জয়ীতা তার পড়ার টেবিলে বসে একমনে রসায়ন পড়ছে।একমাস পরেই তার ক্লাস নাইনের ফাইনাল পরীক্ষা তাই পড়ালেখাতে মনোযোগ না দিয়ে কি তার উপায় আছে?জয়ীতার ছোটবোন ঈশিতা মেঝেতে একগাদা খেলনা ছড়িয়ে রান্নাবাটি খেলছে।রান্নাঘরে তাদের মা মনেহয় মাংশ রান্না করছে সেই রান্নার সুঘ্রান বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।এমনসময় হঠাত করে ইলেক্ট্রিসিটি চলে গিয়ে চারিদিক অন্ধকার হয়ে যেতেই জানালা দিয়ে চাঁদের আলো বিছানার উপর এসে পড়ল।শরতের পরিষ্কার আকাশে এত্তবড় একটা চাঁদ উঠেছে।সেদিন পুর্নিমা নয় কিন্ত সেই চাঁদের কি আশ্চর্য রকম উজ্জ্বল আলো!জয়ীতা উঠে ঘরের সবগুলো জানালা খুলে দিয়ে বিছানায় বসে।হয়ত অন্ধকারে ভয় পেয়েই ছয়বছরের ঈশিতা খেলা ফেলে বিছানায় উঠে জয়ীতার গা ঘেসে শুয়ে পড়ে।জয়ীতাও বিছানায় শুয়ে পড়ে।এখন তার অনেক পড়ালেখার চাপ কিন্ত তার একদমই উঠে আলো জ্বালাতে ইচ্ছা করছে না।শরতের কুসুম কুসুম আবহাওয়া তার খুব ভাল লাগে।বাড়ির পেছনে লাগানো কৃষ্ণচূড়া গাছের ডাল বাতাসে নড়ছে এবং মাঝে মাঝে এসে টিনের চালে শব্দ করছে।জয়ীতা হঠাত তার ছোটবোনের পেটে আঙ্গুল দিয়ে সুড়সুড়ি দেয়া শুরু করে।ঈশিতার খিলখিল হাসির শব্দে ঘর যখন ভরে উঠেছে তখনই তাদের দাদি তাদের ঘরে প্রবেশ করে।জয়ীতাদের উঠানের অপর প্রান্তেই তাদের দাদা-দাদির ঘর।ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলেই তার দাদি গুটি গুটি পায়ে তাদের ঘরে আসে।কোনোদিন সে তাদের মায়ের সাথে গল্প করে আবার কখনও তাদেরকে ফেলে আসা অতীতের রংবেরং এর গল্প শোনায়।দাদির সাড়া পেয়ে মাও এঘরে এসে বসে।আজ কিভাবে কিভাবে যেন একাত্তরের কথা উঠে যায়।জয়ীতা অবাক হয়ে শোনে তাদের না দেখা অতীতের কথা।
একাত্তরের মে মাস।কটকটে রৌদ্রে পুড়ছে সারাটা গ্রাম।অন্য সময় গ্রামের লোকজন অলস প্রহর কাটায়,তালপাখার বাতাস খায় আর গল্পগুজব করে।কিন্ত এবছর যেন চারিদিকে কেমন একটা হাহাকার।পরিচিত মুখগুলো থমথমে,তাদের দৃষ্টি দিশেহারা।মার্চ মাসে সারা দেশে যখন মিলিটারি নামল তখন কুষ্টিয়ার শহর এবং গ্রামগুলোতেও মিলিটারির উপস্থিতি দেখা দিল।কিন্ত এলাকার পুলিশ,সাহসী জনগন আর ই,পি,আর বাহিনী দূর্গম প্রতিরোধ গড়ে তোলে যার ফলে এলাকা আবার স্বাধীন হয়ে যায়।এই স্বাধীনতা বজায় ছিল প্রায় এক মাস।আবার যখন অন্যান্য অঞ্চল দিয়ে মিলিটারি শহরে প্রবেশ করা শুরু করে তখন জলিল সাহেব তার বিশাল পরিবার নিয়ে বিপদে পড়ে যান।সাত গ্রামের মানুষ তাকে এক নামে চেনে তিনি এলাকায় এমনি পরিচিত ব্যাক্তি।বাড়িতে তার তিন তিনটা জোয়ান ছেলে।বড় মেয়েটাও এখন আছে তাদের পরিবারের সাথে।না থেকে আর উপায় কি? যুদ্ধ শুরু হতেই জামাই মেয়েকে বাপের বাড়ি রেখে যুদ্ধে যোগ দিয়েছে।এলাকায় প্রকাশ্যে রাজাকার বাহিনী গঠিত না হলেও গোপনে অনেকেই এই লাইনে গেছে।কানাকানি শোনা যাচ্ছে যে সব লোকের নাম তাদের খাতায় রয়েছে জলিল সাহেবের নাম আছে সবার প্রথমে।এখন শুধু গ্রামে মিলিটারি আসার অপেক্ষা তাহলেই নাম ধরে ধরে একএক জনকে মেরে ফেলা হবে।