অর্ডার অর্ডার অর্ডার!! বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করিয়া আসামীকে আমৃত্যু ফাঁসিতে ঝুলানোর হূকূম করিলাম...
দিন রাত এখানে থমকে গেছে
কনডেম সেলের পাঁথর দেয়ালে
প্রতি নিঃশ্বাসে মৃত্যুর দিন আমি গুনছি।।
শোন, জেল থেকে আমি বলছি
জীবনের এই ক্ষণে ইচ্ছেগুলো
ডানা মেলে হয়ে গেছে অন্ধ
অবুঝ মন টা শুধু চায় যে নিতে
তোমার চুলের মৃদু গন্ধ
তোমার মূখ খানি বূকে ধরে
জীবন-মৃত্যু মাঝে দুলছি
শোন, জেল থেকে আমি বলছি
কতদিন আকাশ দেখিনা আমি
দেখতে পাইনা চাঁদ তাঁরা আমি
বধ্যভূমির এই সেলটাই আমার
সৃতির সাকোর পারাপার
এই শেষ কটি দিন তোমাকে ভাবি
বাতাসকে চুপি চুপি বলছি
শোন, জেল থেকে আমি বলছি
শিল্পীঃ জেমস
অ্যালবামঃ জেল থেকে বলছি
সুরকারঃ লতিফুল ইসলাম শিবলি
গীতিকারঃ লতিফুল ইসলাম শিবলি
৯০ দশকের শুরুতে স্বৈরাচার এরশাদ সরকার এর পতনের পরপরেই জেলা শহর ‘নাটোর’ এর সেই প্রাণবন্ত ও প্রতিবাদী তরুন প্রিয় নাটোর ছেড়ে ও পরিবার পরিজন ছেড়ে ঢাকা শহরে আসে লিখাপড়া করার জন্য। প্রিয় নাটোর শহর ছেড়ে ঢাকায় আসার পর ছেলেটি সারাক্ষণ নাটোরের স্মৃতিগুলো ভাবতে থাকে। ভাবতে থাকে ফেলে আসা নাটোরের দিনগুলো । ছেলেটি ঢাকায় যে বাসায় ভাড়া থাকতো সেটা ছিল একটি বাসার ছাদের উপরের একটি ছোট্ট ঘর যেটিকে আমরা বলি ‘চিলেকোঠা’ । ঘরের ভেতরের একটা জানালা ছিল । সেই জানালার পাশে ছেলেটির বিছানা যেখান থেকে বালিশে মাথা রাখলেই পুরো আকাশটা দেখা যায় আর বাপাশে ছিল ছাদ এর পাকা আঙ্গিনার সাথে দুরের আকাশের একাকার হয়ে যাওয়ার অপরুপ দৃশ্য। একদিন দুপুরে ছেলেটি বিছানায় শুয়ে ডান পাশের জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশ দেখছিল। তখনই শিবলি'র মনে জেলে থাকার সেই দিনটির কথা মনে পড়লো , যেখানে আকাশ দেখা যেতো না। ধীরে ধীরে শিবলি ভাই ভাবতে লাগলেন অসুস্থ অবস্থায় শুয়ে থাকা কোন রোগীর কথা যে বহুদিন আকাশ দেখেনি। আবার কখনও মনে ভিড় করলো কনডেম সেলে থাকা কোন খুনের দায়ে ফাসির আসামী’র কথা যে বহুদিন আকাশ দেখেনি। শিবলি তখনই শোয়া থেকে উঠে বসলেন । হুট করে কাগজ কলম নিয়ে লিখতে থাকলেন...।
‘ দিন রাত এখানে থমকে গেছে
কনডেম সেলের পাথর দেয়ালে
প্রতি নিঃশ্বাসে মৃত্যুর দিন আমি গুনছি
শোন জেল থেকে আমি বলছি ............’’ এভাবে এক লাইন লিখেন আর গুনগুন করে নিজের মতো করে গাইতে থাকলেন । ৫ মিনিট পর লিখা যখন থামলো তখন আবার সেই লিখাটা টেবিলে উপর রেখে দু হাত দিয়ে টেবিল বাজিয়ে নিজের মতো করে গাইতে গাইতে সুর ঠিক করে ফেলেন। মাত্র ৫ মিনিটেই একটি গান লিখা ও সুর করা হয়ে গেলো যা পরবর্তীতে হয়ে যায় বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের ইতিহাসের একটা অংশ।
অংশ টুকু কবি ও কাব্য ভাইয়ে্ব ব্লগ থেকে নেওয়া হয়েছে। চমৎকার এই লেখাটির বিস্তারিত পাবেন শিবলি, জেমস ও ফিলিংস এর ‘জেল থেকে বলছি’ গানের পেছনের অজানা গল্প ঃ