার দেয় না সায়
তুমি সর্প বলিয়া।
মাফ করিও মাফ করিও
যাও গো তুমি চলিয়া।
বহু অনুরোধ করিলো সে
নাহি দিলাম আমি সাড়া।
সর্পের স্বামী কইবে সবাই
জানিবে যে জন যাঁরা।
যাওয়ার আগে কহিলো কন্যা
আর না আসিবো কাশবনে।
হয়তো আমি থাকিবো জীবনভর
তোমারই ঐ মনে।
চোখে তাহার দেখিয়াছিলাম
সাগর সমান জল।
লক্ষ করিয়া দেখিলাম আমি
চোখটা ছলছল।
এই বুঝি ঝর্ণা ধারায় প্রবাহিত হইবে
সেই জলরাশি।
চলিয়া গেলো কন্যা আহা
কহিলো একবার আসি।
মাস যায় বছর যায় মনে পড়ে
সেই শরৎ সর্প কন্যারে।
মন কাড়িয়াছিল যে
ভালো বাসিয়াছিল এই আমারে।
বুঝিনি তাহারে সেদিন
বুঝিনি তাহার ভালোবাসা।
শরৎ কন্যা তুমি আসিও ফিরিয়া
মিটাইয়ো এই মনের আশা।
মনটা যে বড় ব্যাকুল আমার
তোমারই জন্যে হায়।
একবার তুমি দিও দেখা
ভালোবাসিও আমায়।
রহিলাম আমি তোমার প্রতিক্ষায়..........