পরিবারের সবার মনেই আতংক।তিনি তার নিজের বাড়িতে রাতে ঘুমাননা অনেক দিন হলো।গ্রামের শেষ প্রান্তে যে সকল গরিব লোকেরা তার বাড়িতে রাখালের বা চাকরের কাজ করে,পালা করে তিনি তাদের বাড়িতে রাতে ঘুমান।ঘুম শুধু নামেই,গ্রামের কেউ আর আগের মত শান্তি করে ঘুমাতে পারেনা,সর্বক্ষন মনে হয় এই বুঝি মিলিটারি গ্রাম ঘেরাও করল।আরো বড় সমস্যা হচ্ছে মেয়েটা গর্ভবতী।জলিল সাহেবের নিজের চার নম্বর ছেলেটির বয়স ছয়মাস।এতগুলো মানুষ নিয়ে কোথাও যাওয়াও যায় না সহজে।বড় ছেলেটির তরুন রক্ত।একদিন চলেই গিয়েছিল সে মুক্তি বাহিনীতে যোগ দিতে।এলাকার এক বড় ভাই তাকে ধরে বেঁধে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে গেছে।তাকে অনেক বুঝিয়ে শান্ত করা হয়েছে।তিনি নিজে বাড়ি থাকতে পারেন না এই ছেলেটি না থাকলে অন্যদের দেখবে কে?
একদিন সকালে শোনা গেল দুরের গ্রাম দিয়ে মিলিটারি প্রবেশ করেছে।তারা সমানে মানুষ মারছে আর বাড়ি পুড়াচ্ছে।জলিল সাহেব কোনো কাজ়ে দূরে কোথাও গিয়েছিলেন।বাড়িতে খবর আসা মাত্রই জলিল সাহেবের স্ত্রী দ্রুত কিছু জিনিস বেঁধে নিয়ে এলাকা ছাড়তে প্রস্তুত হলেন।তার বাড়ি ভর্তি হাঁস মুরগী বড় ছেলে মনিরকে তিনি নির্দেশ দিলেন ঘরে জমানো ডিমগুলো পাড়ায় কেউ কেনে কিনা দেখে আসতে।এখন যেটা সবচেয়ে কাজে লাগবে তা হলো টাকা।তাছাড়া এত জিনিস একসাথে বহন করাও যাবে না।মেজ ছেলে জহির সবগুলো খোপ খুলে হাঁস মুরগীগুলোকে ছেড়ে দিল।তার অনেকগুলো পোষা পায়রা আছে।সে খুব দ্রুত তার বাবার ঘরের পাকা ছাদে কয়েক বস্তা ধান তুলে ছড়িয়ে দেয়।পায়রাগুলো ইচ্ছামত খেতে পারবে আবার যদি ফিরে আসা হয় তো কিছু ধান বেঁচে গেলে নিজেদের খাওয়া হবে।তবে মিলিটারি যদি বাড়িতে আগুন দেয় আর কিছুই করার থাকবে না।সবকিছু গুছিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই পুরো পরিবার রওনা হল অন্য গ্রামের দিকে।কোনো বাহন নেই পা হচ্ছে একমাত্র সম্বল।বড় ছেলের মাথায় কাপড়ে বাঁধা কিছু চাল।মেজ ছেলের হাতে কাপড়ের পোটলা,সেজ ছেলের হাতে আরো কিছু টুকিটাকি।মেয়েটির হাঁটতে খুবই কষ্ট হচ্ছে তবুও সে একটু অভিযোগ করছেনা।গ্রামের পর গ্রাম হেঁটে তারা তাদের গন্তব্যের দিকে যেতে থাকে।সবখানেই একই অবস্থা।এইগ্রামের মানুষ একটু আশ্রয়ের আশায় ঐ গ্রামের দিকে ছুটে যায়।কিন্ত কোনো জায়গাই বেশিক্ষন নিরাপদ থাকেনা।তখন আবার তাড়া খাওয়া পশুর মত ছুটে যেতে হয় অন্য কোথাও।খা খা রোদ মাথায় নিয়ে একটা বড় মাঠ পাড় হয়ে তারা যখন সবে বড় খালের পাড়ে উঠে এসেছে তখনি শুরু হয় গুলি।লাইনে সবার সামনে ছিল জহির।অল্পের জন্য সে গুলিবিদ্ধ হয়না তবে সে তখনি মাটিতে বসে পড়ে।তাকে পাশ কেটে আরো কিছু গুলি চলে যায় এদিক সেদিক।একটা গুলি এসে বিদ্ধ হয় মনিরের চালের পুটলিতে আর ঝরঝর করে চাল ঝরে পড়তে থাকে।তাদের পেছনে সকলে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আতঙ্কে।এদিকে যে ব্রিজটি ছিল তা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল গতবার মিলিটারিদের ঠেকাতে।