ইনু, ১৯৭৪ সনের ১৭ই মার্চের কথা কি আপনার মনে পড়ে?
১ই মার্চ, ১৯৭৪ সন।
রবিবার, সরকারী ছুটির দিন।
এই দিন এদেশে বিরোধী মতের রাজনীতি দমনে সৃষ্টি হয় এক ন্যক্কারজনক অধ্যায়।
তত্কালীন মুজিব সরকারের আমলে টেন্ডার ও পারমিটবাজি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার ইত্যাদির প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
তারা পল্টনে এক জনসমাবেশের আয়োজন করে।
এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে হাজার হাজার মানুষের একটি মিছিল স্মারকলিপি দেয়ার জন্য তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন মিন্টু রোডের দিকে রওনা দেয়। এ মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা মেজর জলিল, আসম আবদুর রব, নূর-ই-আলম জিকু, কাজী আরিফ আহমেদ, মির্জা সুলতান রাজা, আফম মাহবুবুল হক, হাসানুল হক ইনু, শরিফ নুরুল আম্বিয়া প্রমুখ।
মিছিল পল্টন থেকে রওনা হয়ে মিন্টু রোডে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ীর সামনে পৌঁছে।
এরপর শুরু হয় বিনা উস্কানিতে বৃষ্টির মত পুলিশের গুলিবর্ষন। প্রায় আধা ঘণ্টা একটানা চলে এ গুলি।
পুলিশের গুলিতে ছাত্রলীগ নেতা (জাসদ) জাফর, জাহাঙ্গীরসহ প্রায় পঞ্চাশজন নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকশ’ জাসদ নেতাকর্মী। নিহতদের বেশিরভাগের লাশ পুলিশ গুম করে বলে জাসদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এদিনের মিছিল থেকে শত শত জাসদ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। জাসদ নেতা মেজর জলিল এবং আসম আবদুর রবকে গ্রেফতার করা হয় গুলিবিদ্ধ অবস্থায়। এখানেই শেষ নয়, এ ঘটনার জের ধরে এদিন আওয়ামী লীগের গুণ্ডাবাহিনী জাসদের তত্কালীন মুখপত্র দৈনিক গণকণ্ঠের অফিসে ব্যাপক ভাংচুর চালায় এবং জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।
দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয় এক কালো অধ্যায়।
আজ ইনু থলথলে শরীরে হাসিনার আঁচলের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন।
তার কি মনে পড়ে সাথীদের এই আত্মদানের কথা?
তার কি মনে পড়ে মুজিব আমলে ৩৭ হাজার জাসদ কর্মীর মৃত্যুর কথা?