প্রাণনন্দনস্পর্শরাজ,
কুসুমাকার কোন এক সন্ধ্যের ছায়ালগ্নে যে মুহুর্তে তোমার সাথে আমার প্রথম কথা হয়েছিলো সে সন্ধ্যেটিকে সযত্নে লালন করে মাথায় এক কুঠরিতে বন্ধ করে রেখে দিয়েছি কারণ আমার সেই ছন্দহারা বিহঙ্গ দিনগুলোর একমাত্র মনোসঙ্গী ছিলে তুমি। লোকে বলে, ভালোবাসা মানুষকে স্বার্থহীন হতে শেখায় কিন্তু আমার মনে হয় ভালোবাসা মানুষকে স্বার্থপর করে দেয়। অশ্রুর গহীন বনে ডুবতে ডুবতে আমি ঠিক সেটাই উপলব্ধী করছি আজকাল।
নিজেকে বিসর্জন দেবার মতো দূঃখ বোধহয় পৃথিবীতে আর নাই। মানব জীবনটা এমন যে, আনন্দ ভাগ করা গেলেও দূঃখ কখনো ভাগ করা যায় না, সেটা সম্পূর্ণ আপনাকেই বয়ে বেড়াতে হয়। মরে গেলে মানুষ যদি পূর্বের রূপ নিয়ে ফিরে আসতে পারতো তাহলে আক্ষেপ বলে শব্দটার এতোখানি মূল্যায়ন হয়তো থাকতো না। এক জীবনের অর্ধেক কাজ আরেক জীবনে গিয়ে শেষ করা যেতো।
তুমি বলেছিলে জীবনকে জীবনের মতোই চলতে দিতে হয় মনের ভেতরটা সবসময় ফাঁকা রাখতে হয়, কিন্তু আমি তো পারিনে…মনের ভেতর যে মানুষটা জেঁকে বসে আছে তাকে তো চাইলেই তাড়িয়ে দেয়া যায় না, তাকে চাইলেই বদলে ফেলা যায় না। সকাল, তুমি যতোই বলো জীবনটা মাত্র কয়েকদিনের কিন্তু আমার তো মনে হয় জীবনটা অনেক বড়ো, অনেক দীর্ঘ যন্ত্রণাময়।
কেন জানি অনেক কথা আজ লিখেতে গিয়েও লিখতে পারছি না এপর্যন্ত এসেই থেমে যাচ্ছি। কেন জানি মনে হচ্ছে, সারাজীবন অভিনয় করে চলার চে’ জলে ডুবে মরে যাওয়া ঢের ভালো। আবার মনে হয় এই মরে যাওয়ার মাঝে তো কোন আনন্দ থাকবে না। এই মরে যাওয়াতে তো আমি তোমাকে পাবো না, তোমার-আমার মাঝে যে যোজন-যোজন দূরত্ব তা তো ঘুচবে না তবে কী লাভ এই অনাকাঙ্খিত মৃত্যু’র! তার’চে সারাটিজীবন জ্বলতে-জ্বলতে দূর হতে তোমারেই না হয় সাধিব।
পদস্পর্শপ্রার্থীনি
তোমারই দেবী
আরাধ্য যামিনী
বি:দ্র: কিছু বানান ভুল রহিয়া গেলো।