এবার তারা নিজেরাই অতি দ্রুততার সাথে ব্রিজ তৈরী করে খাল পাড় হয়ে এগিয়ে আসছিল এলোপাথারি গুলি করতে করতে ।জলিল সাহেবের পুরো পরিবার পড়ে যায় তাদের গুলির মুখে।গতবারের ব্যার্থতার পরে তারা এখন অনেক সতর্ক।মানুষ দেখেই দূর থেকে গুলি করা শুরু করেছে।পরিবারের সবাই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মৃত্যুবানের অপেক্ষায়।শুধু কোলের বাচ্চাটা চিতকার করে কাঁদতে থাকে।কিন্ত না তারা আর গুলি করে না।হয়ত এমন তারা খাওয়া একটা পরিবারকে বিপদজনক বলে গন্য করে না অথবা তখন তাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার তাড়াই বেশি ছিল তাই অযথা হত্যাকান্ড ঘটানোর প্রতি আগ্রহ ছিল না।মাটিতে শুয়ে কাঁপতে থাকা ১৪ বছরের জহিরকে তুলে তারা মৃত্যুদুতের অন্যদল এসে পড়ার আগেই তারা সে স্থান ত্যাগ করে।
একাত্তর সালের জুন মাস।রহমান সাহেব তার পরিবার নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।ঈশ্বরদীর একগ্রামের সৈয়দবাড়িতে এখন তার আস্তানা।ধনে,মানে ঐশ্বর্যে সমস্ত গ্রামে এই বাড়িই সেরা।প্রাচীর ঘেরা বাড়িটিতে অনেকগুলো ঘর।ছেলেমেয়ে নাতিপুতি মিলে বাসিন্দাও কম নয়।রহমান সাহেবকে পালিয়েই থাকতে হয় বেশির ভাগ সময়।তার লম্বা চওড়া চেহারা নিয়ে যদি মিলিটারির সামনে পড়েন তাহলে আর উপায় থাকবে না।এর মাঝেই উনি সুযোগ পেলে অফিস করেন।সে সময় নতুন গঠিত বাংলাদেশ সরকারের কাঠামো অক্ষুন্ন রাখার জন্য অফিস করাও জরুরি ছিল।কিন্ত তাকে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় তার লম্বা চওড়া চোখে পড়ার মত গঠনের জন্য।বাড়ির উঁচু প্রাচীরের বাইরে অনেক জায়গা নিয়ে ফলের বাগান।এর মাঝে কিছু জায়গা বেশ জঙ্গল মত।এখানেই একটা বড় সফেদা গাছের নিচে মাটি খুঁড়ে গোপনে বাংকার বানানো হয়েছে বিপদের সময় আশ্রয় নেওয়ার জন্য।যখনই শোনা যায় গ্রামে মিলিটারি এসেছে তখনি সবাই মিলে আশ্রয় নেয় মাটির নিচে।সে এক ভয়ানক সময়।হোক গুজব বা হোক সত্যি প্রানভয়ে ইঁদুরের মত গর্তে লুকাতে হয়।রহমান সাহেবের শাশুড়ি সৈয়দ গৃহিনীর বয়স বাহাত্তরের বেশি।তিনি আর দুইজন তিনজন বৃদ্ধ কাজের লোক তখন বাড়ি পাহারায় থাকেন।এবাড়ির যত সোনাদানা আর মুল্যবান জিনিস আছে তা রয়েছে বাংকারে লুকানো।তবুও সমস্ত বাড়িতে মুল্যবান জিনিসের অভাব নেই।দুই তিন বার গুজব শুনেই তাদের দীর্ঘসময় বাংকারে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে।তবুও এবার খবর আসা মাত্র সবাই ছুটে গেল বাংকারে।রহমান সাহেবের চার ছেলে মেয়ে।ছোটটির বয়স মাত্র এক বছর।এই মেয়েটির ভয়ানক জিদ।সারাদিন চিতকার করে কাঁদে।একবার কান্না শুরু করলে সহজে থামেনা।বাংকারে তাকে চুপ রাখাই হয়ে যায় ভীষন মুষ্কিল।একেতো মাটির নিচে,তার উপর অল্প জায়গাতে ৫০ এর বেশি মানুষ।বেঁচে থাকার আশায় সে যেন এক নরক বাস।সেদিন সবাই যখন আশ্রয়ে ছুটে গেল তখন রহমান সাহেবের সাত বছর বয়েসি মেজ মেয়ে তার নানুর আঁচল ধরে বাইরে থাকার বায়না করল।ততক্ষনে ফাইফরমাশ খাটা ছোকড়াটাও বাগান থেকে ফিরে এসেছে।