বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সহকারী পরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস) রহমান খান এক ই-মেইলে আসিফ মহিউদ্দিন সহ ছয় ব্লগারের যাবতীয় তথ্য’ চেয়েছেন বলে জানিয়েছে আমারব্লগ ডটকম কর্তৃপক্ষ।
চিঠিতে রাষ্ট্র ও ধর্মবিরোধী লেখালেখির অভিযোগ তুলে ওই ব্লগারদের লগইন বৃত্তান্ত, আইপি ও ই-মেইল ঠিকানা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সব লেখা ২১ মার্চের মধ্যে মুছে ফেলারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অবশ্য শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আমার ব্লগ ডটকম জানিয়েছে, অ্যাকাউন্ট বাতিল এবং ব্লগারদের ব্যক্তিগত তথ্য তারা দেবে না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলায় বাক স্বাধীনতা রক্ষায় শুরু থেকেই দায়বদ্ধ আমারব্লগ। আর তা যে কোনো মূল্যে অক্ষুণ্ন রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলো, আছে এবং থাকবে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমারব্লগ বিটিআরসির নির্দেশ প্রত্যাখান করছে।’
তারা বলছে, আন্তর্জাতিক প্রাইভেসি আইন অনুযায়ী কোন ব্লগারের আইপি অ্যাড্রেস, লোকেশন, ইমেইল, মোবাইল নম্বর এবং ব্যক্তিগত নাম তারা প্রকাশ করবে না।
এ ব্যাপারে আমারব্লগ ডটকমের অন্যতম অ্যাডমিন সুশান্ত দাশ গুপ্ত জানিয়েছেন, তারা দেশের একাধিক প্রথিতযশা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কোন আইনে বিটিআরসি ব্লগারদের ব্যক্তিগত তথ্য ও লেখার অনুলিপি চাচ্ছে সে ব্যাপারটি তারা খতিয়ে দেখছেন।
তিনি বলেন, “জনপ্রশাসনের এখতিয়ার বহির্ভূত যেকোন হস্তক্ষেপকে আমরা আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করব। আমারব্লগ ডটকম-এ লেখালেখির জন্য যদি কোনো ব্লগার সরকারি রোষাণলে পড়েন তাহলে আমারব্লগ কর্তৃপক্ষ তার সাধ্যমত সহায়তা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।”
“কোনো ব্লগারের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে হয়রানি করা হলে সেই সংক্ষুব্ধ ব্লগার যদি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণসহ যেকোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে ইচ্ছুক হন, আমারব্লগ ডটকম তাকে আইনি সহযোগিতা দেয়ার ব্যবস্থা করবে।”
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে ১২টি ব্লগ ও ফেইসবুক পেইজ বন্ধ করে দেয় বিটিআরসির সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে বিশেষ টিম (বিডি-সিএসআইআরটি)।
বন্ধ করে দেয়া ব্লগের মধ্যে রয়েছে সোনার বাংলা ব্লগ, শাহবাগের আন্দোলনকারীরা যাকে জামায়াত-শিবির পরিচালিত বলে অভিযোগ তুলেছিলেন।
গত বছরের ২৫ জানুয়ারি সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে একটি বিশেষ টিম গঠন করে বিটিআরসি। বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিডি-সিএসআইআরটি) নামে এই টিম সে সময় থেকে সাইবার ক্রাইম সনাক্তে কাজ শুরু করে।
একই বছরের ২২ এপ্রিল থেকে [email protected] ঠিকানায় সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে অভিযোগ ও পরামর্শ নেয়া শুরু হয়। অভিযোগ পাওয়া মাত্র তদন্ত করে গুরুত্ব বুঝে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় বিটিআরসি।