শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে নিজের অধীনে বিজলী ভোটের মাধ্যমে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতেই হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের জেতার সম্ভাবনা দূরে থাক অস্তিত্ব ধরেই টান পড়বে। বিডিআর বিদ্রোহের কারণে ক্ষুব্ধ সেনা বাহিনী দলটির বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেবে। আর কে বলতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারটি ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের মতো ৯০ দিনের বেশি মেয়াদী হবে না?
এখন মুশকিল হলো দলীয় সরকারের অধীনে বিজলী ভোটের নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দল অংশ গ্রহণ করবে না। আর এক তরফা নির্বাচন হলে নিশ্চিতভাবেই সুশীল-আর্মি-বিদেশী প্রভুদের অভ্যুত্থান ঘটবে।
খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় যেতে হলে সহানুভূতিশীল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশনারের অধীনে সনাতনী ভোটের মাধ্যমে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব করতে হবে। কিন্তু অস্তিত্বের জন্য ক্ষমতা ধরে রাখতে বাধ্য শেখ হাসিনা কোন ভাবেই খালেদা জিয়াকে এ সুযোগ দেবে না। ফলে খালেদাকে অবশ্য, অবশ্যই তীব্র আন্দোলনে নামতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাকে জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর সমর্থন নিতে হবে। আর সমর্থন নিলে তাদেরকে ক্ষমতার ভাগও দিতে হবে। তাদের ভাগ দিতে হবে এমন ক্ষমতা খালেদা জিয়া কোন ভাবেই নিকট ভবিষ্যতে আদায় করতে পারবে না। এর চেয়ে বেশি মুশকিল হলো যেই মাত্রার আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল ও বিজলী ভোট বাতিল করতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিনা বাধায় কোন আন্দোলনই মেনে নেবে না। রাজপথে থেকেই ওই আন্দোলন মোকাবেলা করবে। তাতে যা পরিস্থিতি তৈরি হবে তার অবশ্যাসম্ভী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায় সুশীল-আর্মি-বিদেশী প্রভুদের অভ্যুত্থান ঘটবে।
এখন প্রশ্ন ওঠতে পারে, সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে অভ্যুত্থান শঙ্কা রয়েছে তার ব্যাপারে কি দুই নেত্রী বেখবর? মহাত্মা পাঠকবৃন্দ, নিশ্চিত থাকতে পারেন তারা বেখবর নন। কিন্তু তাদের আর কি করার আছে? যেভাবে দুনিয়ার সবাই রাজনীতি করে ক্ষমতার জন্য সেভাবেই তারাও রাজনীতি করেন ক্ষমতার জন্য। ফলে যা কিছু ঝুকি ও শঙ্কার ব্যাপার তা নিয়ে তারা ভাবিত হলেও ভীত নন। তারা হারজিতের সম্ভাবনা নিয়ে খেলে যাবেন। আমাদের অপেক্ষা করে দেখতে হবে এই খেলার ফলাফল কোন দিকে গড়ায়।
আলোচনাকে গড়িয়ে নেয়ার জন্য আমরা শুধু বলে রাখব, ১০ বছর মেয়াদী এক জাতীয় সরকারের কথা শুনতে পারা যায়। যার অংশীদার অবশ্য দুই নেত্রী ছাড়া সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দই।