Män som hatar kvinnor (Men Who Hate Women)
Director: Niels Arden Oplev
Country : Sweden
IMDb Rating: 7.7
ব্লগে টিপিকাল হলিউডি মুভির জয়জয়কার।তাই,অনেকই হয়তো অচেনা ভাষার স্ক্যান্ডিনেভিয়ান মুভি দেখার ঝুঁকিটা নিতে চাইবেন না।তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, হলিউডের বাইরেও ভালো মুভি নির্মিত হয়।একবার পরখ না করলে বুঝবেন কিভাবে! সেজন্যই আজ Girl with the Dragon Tattoo নামের অসাধারণ এক মুভির কথা শেয়ার করছি।
মিখাইল ব্লমকোভিস্ট (Michael Nyqvist) বিখ্যাত ফিনান্সিয়াল জার্নালিস্ট (আধা ডিটেকটিভ বলা যেতে পারে)।এক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে, সে সাংবাদিকতা ছাড়তে বাধ্য হয়।লিজবেথ স্যালান্ডার (Noomi Rapace) এমন এক তরুণী, যাকে প্রথম দর্শনে মনে হবে কোনো ডেথ মেটাল ব্যান্ডের পাগল ফ্যান, নিছকই এক পাঙ্ক।চুল ছোট করা, কানে-নাকে গয়না।কিন্তু এই মেয়েকে দেখে তার যোগ্যতা বিচার করা অসম্ভব।সবারই সিক্রেট থাকে।সে সিক্রেটগুলো বের করে আনার ঐশ্বরিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে, অসম্ভব প্রতিভাবান এই প্রোগ্রামার।হেনরিক ভ্যাঙ্গার (Sven-Bertil Taube) বুড়ো এক ধনকুবের।বয়সের কারণে কিছুটা বাতিকগ্রস্তও বটে।সে ব্লমকোভিস্টকে নিয়োগ দেয়, হ্যারিয়েট ভ্যাঙ্গার নামে এক মেয়েকে খুঁজে বের করার।যে নিখোঁজ হয়েছে ৪০ বছর আগে।হেনরিকের ধারণা, হ্যারিয়েট হারিয়ে যায়নি, বরং তাকে হত্যা করা হয়েছে।সমাধানে নামে ব্লমকোভিস্ট।ঘটনাক্রমে একসময় তার সাথে যোগ দেয় স্যালান্ডার।তদন্ত করতে থাকে তারা।আপাতঃ দৃষ্টিতে নীরস, সরল এক ঘটনার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে অবিশ্বাস্য এক রহস্য...।
গার্ল উইথ দ্য ড্রাগন ট্যাটু (Män som hatar kvinnor) সুইডিশ লেখক স্টিগ লারসন'র মিলেনিয়াম ট্রিলোজি অবলম্বনে নির্মিত প্রথম মুভি।বইটি ২০০৫ সালে সুইডিশ ভাষায় ও ২০০৮ সালে ইংরেজীতে প্রকাশিত হয়।২০০৮ সালে এটি বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলোর মাঝে একটি ছিলো (প্রায় ২,৭০,০০,০০০ কপি)।
প্রথমে একটি কথাই বলবো, স্টিগ লারসন ইজ আ জিনিয়াস।এই লোকটি মাত্র তিনটি ফিকশন নভেল লিখেছেন।কিন্তু অন্য থ্রিলার রাইটারদের নাকানি-চুবানি খাওয়ানোর মতো সম্পূর্ণ যোগ্যতা তার ছিল।ছিল বলছি কারণ, লারসন ২০০৪ সালে মারা গিয়েছেন (অন্য লেখকরা কি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন?)।ব্যাক্তিগত জীবনে লারসন ছিলেন একজন ফিনান্সিয়াল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (ব্লমকোভিস্ট ক্যারেক্টারটিকে লেখকের সেল্ফ প্রজেকশন বলা যেতে পারে)।তার মৃত্যু নিয়েও ধোঁয়াশা আছে।অনেকে মনে করেন, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু না, হত্যাকান্ড ছিল।
আমার দুর্ভাগ্য যে,নভেলটি মূল ভাষায় (সুইডিশ) পড়তে পারিনি।তবে, ইংরেজী অনুবাদটা মোর দ্যান এনাফ।আমি অনেকদিন পর কারো লেখা পড়ে এতোটা মুগ্ধ হয়েছি।ব্রিলিয়ান্ট, ইনোভেটিভ অ্যান্ড অরিজিনাল।থ্রিলার নভেল যে আর্টিস্টিক স্টাইলে লেখা যায়, তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ স্টিগ লারসন।
মিলেনিয়াম ট্রিলোজি অবলম্বনে তিনটি মুভি নির্মিত হয়েছে, তিনটিই সুইডিশ ভাষায়।বই তিনটা পড়লেও, শুধুমাত্র প্রথম মুভিটা দেখেছি এবং মুগ্ধ হয়েছি।এজন্য শুধু প্রথম মুভিটির কথা বর্ণনা করলাম।মুভিটা ইংলিশে নির্মিত হলে, সম্ভবত এতোদিনে আই.এম.ডি.বি. টপ ২৫০-তে চলে আসতো।তবে সুখবর হলো, ডার্ক থ্রিলার মুভির নতুন বস David Fincher মুভিটি পুনঃনির্মাণ (রিমেক) করবেন বলে ঠিক করেছেন।ব্লমকোভিস্টের চরিত্রে অভিনয় করতে জর্জ ক্লুনি, ব্র্যাড পিট, জনি ডেপ এরা সবাই আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরে ড্যানিয়েল ক্রেগ-কে নেওয়া হয়েছে । শুনে খুব মেজাজ খারাপ হলেও; সত্যি বলতে কি, মুভিতে যে ব্লমকোভিস্টের ক্যারেক্টার প্লে করেছেন, সেই Michael Nyqvist এর সাথে ক্রেগের চেহারার মিল আছে।মূল মুভির লিজবেথ ঠিক করেছেন স্যালান্ডার চরিত্রটি আর করবেন না।তার পরপরই ক্রিস্টেন স্টিউওয়ার্ট (ট্যুয়ালাইট), এলিন পেজ (জুনো), স্কারলেট জোহানসেন (প্রেস্টিজ,আয়রন ম্যান-২) লিজবেথ ক্যারেক্টারটি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।কেরি মুলিগান (অ্যান এজুকেশন) আর হ্যারি পটার স্টার এমা ওয়াটসন তো লিজবেথের সাথে মিল রাখার প্রয়াস হিসেবে নিজের চুল কেটে বয় কাট করেছেন।এই প্রতিযোগিতাকে তুলনা করা হচ্ছিলো ক্লাসিক মুভি "গন উইথ দ্য উইন্ড" -এর সাথে।কারণ এটি ছিল সাম্প্রতিক কালের সবচে লোভনীয় নারী চরিত্র।যেই করুক না কেন, ঠিকভাবে নির্মিত হলে লিজবেথ স্যালান্ডার, ক্লারিস স্টারলিং এর মতো কিংবদন্তীতে পরিণত হতে পারতো।তবে পরিচালক এই চরিত্রে জন্য এক অপরিচিত মুখ খুঁজছিলেন।তাই Rooney Mara নামে এক নতুন অভিনেত্রীকে কাস্ট করা হয়েছে।জানি না সে কেমন করবে ।
মূল বই তিনটি নেটে পাওয়া যাবে।প্রথম বইটির বাংলা অনুবাদও পাবেন।
মাস্ট সী,মাস্ট রিড।