বছর তিনেক আগে স্কুলের গেটে তোকে দেখে আমার মধ্যে যে বিভ্রমের সৃষ্টি হয়েছিল সেটা বোধয় কাটতে শুরু করেছে, অনেকটাই কেটে গেছে হয়ত। সেদিন আমি ঠিকমত ক্লাস করতে পারিনি। কোন এক মোহ আমার সর্বস্ব গ্রাস করেছিল। মাকড়শা হয়ে কত স্বপ্নের জাল বুনেছিলাম তোকে ঘিরে! রাতে যতবার ঘুম ভাঙত ততবারই তোকে নিয়ে ভাবতাম, তোর সাথে কথোপকথনের একটা কাল্পনিক নকশা আঁকতাম। ক্লাসরুমের সামনের বারান্দাটায় কত যে দাঁড়িয়ে থেকেছি তোকে এক-ঝলক দেখার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে! কখনো আলোর ঝলকানি হয়ে এসেছিলি তুই, কখনোবা আমাকে চলে যেতে হয়েছে না দেখার নির্মম বেদনা নিয়ে।
এরপর যেদিন আমার ভালবাসার পালে হাওয়া দিলি তুই সেদিন আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষটিকে দেখতে পেয়েছিলাম। কি এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যেই না ডুবে গিয়েছিলাম আমি! তোকে মনে হতো স্বপ্ন আর বাস্তবের মাঝামাঝি কিছু। একটিবারের জন্যও সেদিন ভাবিনি তুই রূপ নিবি ঘূর্ণিঝড়ে আর এই প্রেমতরী ডুবে যাবে মাঝনদীতে। কি আশ্চর্য! যাকে আশীর্বাদ ভেবে নিজেকে ভেবেছিলাম আশির্বাদপুষ্ট, সেই কিনা ভয়াবহ অভিশাপে নিমজ্জিত করেছে আমাকে!
বছর তিনেক আগে বাসস্ট্যান্ডের চার রাস্তার মোড়ে তোকে দেখে যে বিভ্রমের সৃষ্টি হয়েছিলো সেটা বোধয় কেটেই গেছে। কিংবা কিছুটা বাকি আছে এখনো। ভুল ঋতুতে ফোটা কোন ফুল যা কিনা অচিরেই ঝড়ে গেছে অথবা যুগের অন্ধকারতম কোন অভিশাপ হয়ে তোর যে উচ্ছিষ্টাংশ দানা বেঁধেছে আমার হৃদয়ে সেটাও কেটে যাবে অচিরেই।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২১