প্রথমদিন পড়াতে গিয়ে স্বভাবতই জিজ্ঞাসা করলাম 'তোমার নামটা যেন কি?'
দু' আঙ্গুলে নাকটা টেনে, লাজুক হেসে মেয়েটি বলল, 'জ্বি, মিচ্চোনিয়া।'
ঠিক বুঝলাম না। ফের শুধালাম, 'কি নাম বললে?'
'মিচ চোনিয়া চার, চো-নি-য়া। চাবরিনা চিদ্দিকা চোনিয়া।'
'ও, আচ্ছা, আচ্ছা, সোনিয়া, তা সোনিয়া তোমাদের দেশের বাড়ী কোথায়?'
উত্তরটা শুনে ঘটনাটা পরিস্কার হল। পড়াতে শুরু করলাম সোনিয়াকে।
আমি যখন খাতা টাতা দেখতাম, সে টুকটাক গল্প শুরু করে দিত।
যেমন একদিন মনোযোগ দিয়ে বাড়ীর কাজ দেখাচ্ছি সে গল্প শুরু করল-
'চার, আপনি ভেন্ডের গান লাইক করেন?'
'ভেন্ডের গান আবার কি? বলো ব্যান্ডের। হ্যাঁ, করি তো।'
'চার কোন ভেন্ড আপনার পেবারিট?'
'নির্দিষ্ট কেউ না। সব ব্যান্ডেরই কিছু কিছু গান ভাল লাগে।'
'চার, আমার পেবারিট চার, চোলচ। চোলচের পরেস্ট হিলে গানটা চুপার লাগে চার, প্যানটাচটিক লাগে।'
আরেকদিনের কথা। খাতা দেখছি। কিছুটা উসখুস করে ছাত্রী বলল-
'চার, আপনার কোন অ্যাপেয়ার আচে, চার?'
ওর দিকে শীতল চোখে একমুহূর্ত তাকিয়ে থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম খাতায়।
সে নাছোড়বান্দা। বলল, 'বলেন না, চার, আচে?'
'হ্যাঁ, আছে।' ধমকের সুরে আমি বললাম।
'হি..হি..হি.. তা বাবীর নাম কি চার?'
রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে কাটা-কাটাভাবে বললাম, 'মাধুরী দীক্ষিত।'
'হি..হি..হি..। আপনি চার একদম চিরিয়াচ না। শুধু পান করেন।'
'ও চার, বালা কতা, আপনাকে তো একটা কবর দিতে হবে।'
'কি বললে, আমাকে কবর দিতে হবে! মানে?' আমি রেগে বললাম।
'জ্বি চার, জরুরী কবর। আগামী বিশ তারিকে আমার ভোনের বিয়ে।'
'ভোনের নয়, বোনের।'
'জ্বি, চার। চার, কাওয়া দাওয়া কিন্তু কোন কমিন্টি চেন্টারে হবে না, চাদে হবে।'
'কি, চাঁদে হবে!'
'জ্বি চার, আমাদের চাদে। চার, আপনাকে খাট দেবো।'
'আমাকে খাট দেবে, মানে?'
'মানে চার, বিয়ের খাট।'
'হোয়াট! বিয়ের খাট! আমাকে!'
'জ্বি চার, দাওয়াত খাট।'
'ও আচ্ছা, কার্ড। ইনভাইটেশন কার্ডের কথা বলছ তুমি?'
'জ্বি চার। চার জানেন, আমার দুলাভাই না দেখতে টিক ভোম্বের হিরুদের মতন।'
'ভোম্বে নয়, কথাটা বোম্বে। আর হিরু নয়- হিরো। তা, উনি দেখতে কোন হিরোর মতন।'
'হি..হি..হি.. দেকতে? উনি দেকতে টিক ভোম্বের চালমান কান চার।'........
বি.দ্র. অন্য কেউ আগে পোস্ট করে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৪:১৬