কেউ নেই।
কেউ কি ছিলো?
না।
কিছু নেই।ছিলোও না।
শূণ্য।
একটাও ফুল ছিঁড়িনি।কতগুলো ভুল করেছি।ভুলগুলো তো ফুল হলোনা...
হ্যাঁ ছেলেবেলায় আমার বেড়ে উঠার শৈশবে-আজকে আমি যে নামে ডাকা ডাকি হই তার অন্তরালে আমার অন্য ডাকনাম ছিল।
পশ্চাৎদেশ ভিজে গেছে নরম ঘাসের শিশিরে।শরীরের বহিরাবরণে-মাথার চুলে-চোখের পাতায় জমে আছে বিন্দু বিন্দু শিশির।ঈশ্বরহীন ছাড়া ভিটে বাড়ি আর পাশে আছে হৈমন্তিক স্নিগ্ধতা।আমাকে কেউ ছুঁয়ো না। শরীরে লেপ্টে আছে শিশির আর জ্যোৎস্না। ছুঁয়ো না। শিশির ঝরে যাবে।
আমি ঘর ছেড়ে পাহাড়ে-অরণ্যে গেছি। এবং সেখানে যেতে আমার ভাল লাগে। তাই ছোট সন্তানের নাম রেখেছি আরণ্যক জ্যোৎস্না।
পাঁজরের ভেতরে -ওখানে খুব নিরবে নিভৃতে কে যেনো কাঁদে। আমি তার দীর্ঘশ্বাস শুনি। তার কষ্টে চোখে জল নামে। সে ভাল থাকবে -তার ভাল লাগবে ভেবে আরণ্যক জ্যোৎস্নায় চোখ রেখে বৃক্ষের কালোপাতায় অন্ধকারে পাহাড়ি উপত্যকায় আমি যেনো কার নাম ধরে ডেকেছি। কাকে যেনো খুঁজেছি।
তার ভাল লাগবে ভেবে কত নির্জন রাত্রীকে অন্ধকার আর রুপালী আলোর নৃত্যেমাতাল বেহুশ কোরে তুলেছি শ্রাবন্তিক কামনার। পাহাড় অরণ্য নির্জনতা হাহাকার ভরে উঠা শূণ্য উপত্যকা- হাত মেলে ধরলে জ্যোৎস্নারা জোনাকিরা...
না কিছুতেই কিছু হয় না। ওঘরটাতে কে যেনো পাথর চোখে চেয়ে থাকে নিষ্পলক।
যেখানেই গেছি ওরা কেউ আমার শৈশবের ডাক নামটি জানে না।
বর্ষার জল নেমে গেছে। পলি মাটির গন্ধে মাতাল সৌরভ। আমনের দুধধান আর শীষ শিশিরে শিশিরে নুয়ে পড়ছে। মাস কেলায়ের পাতা দু'টো থেকে চারটে হয়েছে।ঝাপসা চোখ-শিশির ধোয়াসায়।
দশদিক ছেয়ে আছে জ্যোৎস্নায়-গ্রামের পর গ্রাম। ঘাস ফড়িং গায়ে বসে পরম মমতায়।
পাললিক গন্ধ তুমি কি আমার শৈশবের ডাক নামটি জানো?
-হাসি কৌতুকে এরা সব ছিনাল বেশ্যার মত গায়ে এসে লুটিপুটি খায়। যেনো স্বামীর সোহাগ কিছুই নয় দেবরের আদরের কাছে।
ধনুকে তীর জুড়েছি। সাক্ষী দুধধানের মাঠ আকাশে এবার তীর ছুঁড়ে দেব। তুমি যেই হও বুকে তোমার বয়ে যাবে রক্তের ঢেউ। সরে যাও সুরা সাকী সরাব পেয়ালা। আমি আরো গহীনে যাব।
এই ছাড়া ভিটে বাড়ির আর যারা আমাকে শিশির বানিয়ে রাখে সবাই আমার ডাক নামটি জানে। নিজের সেই নামটি ধরে ডাকি। একটা অদ্ভুত সাড়া পড়ে ভাবীর শরীরে ।যেনো আমাকে এখনই ঝাপটে ধরবে তার দুপাহাড়ী পাদদেশে ।যেনো এখনই ডুবিয়ে মারবে জঙ্গার কূপে।
জানি না কেনো জেগে থাকি। জানি না এরা এবং তারা এরা পরষ্পর কেনো একে অপরের বুকে বিঁধে থাকে যুগের পর যুগ। ময়ূরাক্ষী নদীর মত। জানি না কেনো এত জাল ছড়ায় জলের জলসা ঘরে।
কেনো জ্যোৎস্না দেখি ?
কার জন্য?
শৈশবের প্রেম পাখিনিরা ফটোগ্রাফের বোকা রাজপুত্তুরকে বেঞ্চের নীচ দিয়ে অনেক পা মাড়িয়েছিস-রাজপুত্তুর তখনো প্রেম শিখেনি বলে।
এবার আয় দেখি- তোদের স্তন আকাশে মেলে দেখি জ্যোৎস্নার সাথে তার কতটা তফাৎ?
কেউ নেই।
চাঁদের আলোতেও নেই কিছু।সেতো শুধু প্রতিফলন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