ছেলে আমার মস্ত মানুষ,
মস্ত অফিসার, মস্ত ফ্ল্যাটে যায়
না দেখা এপার ওপার।।
নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী,
সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি।
ছেলের আমার
আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম
আমার ঠিকানা তাই
বৃদ্ধাশ্রম।
আমার ব্যবহারের সেই
আলমারি আর আয়না
ওসব নাকি বেশ
পুরনো,ফ্ল্যাটে রাখা যায় না।।
ওর বাবার
ছবি,ঘড়ি- ছড়ি,বিদেয়
হলো তাড়াতাড়ি
ছেড়ে দিলো, কাকে খেলো,
পোষা বুড়ো ময়না।
স্বামী- স্ত্রী আর আ্যালসেশিয়ান-
জায়গা বড়ই কম
আমার ঠিকানা তাই
বৃদ্ধাশ্রম।
নিজের হাতে ভাত
খেতে পারতো নাকো খোকা
বলতাম
আমি না থাকলে রে কি করবি রে বোকা?
ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদতো খোকা আমার
কথা শুনে- খোকা বোধ হয়
আর কাঁদে না, নেই বুঝি আর মনে।
ছোট্টবেলায় স্বপ্ন দেখে উঠতো খোকা কেঁদে
দু’হাত দিয়ে বুকের কাছে রেখে দিতাম বেঁধে
দু’হাত আজো খোঁজে,ভুলে যায়
যে একদম- আমার ঠিকানা এখন
বৃদ্ধাশ্রম।
খোকারও হয়েছে ছেলে,দু’বছর
হলো তার তো মাত্র
বছর পঁচিশ,ঠাকুর মুখ তোলো।
একশো বছর বাঁচতে চাই এখন আমার সাধ
পঁচিশ বছর পরে খোকার
হবে ঊনষাট।
আশ্রমের এই ঘরটা ছোট,জায়গা অনেক বেশি-
খোকা- আমি,দু’জনেতে থাকবো পাশাপাশি।
সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি ভীষণ রকম
মুখোমুখি আমি,খোকা আর
বৃদ্ধাশ্রম।
মুখোমুখি আমি,খোকা আর
বৃদ্ধাশ্রম।।
শিল্পীঃ নচিকেতা চক্রবর্তী
গীতিকারঃ নচিকেতা চক্রবর্তী
সুরকারঃ নচিকেতা চক্রবর্তী
অ্যালবামঃ দলছুট
বছরঃ ১৯৯৯