আপনারা সবাই সার্কাস দেখেছেন, অনেক উচ্চতায় রশির উপর দিয়ে হেঁটে যাবার সময়, সার্কাস শিল্পি এমন ভান করে যে, সে পড়ে যাচ্ছ: রশি দুলতে থাকে, সে প্রানপণ চেষ্টা করে কোনমতে অন্য প্রান্তে গিয়ে পৌঁছে। যদি রশি না'দুলতো এবং আর্টিষ্ট পড়ার উপক্রম না'হতো, খেলাটা এত আকর্ষনীয় হতো না; আর্টিষ্টই রশি দোলায়।
মুহিত ব্যুরোক্রেট ও সার্কাসের ভালো যাদুকর ছিলেন; ২০১২ সালে বিশ্ব ব্যাংক যখন ঋণ দিতে অপারগতা জানায়, তখন তিনি বাজেটের টাকা থেকে সেতু বানানো যাবে বলে জানতেন। কিন্তু তিনি শেখ হাসিনা ও উনার সরকারের নবরত্ন-সভার ভাঁড়দের যাদুকরী দেখানোর জন্য, ফান্ড আনতে মালয়েশিয়া গেলেন, দুবাই গেলেন; কোথায়ও ফান্ড পেলেন না। মুহিত সাহেব বললেন, ইহা চ্যালেন্জিং, ইহা চ্যালেন্জিং; আপা মনে করলেন, ইহা চ্যালেন্জিং, ইহা চ্যালেন্জিং; নবরত্ন সভার ভাঁড়েরা বললেন, ইহা চ্যালেন্জিং, ইহা চ্যালেন্জিং।
আমি তখন আওয়ামী/ছাত্রলীগের এক ব্লগে ব্লগিং করতাম; তারা আমাকে ভালোবাসতো, কারণ, আমি বিএনপি-জামাত ও বেগম জিয়াকে অপছন্দ করতাম; কিন্তু তারা আমাকে নিয়মিতভাবে সারাদিন গালি দিতো, কারণ, আমি শেখ হাসিনার তুঘলকি কান্ডের সমালোচনা করতাম। আমি সেই ব্লগে লিখলাম যে, সেতু হবে দেশের বাজেটের টাকায়! সবাই মিলে গালাগালি শুরু করলো, বেকুব 'টাকা' দিয়ে কি সেতু করা যাবে? তখন সেতুর মুল্য নির্ধারিত হয়েছিলো, ২.৯ বিলিয়ন ডলার, সাথে ছিলো ডলারের রিসার্ভ।
আমি ভেবেছিলাম, সেতু তৈরি করতে ৫/৬ বছর লাগবে, বাজেট হবে, গড়ে ৪৫ বিলিয়ন ডলার; রিজার্ভ ছিলো ২৫ বিলিয়নের উপর; বাজেট থেকে প্রতি বছর ৫০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করলে, দেশবাসীর সামান্য বাঁশ যাবে, কেহ উহা টের পাবে না; কিন্তু সেতু হয়ে যাবে। ১ম বছর মালামাল কিনতে হবে, ১ বিলিয়ন খরচ হবে, পরের বছরগুলোতে ৪০০ মিলিয়ন ডলার করে খরচ হলে, আনু মোহাম্মদ,ড: আলী আকবর বা কেহই কিছু বুঝবে না; সেতু হয়ে যাবে।
এখন সেতুর উদ্ভোধন হওয়ার পর, সামুর কিছু বড় বড় ব্লগারও সার্কাসের আর্টিষ্টের রশিহাঁটা দেখছেন ও উহ: আহ: করছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২২ রাত ১২:৫১