তার দায়ীত্ব বাঙ্কারের মুখ বন্ধ করে ঝোপঝাড় আর পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়া যাতে বোঝা না যায় এখানে কিছু আছে।সৈয়দ গৃহিনী বাড়ির ছাদে উঠে বাইরের দিকে নজর রাখতে শুরু করেন।রহমান সাহেবের মেয়ে পারুল দোতালার ঘরে অন্যসব বৃদ্ধ কাজের লোকের সাথে বসে থাকে।সেদিন আর গুজব নয় সত্যি সত্যিই একদল মিলিটারি আর রাজাকার এসে সদর দরজা ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকে পড়ে।এঘর ওঘর খুঁজে বাড়ির সব বাসিন্দাদের উঠানে একত্রিত করে।রাজাকার কজন তখন বাড়ির সম্পদ লুটপাটে ভীষন ব্যাস্ত।পাকবাহিনীর একজন তাদের দিকে তাকিয়ে বিজাতিয় ভাষায় কিসব প্রশ্ন করে।তারা কেউ কিছু বুঝতেও পারেনা উত্তরও দিতে পারেনা।সেই পাকসেনা তখন সবাইকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাইফেল তাক করে।প্রথমেই তাক করে পারুলের উপর।ঠিক তখনি পারুলের নানু তিন তলা থেকে দৌড়ে এসে উর্দুতে কথা বলতে থাকেন।অন্য দেশে বিশুদ্ধ উর্দু শুনেই হয়ত তারা তাক করা রাইফেল নামিয়ে নেয়।সৈয়দ গৃহিনী অনর্গল উর্দুতে কথা বলে তাদের বোঝাতে সক্ষম হয় যে এই বাড়িতে এখন এই দুজন বাচ্চা আর চারজন বৃদ্ধ বৃদ্ধা ছাড়া কেউ থাকেনা।রাজাকারের দল তখন চোরাকুঠুরীতে রাখা রুপা আর কাঁসার থালা বাসন খুঁজে পেয়েছে।পরবর্তি একঘন্টা ধরে চলে লুটপাট আর ধ্বংসলীলা।ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িতে অনেক পুরোনো আর দামী থালাবাসন আর আসবাব ছিল।যা নেয়া সম্ভব নিয়ে বাকিসব নষ্ট করে ফেলে সেই হায়েনার দল।অনেক আগের বড়বড় চিনামাটির বাসন,গামলা যাতে ৩০ জনের খাবার একসাথে পরিবেশন করা হত সেসব তারা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে রেখে যায়।ভারী গালিচাটা বৈঠকঘর থেকে টেনে নিয়ে এসে উঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়।এরা বিদায় নিলে পারুলের নানু পারুলকে বুকে চেপে ধরে।আর একটু হলেই কি ভয়ানক সর্বনাশ হতে যাচ্ছিল।তার কয়েক ডজন নাতি নাতনি থাকলেও পারুল তার খুবই স্নেহের একজন।কি মুখ দেখাতেন তিনি মেয়ে জামাই এর কাছে?আল্লাহ কে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি মনে মনে ভাবেন,এই পাকিস্থানিরা কি জাতের পশু যে এতটুকু দুধের বাচ্চার দিকেও রাইফেল তোলে?
মন্ত্রমুগ্ধের মত জয়ীতা তার মা পারুলের দিকে তাকিয়ে থাকে আর শোনে সেই দুঃসহ দিনের কথা।দাদিও নিজের কথা শেষ করে মায়ের কথা শুনছে।বাইরে মোটরবাইকের শব্দ শোনা যায়।উঠানে বাইক রেখে জয়ীতার বাবা জহির একছড়ি কলা আর একডজন ডিম নিয়ে ঘরে ঢোকে।
কি আশ্চর্য!কি অদ্ভুত!একাত্তরে এই দুইজনের দিকেই মৃত্যু তার শীতল হাত বাড়িয়েছিল কিন্ত প্রায় ছুঁয়ে দিয়েও সে তার হাত ফিরিয়ে নিয়েছে কি এইজন্য যে পরিনত বয়েসে তারা একে অন্যের সাথে ঘর বাঁধবে?সেই ঘরের চালে কৃষ্ণচূড়া ঝরবে,জানালা দিয়ে চাঁদের আলো ঢুকবে,বসন্তের হাওয়া নিয়ে আসবে ফুলের গন্ধ।তাদের সুখের সংসারে দুটি মেয়ে হবে।আর তাদের একটি মেয়ে তরুনী বয়েসে কোন এক বিজয় দিবসে লিখবে সেই ফেলে আসা এক টুকরো একাত্তরের গল্প।