আবার হু হু করে দমকা হাওয়া ছুটে আসুক।কালো মেঘে ছেঁয়ে যাক আকাশ।রাস্তার ধুলো ঘরে ঢুকে ছড়িয়ে পড়ুক চারিদিকে। হাওয়ার দাপটে ছাদে শুকোতে দেয়া কাপড়গুলো পাখির মতো ডানা মেলে দিক।গলির মোড়ে পড়ে থাকা পুরনো খবরের কাগজ আর চিপসের প্যাকেট প্রজাপতির মত উড়তে থাক।সকলের পিলে চমকে দিয়ে গর্জন করে উঠুক বজ্রমেঘ।দিকবিদিক ভাসিয়ে নেমে আসুক অমৃতধারা।আবার বৈশাখ আসুক!আবার কালবৈশাখী হোক।আবার অগ্নি স্নানে এই ধরনী শুচি হোক।
আবার বৈশাখী মেলা হোক।আবার হোক মঙ্গল শোভাযাত্রা।আবার তরুনীরা সাজুক লালপাড় শাড়িতে।তাদের কপালের লালটিপে নতুন সূর্যদয়ের সংকেত লেখা হোক।প্রেমিকার খোপায় শুভ্র বেলিফুলের মালা জড়িয়ে দিতে পকেটের শেষ টাকাটিও খরচ করে ফেলুক প্রেমিক তরুন।ঝুরি ভাজা,জিলাপি আর নানা রকম চিনির মিঠাইয়ের পসরা বসুক।কৌতুহলী চোখে বাবা-মায়ের কোলে চড়ে মেলা দেখতে বের হোক ছোট্ট শিশু।মেলা দেখতে আসা কিশোরী নাগরদোলায় না চড়ে মায়ের দেয়া টাকা থেকে বাঁচিয়ে বাড়িতে থাকা ছোট ভায়ের জন্য কিনুক লাল ঠোঁটের মাটির টিয়াপাখি। ষাটোর্ধ বৃদ্ধ গায়ে লাল পাঞ্জাবি চড়িয়ে বৃদ্ধা সঙ্গিনীকে নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়ুক মেলা প্রাঙ্গণে। রিক্সাওয়ালা মামা সারাদিনের ক্লান্তি শেষে ঘরে ফেরার আগে স্ত্রীর জন্য কিনে নিক কিছু কাঁচের চুড়ি।
আবার বৈশাখ আসুক, আসুক চৈত্র সংক্রান্তি, আসুক পহেলা ফাল্গুন, আসুক স্বাধীনতা দিবস,আসুক ষোলই ডিসেম্বর, আসুক ঈদের মৌসুম, আসুক দুর্গাপূজার উৎসব। ঘন নীল আকাশের নিচে আবার মানুষ প্রাণের মেলায় মেতে উঠুক।
আর তো পারা যায় না হে খোদা।উৎসবের এই দেশে মহামারী এই বিষাক্ত ছোবল আর তো সহ্য হয়না।ভয়,কষ্ট,আতঙ্ক আর মৃত্যুর কালো ছাঁয়া তুমি সরিয়ে নাও।আবার সবকিছু স্বাভাবিক হোক।আবার সবার মুখে হাসি ফুটুক। আবার ইচ্ছা হলেই যেন রিক্সায় চড়ে সারা শহর ঘুরতে ঘুরতে বুক ভরে শ্বাস নিতে পারি।জীবন টা এত ছোট, এ জীবনে কি খাঁচার পশুর মতো বন্দী হয়ে থাকা মানায়?
হে দয়াময়! সব রোগ শোক অশুচিতা তুমি ঘুঁচিয়ে দাও।আবার কালবৈশাখী আসুক দমকা হাওয়ার সাথে সব মহামারীর দুঃখ উড়িয়ে নিক।আবার বৈশাখ আসুক!
ছবিঃইন্টারনেট