দেশ, রাজনীতি এবং আমাদের যুবসমাজ......... । কথাগুলো একে অপরের পরিপূরক হওয়া উচিত ছিল ।
গনতান্ত্রিক দেশের নাগরিক
হিসেবে রাজনীতি আমাদের মৌলিক অধিকার । কিন্তু
আজকালকার জামানায় রাজনীতিকে না বলুন
শব্দটি বেশী শোনা যায় । বহুল প্রচলিত প্রযুক্তিগত
গন মাধ্যম ফেসবুকে বেশিরভাগ ছেলেমেয়রাই
দেখি বাক্তিগত তথ্য তে রাজনৈতিক মতবাদ এর
তালিকায় দেয় 'রাজনীতি আবার কি' অথবা লিখে রাখে 'I hate politics' ।
একটি দেশের যুবসমাজের বেশিরভাগই
যদি রাজনীতিকে ঘৃণা করে তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ
কোথায় ? স্বাধীনতা যুদ্ধে লাখো শহীদ প্রাণ দিয়েছিল
যে দেশের জন্য , তারা মনে হয় জানত না যে দেশ জয়
করলেই আমাদের মুক্তি হবে না । দেশকে রক্ষা করাও
প্রয়োজন । দেশের বর্তমান রাজনীতিবিদদের
শিক্ষাগত যোগ্যতার পরিমান অধিকাংশ ই নিম্ন ।
যুদ্ধের পর পর ই মেধাবী কিছু মানুষ
রাজনীতিতে টিকে আছে বলেই
বর্তমানে দেশটি টিকে আছে নতুবা এতদিনে সস্তা দরে বিক্রি
হয়ে যেত মনে হয় ।
সব বাবা-মা ই চায় তার সন্তান
ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার , সরকারী চাকুরীজীবি ,
ব্যাবসায়ী , আইনজীবি ইত্যাদি হোক । কিন্তু
সমাজে কয়জন বাবা মা চায় যে আমার সন্তান
রাজনীতিবিদ হোক ? দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখুক ।
যে দেশের ঘরে ঘরে স্বার্থপরতা ,
নিজে নিজে ভালো থাকার কথা চিন্তা করা হয়
সে দেশের উন্নতি না হবার ই কথা । আমরা এই
স্বার্থের কথা স্বীকার করতে রাজি না । কিন্তু
দুর্নীতিবাজ দের স্বার্থের টাকা চুরির
ব্যাপারে মন্তব্য করতে খুবই মজা পাই । দেশের
মেধাবী ছাত্রদের এক চতুর্থাংশ
রাজনীতিতে আসলে বাংলাদেশের
চেহারা পাল্টে যাবে তা সবাই মনে মনে স্বীকার
করে কিন্তু কেউই মাঠে নামতে রাজি না । এ দেশের
সবকিছুই নিয়ন্ত্রন হয় রাজনীতি দ্বারা । অথচ
সে নিয়ন্ত্রনের বেশিরভাগ ই আজ দুর্নীতিবাজদের
থাবা তলে । সেখানে তাদের কোন প্রতিযোগী নেই ।
থাকলেও তাদেরই মতাদর্শ এর সমর্থক । এ কারনেই
আম জনতার কোন মূল্যায়ন নেই । আমরা ভোট দিয়ে সরকার বানাই ঠিকই কিন্তু তা দ্বারা উপকার
পাই না । মধ্যবিত্তদের উপর সমাজের নিয়ন্ত্রন
নির্ভর করে । কিন্তু সে মধ্যবিত্ত দের
রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা কম । তারা মুখ বুজে শুনবে,
দেখবে কিন্তু করতে সাহস পাবে না ।
আসলে সাহস
তো যুবকদের বেশী । তাদেরই উচিত প্রতিবাদ করা ।
কিন্তু কই কেউ তো কিছুই করতে পারছে না ।
ক্ষুদিরাম, মস্টার দা সূর্যসেন এর দৃষ্টান্ত কেবল
বইতে লেখা মাত্র। তা থেকে জ্ঞান নিয়ে নিজের
জীবনে প্রতিফলিত করার কোন ইচ্ছা কিংবা আগ্রহ কোনোটাই নেই
আমাদের মধ্যে । এটা মানতে রাজি নই যে দেশের
যুবকেরা দেশকে ভালবাসে না । তাদের যথেষ্ট
ইচ্ছা আছে । কিন্তু তাদের ইচ্ছা বাস্তবায়নের কোনো প্রচেষ্টা নেই । কারন বাবা-মা থেকে শুরু
করে সঙ্গিনী পর্যন্ত কেও না কেও তাকে ঠেকাবেই ।
এগুলো ভালো না, করে কি লাভ ? তুমি সমাজ
পরিবর্তন করতে পারবে না, একা একা কি পারা যায় ?
“হাঁ হাঁ হাঁ” চলেছে দেশ পরিবর্তন করতে - এমন
কটূক্তি শোনার পর কারো ইচ্ছা হয় না কিছু করার ।
আমাদের দেশ কে নিয়ন্ত্রন কিংবা পরিবর্তন এর
প্রধান রাস্তা রাজনীতি । তাই আমাদের সকলের
উচিত সমাজে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা । ডাক্তার ,
ইঞ্জিনিয়ার , জজ , ব্যারিস্টার এর পাশাপাশি আমাদের
সমাজে মেধাবী নেতার ও প্রয়োজন রয়েছে । যারা পারবে দেশকে নতুন
আঙ্গিকে সাজাতে এবং সত্যিকার
অর্থে পরিবর্তনের ধারা বয়ে আনতে । পাশের দেশ
ভারত কে দেখলে বোঝা যায় , সচেতন যুব সমাজ
দ্বারা একটি দেশ পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম উন্নত
দেশ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করেই চলেছে ।
সে দেশেও দুর্নীতি আছে কিন্তু সেটা তারা নিয়ন্ত্রন
করতে পেরেছে বলেই তারা এতো দ্রুত প্রসারতা লাভ
করছে সমগ্র বিশ্বের সামনে । আমাদের দেশের যুব
সমাজকেও একত্রিত করে নতুন
নেতৃত্বে রাজনীতিকে পাল্টে দিতে হবে । 'নুর হোসেনের মত বুকে পিঠে গনতন্ত্র মুক্তি পাক' লিখে রাস্তায় নামতে হবে ।
শুধুমাত্র আমাদের আন্তরিকতা , সহযোগী মনোভাব ,
দেশপ্রেম , সুশিক্ষা , ন্যায়পরায়ণতা , সততা এর
সংমিশ্রনেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব । তাহলেই বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ
হতে পারব আমরা এবং আমাদের আজকের যুবসমাজ ।
এবং আমিও বলতে পারব “দেশ পরিবর্তনের সেই
মিছিলে আমিও ছিলাম ,
যেখানে তোমরা আজ সমাবেত হয়েছ ।”