টাইটানিক জাহাজে যাত্রী সংখ্যা
ছিলো ২২৩০ জন ৷ জীবিত উদ্ধার
হয়েছিল ৭০৬ জন ৷ ডুবে প্রাণ হারায়
মোট
১৫২৪ জন যাত্রী ৷
টাইটানিক মুভিতে দেখা যায়,
অধিকাংশ যাত্রী পানিতে ডুবে
মারা
যায় ৷ কিন্তু মুভির হিরো "জ্যাক" বরফ
শীতল পানিতে শূণ্য ডিগ্রি
তাপমাত্রার
কারণে মারা যায় ৷
একজন দর্শক যখন মুভিটি দেখে তখন
তিনি জ্যাকের মৃত্যুতে যতটা শোকাহত
হন, জাহাজের অন্যান্য যাত্রীদের জন্য
তার ততটা শোক হয় না ৷ তখন দর্শকের
অবস্থা হয় এমন যে, সব মরে যাক তবুও
নায়ক জ্যাক বেঁচে থাক ৷
কখনো কি নিজেকে প্রশ্ন করেছেন,
কেনো এমন হলো? মানুষ হিসেবে সকল
যাত্রীর মৃত্যুতে সমান দুঃখ পাবার কথা
ছিলো ৷ অথচ নায়ক জ্যাকের প্রতি
দর্শকের এতো দরদ হয় কেনো?
জ্যাক একজন জুয়ারী, মদ্যপ, ধুমপায়ী,
অশ্লীল ছবি অঙ্কনকারী, সর্বপরি জ্যাক
এজন ব্যভিচারী ৷ এতকিছুর পরও দর্শকের
কাছে জ্যাকের জীবন অন্যদের চেয়ে
বেশি মূল্য রাখে কেনো?
উত্তর খুবই সহজ,
প্রযোজক ক্যামেরাটি শুধু "জ্যাক ও
রোজ"এর দিকে ফিরিয়ে রাখে ৷ ফলে
দর্শকের মনেহয়, জাহাজে যাত্রী শুধু
ওরা দুজনিই ৷ কিন্তু একই সময় ক্যামেরার
অপর প্রান্তে হাজার হাজার নারী ও
শিশুর চিৎকার ও আর্তনাদ দর্শকের
কানে
পৌঁছে না ৷ ফলে দর্শক তা অনুধাবনের
চেষ্টাও করে না ৷
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনও এমন ৷
আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সে সামান্য
ককটেল ফুটলেই মিডিয়া তা কয়েক
সপ্তাহ হাইলাইট করতে থাকে ৷ কিন্তু
একই সময় এই মিডিয়ার অপর প্রান্তে
আফগানিস্তান, ওয়াজিরিস্তান, ইরাক,
সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেনে প্রতি
দিন
শত শত বোমা ফেলা হচ্ছে ৷ হাজার
হাজার মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা
হচ্ছে
৷ তাদের মর্মভেদী আর্তনাদ আকাশ
বিদীর্ণ করে আরশে পৌঁছে যায় ৷ শুধু
পৌঁছে না আমাদের কর্ণ কুহরে ৷
পৃথিবীর সকল পাপের উৎস এই পশ্চিমারা৷ ওরাই মানুষকে শিখিয়েছে
সমকামিতা,
পশুকামিতা, লিভটুগেদার আরো কত কী৷
ওরা হিরশিমা ও নাগাসাকিতে তিন
লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে ৷ ইরাকে দশ
লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে ৷
আফগানিস্তানে ওদের হত্যাকার্য
এখনো
চলছে ৷
এতকিছুর পরও পশ্চিমারা আমাদের
চোখে হিরো ৷ টাইটানিক ডুবে যাক,
হাজার হাজার যাত্রী মরে যাক ৷
জ্যাক
ও রোজ বেঁচে থাক ৷