আমরা কম বেশি সবাই মাথা ব্যথায় ভুগে থাকি। বিষয়টা এরকম যেন, মাথা থাকলে মাথা ব্যথা থাকবেই। তবে কপালের অর্ধেক অংশ জুড়ে যে ব্যথা সেটা একটু আলাদা। এটি মূলত মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে হয়ে থাকে। এ মাথাধরার সঙ্গে থাকে বমিভাব।
মাইগ্রেনের অন্যতম লক্ষণ হল, এতে আলো ও জোড়ে শব্দ সহ্য হয় না। এ ব্যথা থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। সাধারনত কয়েক ঘণ্টা থেকে ৩ দিন পর্যন্ত এর প্রকোপ বজায় থাকে।
অনেক সময় বিশেষ কোন খাবার, পাউডার বা পারফিউমের উগ্রগন্ধ, সিগারেটের ধোঁয়া, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত বা কম ঘুম কিংবা ঠাণ্ডা থেকে মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যায়। তবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনাচারণ ও খাওয়াদাওয়ার কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে আমারা এ ব্যথা থেকে রক্ষা পেতে পারি।
মাইগ্রেন থেকে রেহাই পাবার কিছু উপায়......
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত ।
- অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা ।
- কড়া রোদ বা তীব্র ঠাণ্ডা পরিহার করতে হবে ।
- উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
- বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।
যে সমস্ত খাবার মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ::
ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- ঢেকি ছাঁটা চালের ভাত ও এ চালের বিভিন্ন পদ, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক।
- বিভিন্ন ফল বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে।
- সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়।
- জল, হার্বাল টি; হার্বাল টির মধ্যে বেছে নিতে পারেন গ্রিন টি।
- ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিট
ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমান ক্যালশিয়াম রয়েছে।
- আদার টুকরো বা রস দিনে ২ বার জিঞ্চার পাউডার জলে মিশিয়ে খেতে পারেন ।
কী ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন....
- ডেয়ারি প্রোডাক্ট [দুধ, মাখন]
- টমেটো ও সাইট্রাস জাতীয় ফল খাবেন না
- গম জাতীয় খাবার, যেমন- রুটি, পাস্তা ব্রেড ইত্যাদি
- আপেল, কলা ও চিনাবাদাম
- পেঁয়াজ
- পানীয়র মধ্যে অ্যালকোহল সমৃদ্ধ পানীয় সম্ভব হলে এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে- রেড ওয়াইন, চা, কফি ও কোমল পানীয় কম পরিমানে খাবেন। ঠাণ্ডা পানীয় খাবার আগে লেবেল চেক করে নিন; মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট ও সাইট্রাইট রয়েছে এরকম পানীয় এড়িয়ে চলুন।
তবে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সবচেয়ে ভাল হয় একটা ডায়েরি রাখা। যাতে আপনি নোট করে রাখতে পারেন কোন কোন খাবার ও কোন কোন পারিপার্শ্বিক ঘটনায় ব্যথা বাড়ছে বা কমছে। এরকম এক সপ্তাহ নোট করলে আপনি নিজেই নিজের সমাধান পেয়ে যাবেন। তবে ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।