মানুষ এখন অত্যন্ত তীব্র অস্বস্তিকর সময় পার করছে। শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের উপর তীব্র চাপ পড়ছে। উদ্বিগ্নতা, হতাশা, প্রাণ বায়ু অক্রিয় হবার সম্ভাবনা মানুষকে বিচলিত করে তুলছে প্রতিটি মুহুর্তে।
আমি কোনো বিশেষজ্ঞ নই। তবুও, মানুষ হিসেবে নিজস্ব বোঝাপড়া থেকে কিছু চিন্তার উদয়।
প্রথমেই যেটি বলতে চাই, সেটি হচ্ছে , আমরা আসলে কোন বিষয় টি নিয়ে উদ্বিগ্ন? ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিপাহ... করোনা নিয়ে? নাকি এহেন পরিস্থিতির জন্য দায়ী কারণ গুলোর একটি সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক সমাধানের জন্য? পৃথিবী যে আজ মানব সভ্যতার জন্য বড্ড জুলুমের স্বীকার। হ্যাঁ, সাধারণ মানুষের এই সমস্ত বিষয় নিয়ে মাতামাতি করার কথা নয়। কেননা, তার অস্তিত্বের সর্বাত্মক সেফটি নিশ্চিত করার জন্য রয়েছে রাষ্ট্র, সরকার, গবেষক, বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ...। তাদের জ্ঞান তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি ভবিষ্যৎ কেন্দ্রিক সিদ্ধান্তের নকশা তৈরি করবেন । ফলশ্রুতিতে, সাধারণ মানুষ গুলো প্রতিবেশের পারস্পারিক মিথষ্ক্রিয়ার সাথে তাদের চলাচলকে টিকিয়ে রাখবেন। ফলে, প্রতিবেশের অসংখ্য উপাদানের সর্বোচ্চ কদর অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে মানব সভ্যতার টিকে থাকার লড়াইও বেগবান হবে ।
কেননা, পৃথিবীতে মানব সভ্যতার টিকে থাকার জন্য, অন্য সকল প্রাণের সহাবস্থান অবশ্যম্ভাবী, সেটা আমাদের নিশ্চয় অজানা নয়। প্রাণের গহীনে ডুবে থাকা কোটি কোটি প্রাণের উপস্থিতি, একটি আরেকটির সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। আমরা কিভাবে একটিকে নিশ্চিহ্ন হতে দিয়ে মানব সভ্যতা টিকে থাকার হুমকিকে অগ্রাহ্য করতে চাই? মানব সভ্যতার অসুরের মতো চষে বেড়ানোর এমন বৈরী চলাচল যে দগদগে ঘাঁ তৈরি করবে না, এ আমরা কিভাবে নিশ্চিত থাকি ?
বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী যে উন্নয়ন এর জন্য নিরন্তর অবদান রেখে চলেছে। সেটা নিঃসন্দেহে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার লক্ষ্যকে ঘিরে। যেখানে প্রতিবেশের অন্যান্য উপাদানগুলোর সাথে সার্বক্ষণিক বৈরিতা বিদ্যমান থাকে। তাছাড়া, মানব সভ্যতার সাথে প্রতিবেশের অসংখ্য উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ককে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে এরা কখনোই উন্নয়নকে ভাবতে চাই নি। তাহলে, এই উন্নয়নই কি পৃথিবীতে মানব সভ্যতার জন্য বিষ ফোঁড়া নয়?
বিশ্বে প্রতিটি প্রাণে বন্ধুর মতো জড়িয়ে আছে কোটি কোটি ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া। এরাও তাদের জীবন স্বাচ্ছন্দ্যমতো অতিবাহিত করতে চাই। এদের ভেতরেও রয়েছে গভীর অনুভুতি ও পোষক প্রাণীকে অনেক বেশি ভালোবাসার মতো প্রবণতা। এই আবেগ - অনুভূতির দৃষ্টিকোণ থেকে ভাইরাস ও ব্যকটেরিয়ার মতো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণের থেকে মানুষের পার্থক্য টা আসলে কোথায় থাকছে? শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে আমরা পৃথিবীকে বাঁচতে দিয়েছি? যতটুকু সম্ভব আষ্টেপৃষ্টে গলা টিপে ধরেছি। আমরা নিজেদের "সংরক্ষিত" করতে করতে আসলে পৃথিবীর আর দশটা প্রাণীর সাথে মানুষের ভেতরের গহীন আদান-প্রদান কে বিচ্ছিন্ন করে চলেছি। এতে প্রাণীর ভেতরের সংস্পর্শ কেন্দ্রিক মেলবন্ধন চরমভাবে বাঁধা গ্রস্ত হয়েছে।
ভেবে দেখুন তো, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এমন কোনো ভয়াবহ পরিস্থিতি আসার সম্ভাবণা কি আদ্য ছিলো না? বিশ্বে মানব সভ্যতার আবির্ভাব ও তাদের কর্মক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধিত হতে হতে আমরা একের পর এক সমস্যা সৃষ্টি করে চলেছি। আর, আল্লাহ, ভগবান, ইশ্বর...যেন আমাদের উতরে নেই, সেটার বাণী কপচায়ে চলেছি। (এটারও সুদুরপ্রসারি রাজনীতি রয়েছে)। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সফলতার সবটুকু এখন ধনতন্ত্রকে পুজো অর্চনা করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রতিটি ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। আমাদের বিশ্বের স্বনামধন্য গবেষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক মণ্ডলী রা কি জানতেন না?, বিশ্ব কোন ভয়াবহ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে চলেছে? অবশ্যই জানতেন। কথা হলো, তারা জেনেও কেনো বিশ্ব সচেতনতার ধারের কাছেও ঘেঁষতে পারলেন না?
বিশ্ব কেনো ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ( H1N1) এর কাছ থেকে শিক্ষা নিতে চাইলো না? এর কারণ কি কি হতে পারে বলে আপনারা মনে করেন? কমেন্টে জানাবেন। কেনো, বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তন জানা সত্বেও আন্তর্জাতিক মানের জলবায়ু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ কিংবা সতর্কবার্তা তৃণমূল পর্যন্ত পৌছুলো না?। কেনো? বিশ্বের মাথাওয়ালা রাজনৈতিক নেতা, বিশ্বকে সঠিক দিকের সন্ধান দিতে চাইলো না? তারা অবশ্যই জানেন। একদিক অনেক বেশি চেপে ধরলে, আরেক দিক ছিটকে যাবেই। এখন কেমন আছেন বরিস জনসন? আর কিম জং উন?