এককথায় বলা যায়,করে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য নির্বাচন,সংসদ আর মন্ত্রীত্ব। এবং এটাকেই পুজি করে অর্থ উপার্জন। সেখানে জনগনের সামাজিক আর অর্থনৈতিক ইস্যুগুলি অবহেলিত পড়ে থাকে,নির্বাচনের আগে যে প্রতিশ্রুতিই দেয়া হোক না কেন। কিন্তু জনগনের অর্থনৈতিক আর সামাজিক মুল্যবোধের কথা ভুলে গেলে তো চলবে না। বিরোধীদলের (আজ যেখানে যার অস্তিত্ব নেই) সেখানে সব সাংসদদের উচিৎ সরকারের কার্যাবলীর পর্যালোচনা করে তার ব্যর্থতাগুলি তুলে ধরা। কিন্তু বর্তমানে পত্র-পত্রিকা খুললেই দেখা যায় অমুক মন্ত্রী,তমুক সাংসদ শুধু ব্যস্ত বিরোধীদলকে হুমকি-ধামকি, এমনকি সময়ে সময়ে তা সকল ভব্যতার সীমাও লংঘন করে যায়। যেন এটাই করেই দেশ উদ্ধার হয়ে যাবে। যা আমার মতে জনগনের এবং সমাজের মুল্যবান সময়েরই অপচয় মাত্র। যেখানে নেতা তথা ক্ষমতাশীনদের উচিৎ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়টুকুর সঠিক ব্যবহার করে দেশ ও জনগনের উন্নতি সাধন। দেখিয়ে বিরোধীদলের পিছনে এতো সময় নষ্ট না করে বা পথ না দেখিয়ে নিজেদের তথা সরকারকে সুষ্ঠ দিক-নির্দেশনা দিলে আমাদের সাথে তাদেরও ভবিষ্যৎ ভাল হবে।
সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতাকে সামনে এনে তার বিকল্প সমাধান,বেকারত্ব,অস্থির সমাজসহ বর্তমানের মূল সমস্যা গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যার মূলে যেয়ে এদের সমাধান করা। কিন্তু প্রায় সবাই ব্যস্ত “অন্য কাজে”। আসলে ভাল রাজনীতিবিদ হলেই যে দেশ পরিচালনায় দক্ষ হতে হবে এমন কথা একদম বোকাও ভাবে না। সবার এই ক্ষমতা থাকে না। বর্তমান মন্ত্রী-সাংসদদের তো নয়ই। এদের কাজ “ভিন্ন”।
একনেতাকে সন্মান করতাম একজন ডাকসাইটে প্রাক্তন ছাত্রনেতা এবং তার সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য। আজ উনি মন্ত্রী হয়ে প্রায় প্রতিদিনই ব্রিজসহ রাস্তাঘাট বানিয়ে ফেলছেন। যেন লাগে টাকা দেবে গৌড়ীসেন। এমনকি মিডিয়ার সামনে বড় বড় অফিসারদের ধমক দিতেও দ্বিধা করছেন না।(যেমনটা কিছুদিন আগে আমাদের মাননীয় প্রাক্তন পধানমন্ত্রীও একজন মহিলা পুলিশকর্মীর সাথেও করেছেন। যেন ইনারাই প্রভু আর আমরা সব......।) যেন উনারাই দেশের উন্নতির পথে একমাত্র বাধা। কিন্তু উনি কি জানেন না,বুঝেন না এইসব সচিব তথা অফিসারদের অপারগতা তথা সমস্যার মূল কোথায়? (আর সেই মুহুর্তে তাদের সন্তানসহ পরিবারের মানসিক অবস্থার কথা বাদই দিলাম)। এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে? পাঠকরা একটু কষ্ট করলেই এইসব মন্ত্রী এবং সাংসদদের কার্যাবলী অনুধাবন করতে পারবেন বলে আর কথা বাড়ালাম না।
বর্তমানে রাজনৈতিক হোক ক্ষমতাসীন, হোক বিরোধী দলের নেতারা নিজেদের অপকর্ম তথা ব্যর্থতাকে ঢাকতে যেয়ে নিম্ন আর মধ্যবিত্বের উপর শুধু অর্থনৈতিক আর প্রতিশ্রুতির বোঝা তুলে দিয়ে তাদের জীবনকে দৃর্বিসহই করে তুলছেন শুধু। সমাজ,জনগন আর দেশের উন্নতি দুরাস্ত
আর বিরোধীদলের কথা না বললে লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে বলে মনে করছি। নেতারা এসিরুমে থেকে,ফ্রিজভর্তি খাবার রেখে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আন্দোলনের ডাক দিয়ে থাকেন। যেন জনগন বিভিন্ন দ্বীপে বসবাস করেন। যেন তারা জেলে গেলে আন্দোলন তথা দেশ রসাতলে ডুবে যাবে। আন্দোলনকে এগিয়ে নেবার কেউ থাকবে না। যেন নেতারাই রাজপথে রক্ত আর প্রাণ দিয়ে অতীতে প্রতিটি আন্দোলনকে সফল করে তুলেছেন। ইচ্ছেকৃত ভুল আর কাকে বলে? নুর হোসেনরাই আন্দোলন গড়ে তুলে,রক্ত আর জীবন দিয়ে তা সফল করে তুলে। কিন্তু তা যায় নেতাদের ভাগে। কেউ আমাকে বলতে পারবেন আজ পর্যন্ত যত আন্দোলন হয়েছে তাতে কয়জন ১ম শ্রেনীর নেতা আর কতজন সাধারন কর্মী আর ছাত্র প্রান দিয়েছেন?? এমনকি সেই আদিযুগেও সেনাপতিরা সম্মুখসারীতে থেকে যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিচানা করতেন। তিনি নীহত হলে আরেকজন এগিয়ে যেতো তার স্থানে।(দয়া করে কেউ যেন মনে না করে বসেন যে আমি নেতাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিতে চাইছি বা তা কামনা করছি)। তাই তো আজ আত্মগোপন আর ভিডিও লিংক আন্দোলন যে আমাদের নুতন দিক-নির্দেশনা দেখালো তা দেখে হাসবো না কাদবো ভেবে পাচ্ছি না। সচেতন যদি কেউ থেকে থাকেন তবে তার সিংহভাগই যুবসমাজ আর ছাত্ররা। এদের সাথে মিসতে না পারলে এই পরিনতি থেকে নিস্তার নেই। সবশেষে বলবো সবচেয়ে ভাল হয় এইসব খেলা বন্ধ করে অযথা প্রাণ এবং অর্থের অহেতুক অপচয় না করা। যার বিষফল শেষপর্যন্ত নিম্ন এবং মধ্যবিত্বকেই হজম করতে হবে। দোহাই লাগে।
বিঃদ্রঃ কারো অনুভুতিতে আঘাত করা আমার লক্ষ্য না,শুধু বাস্তবতাকে একটু তুলে ধরার প্রচেষ্টা। তাও নিজের দৃষ্টিভঙ্গিতে। পাঠকদের আগাম ধন্যবাদ।