ওয়াজেদ সাহেবের মেজাজ আজ খুব ফুরফুরে ।মনের ভিতর উৎফুল্ল ভাব, আজ পরীর সাথে দেখা হবে । আজ পরীর সাথে সারারাত এক অপার্থিব আনন্দে মেতে উঠতে পারবে । ৫০ বছর বয়সে ২০ বছরের একটা তরুনীকে একান্তে পাওয়ার মজাই আলাদা। পরীকে পাওয়ার জন্য বেশ কায়দা করতে হয়েছে , একটু টাকা পয়সাও খরচ হয়েছে তাতে কি প্রেম ও যুদ্ধে অবৈধ বা নিষিদ্ধ বলে কিছু নেই । ভালোবাসা ভালোবাসাই এতে কোন বয়সের সীমারেখা নেই, ন্যায় অন্যায় নেই , পরীর ঘর ভেঙ্গেও কোন অনুশচনা নেই ঐ অকালকুস্মান্ড স্বামী ওকে কি দিতে পারতো রাতের আঁধারে দু মিনিটের যৌনসুখ ছাড়া । আজ ওয়াজেদ সাহেবের বদৌলতে সে দেশ সেরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারছে আয়েশি জীবনযাপন করতে পারছে এটা কি ঐ অর্থলোভী অশিক্ষিত গেঁয়ো ভূতটা দিতে পারতো । ওয়াজেদ সাহেবর স্ত্রী এখনো বর্তমান, তাদের সংসারে কলেজ পড়ুয়া পুস্পা নামের একটি মেয়ে আছে, কিন্তু তাতে কিছু আসে যায়না,
ওয়াজেদ সাহেবের মতে পুরুষদের কোন বয়স নেই তারা এভারগ্রীন লাভার মাঝে মাঝে নিজেকে প্লে বয় ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা হেফনরের শিষ্য মনে হয়। ওহ ওই বুড়োটা ৮৬ বছর বয়সেও ২৬ বছরের বয়সের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে দিব্যি ফুর্তি করছে । পরীর নাম্বারে দুবার ফোন দিয়েছে দুবারই ওয়েটিং পেয়েছে এই ওয়েটিং দেখলে মেজাজ খিঁচড়ে যায় ওয়াজেদ সাহেবের ।মনে হয় মাগীটা আমার টাকায় অন্যর সাথে ফুর্তি করছে । কিন্তু পরী কাছে আসলে মেজাজটা পরে যায়, কিছু বলতে পারেনা পরীকে, দেখলেই দেহটা চনমন করে উঠে , অনেক নারীর দেহ সংগ পেলেও পরীকে সবার থেকে ডিফারেন্ট মনে হয় তাঁর । ঢাকার অভিজাত হোটেলে এসব ভাবতে ভাবতে সময় কেটে যায় ওয়াজেদ সাহেবের । কালই ফিরে যেতে হবে আজকে রাতটাই সময়, অনেকদিন পর পরীকে আপন করে নিতে পারবে সে । গ্রামের কলেজের প্রিন্সিপাল বলেই মাঝে মাঝে অফিসের কাজে ঢাকায় আসতে হয় আর তখন একটা রাত পরীকে আদর করার জন্য সে রেখে দেয় । কিছুক্ষন আগে পরীর সাথে কথা হলো তার ক্লাস শেষ হবে বিকেলে, তারপর তার ভার্সিটির সামনে থেকে ওয়াজেদ সাহেব তাকে নিয়ে বসুন্ধারা সিটিতে কেনাকাটা সেড়ে হোটেলে ফিরবে । এখন কেবল দুপুর ১২টা বিকেল হতে ঢেড় বাঁকী ,পরীর সম্পর্কে মাঝে মধ্যই অনেক বাজে কথা তাঁর কানে আসে, সে নাকি ইদানিং বড় লোকের ছেলের সাথে ঘোরফিরা করে, তবে ওয়াজেদ সাহেব সেসব কথা পাত্তা দেয়নি ।ওয়াজেদ সাহেবের গ্রামে তাঁর খুব প্রভাব কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেনা, পরীকে তার কলেজ থেকেই এইচ এস সি পাশ করিয়েছে অথচ এই মেয়েটা এইচ এস সি পড়ার কথাই নয় এস এস সির পরই তার গরীব পিতা মাতা গ্রামের এক অশিক্ষিত ভূতের সাথে বিয়ে দিয়েছিল কিন্তু ত্রাতা হিসাবে এগিয়ে এসেছিল ওয়াজেদ সাহেব, নিজের কলেজে তাকে ভর্তি করে নেন । পড়াশুনা ও আর্থিক ব্যাপারে ব্যাপকভাবে সহায়তা করেন তিনি উচ্চবিলাসী পরীকে আরো উচ্চবিলাসী করে তোলেন এবং পরবর্তীতে পরীকে স্বামী তালাক করাতেও পিছুপা হননি তিনি ।
পরী প্রথম ঢাকায় এসেছিলো ওয়াজেদ সাহেবের সংগেই, ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য, আর সেবারই ওয়াজেদ সাহেবের ভালো মানুষের মুখোশটা খুলে পড়েছিলো । বাবার বয়সী এই লোকটাকে প্রচন্ড শ্রদ্ধা করতো পরী ভাবতো এরকম হৃদয়বান লোক আছে বলেই আজো পৃথিবীটা টিকে আছে কিন্তু সব মিথ্যে হয়ে গিয়েছিল ঐ হিংস্র লালসার কাছে ।পরী নিজেকে সপেঁ দিতে বাধ্য হয়েছিল।ফেরার কোন পথ খোলা নেই তার জন্য, তার উচ্চবিলাসী মন সেই সরল পথ অনেক আগেই রুদ্ধ করে দিয়েছে। আজ সে ওয়াজেদ সাহেবের রক্ষিতা ।
হোটেল রুমে শুয়ে পরীকে নিয়ে বিভিন্ন ভাবন ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়ে ওয়াজেদ সাহেব ঘুমের ভিতর সে নিজেকে দেখতে পায় নীল আলোয় ভরপুর একটি ঘরে ধবধবে সাদা বিছানায় সে বসে আছে, পরী পিছন থেকে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরেছে ওয়াজেদ সাহেবর দেহটা জেগে উঠেছে, পরীকে তিনি বলছেন তুই এত দেরী করে আসলি, আমি কতক্ষন থেকে তোর জন্য বসে আছি, এই দেখ আজ স্ট্রবেরীফ্লেবারের কনডম এনেছি, তোকে আজ পাগল করে দিব একথা শুনে পরী হেসে উঠে কিন্তু হাসিটা ক্রমেই অন্যরকম হয়ে উঠছে মনে হচ্ছে, এ হাসি তো পরীর নয় এ হাসি তাঁর নিজের মেয়ে পুস্পার । সে তাকিয়ে দেখে সত্যিই পরী নয় পুস্পা, সে চমকে উঠে এটা কেমন করে সম্ভব, হাসি আরো তীব্র হয়ে উঠছে , ওয়াজেদ সাহেব ছটফট করতে থাকে, লজ্জায় ঘৃনায় চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন আর বলতে থাকেন এটা কখনো সম্ভব নই, তার ঘুম ভেঙ্গে যায় , ঘুম ভেঙ্গে গেলেও তার দুচোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে যেতে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৯