লোকজন কেনো বিবর্তনবাদ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন কিংবা নিদেনপক্ষে বিবর্তনবাদীদের সাথে বাহাসে যেতে চান না – সে বিষয়ে প্রথম পর্ব থেকে সুস্পষ্ট একটা ধারণা পাওয়া যাবে। বিবর্তনবাদ তত্ত্ব যে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মতো পুনঃ পুনঃ পরীক্ষা-নিরীক্ষা নির্ভরশীল কোনো তত্ত্ব নয় – সে বিষয়ে দ্বিতীয় পর্বে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেমন, সরল একটি অণুজীব থেকে "এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন" এর মাধ্যমে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে মিলিয়ন মিলিয়ন প্রজাতি বিবর্তিত হয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে – সেটিকে বারংবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রমাণ করা অসম্ভব। অনুরূপভাবে, মানব জাতি সত্যি সত্যি অন্য কোনো প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়েছে কি-না – সেটাও বারংবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। কিছু উদাহরণের সাহায্যে এ-ও দেখিয়ে দেয়া হয়েছে যে, যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর আগের কিছু জীবাশ্ম বা জীবাশ্মের অংশবিশেষ দিয়ে বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে কোনো ভাবেই প্রমাণ করা যাবে না – বিশেষ করে বিবর্তনকে যেভাবে অত্যন্ত ধীর গতির বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিবর্তনবাদ তত্ত্বে বিশ্বাসীদের মধ্যে অধিকাংশই এই তত্ত্বে বিশ্বাস করেন এ-কারণে নয় যে, এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য। তারা বরঞ্চ বিবর্তনবাদ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন এ-জন্য যে, এই তত্ত্ব তাদের বস্তুবাদী দর্শনের সাথে খাপ খায়। নিদেনপক্ষে তারা সে-রকমই ভাবেন। বাদবাকী সবাই বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের নামে বিবর্তনবাদী গুরুদের অপপ্রচারের শিকার হয়ে বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করেন। বেশীরভাগ লোকজনই আসলে অন্ধ অনুসারী। তাদের যুক্তি হচ্ছে অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড, এমআইটি, ম্যাকগিল, ও টরন্টোর মতো বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা যেহেতু বিবর্তনবাদ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেহেতু বিবর্তনবাদ তত্ত্ব পড়ানো হয় সেহেতু এই তত্ত্ব অবশ্যই সত্য হবে! ওয়েল, এই ধরণের যুক্তি হেত্বাভাস দোষে দুষ্ট বিধায় সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বা এমনকি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও কোনো মূল্য নেই। আজ থেকে কয়েক শতক আগেও বিজ্ঞানীরা-সহ প্রায় সবাই অনেক কিছুই বিশ্বাস করতেন। কিন্তু তাদের বিশ্বাস ইতোমধ্যে ভুল প্রমাণ হয়েছে। অতএব, কতজন বিজ্ঞানী ও বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিবর্তনবাদ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন – সেটা না দেখে তাদের বিশ্বাসের কারণ ও ভিত্তি দেখলেই তো ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় ও আলোচিত বিবর্তনবাদী হচ্ছেন প্রফেসর রিচার্ড ডকিন্স। উনি নাকি প্রমাণ ছাড়া কোনো কিছুতেই বিশ্বাস করেন না! কথায় কথায় বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এর কথা বলেন। যেখানে সেখানে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দেখতে চান! এমনকি এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার পক্ষেও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ চান! স্রষ্টাকে যেহেতু স্বচক্ষে দেখা যায় না সেহেতু স্রষ্টায় বিশ্বাসকে "ঈশ্বর প্রবঞ্চনা" বলেন! অথচ যারা স্রষ্টাকে স্বচক্ষে দেখেই তবে বিশ্বাস করেন তাদের সম্পর্কে কিছু বলেন না! উনি সব সময় যুক্তিবিদ্যার উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি ধর্মীয় বিশ্বাস ও বিশ্বাসীদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। কিন্তু তার নিজের বিশ্বাস কি ধর্মে বিশ্বাসীদের বিশ্বাসের চেয়ে কোনো অংশে কম হাসি-তামাসার ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের? উনি নিজের সাথে আসলেই সৎ নাকি অসচেতন লোকজনকে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ এর নামে মস্তক ধোলাই করছেন, কে জানে! দেখা যাক দেখি উনি আসলে কীসে বিশ্বাস করেন।
প্রফেসর ডকিন্স-সহ বিবর্তনবাদী নাস্তিকদের সবচেয়ে বড় অন্ধ বিশ্বাস হচ্ছে ক্ষুদ্র একটি অণুজীব থেকে "এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন" এর মাধ্যমে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে মিলিয়ন মিলিয়ন ধরণের প্রজাতি বিবর্তিত হয়েছে। তাদের মধ্যে যেমন স্থলচর-জলচর-উভচর প্রজাতি আছে তেমনি আবার স্তন্যপায়ী ও অস্তন্যপায়ী প্রাজাতিও আছে। পিঁপড়া ও মশার মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীব যেমন আছে তেমনি আবার তিমি ও হাতির মতো বিশালাকার প্রাণীও আছে। এর চেয়ে বড় অন্ধ বিশ্বাস দ্বিতীয়টি আছে কি? এই ধরণের বিশ্বাস তো পৌরাণিক কল্প-কাহিনীকেও হার মানানোর কথা! অথচ অক্সফোর্ড প্রফেসর ও সাদা চামড়ার বৃটিশ হওয়ার সুবাদে তার বাণীকে গডের বাণীর মতই অভ্রান্ত হিসেবে বিশ্বাস করা হচ্ছে!
যাহোক, এই পর্বে এক প্রজাতি থেকে ভিন্ন প্রজাতির বিবর্তন যে যৌক্তিক ও বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভব নয় – তা জোরালো কিছু যুক্তির সাহায্যে দেখিয়ে দেয়া হবে।
১. অস্তন্যপায়ী প্রজাতি থেকে স্তন্যপায়ী প্রজাতির বিবর্তন: অস্তন্যপায়ী প্রজাতি সরাসরি ডিম দেয়। তাদের কোন স্তনগ্রন্থী নেই। অন্যদিকে স্তন্যপায়ী প্রজাতি সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে এবং তাদের স্তনগ্রন্থী আছে। দুটি প্রজাতির মধ্যে শারীরিক গঠনেও বিস্তর ফারাক। এই অবস্থায় দৈব কোনো ঘটনা ছাড়া অস্তন্যপায়ী প্রজাতি থেকে স্তন্যপায়ী প্রজাতির বিবর্তন অসম্ভব – তাও আবার মন্থর গতিতে! বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তো দূরে থাক এমনকি একটি অস্তন্যপায়ী প্রজাতি থেকে মন্থর গতিতে কীভাবে একটি স্তন্যপায়ী প্রজাতির বিবর্তন সম্ভব – সেটা বিবর্তনবাদীরা নিদেনপক্ষে যুক্তি দিয়েও ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। এই উদাহরণকে এবার লক্ষ লক্ষ অস্তন্যপায়ী ও স্তন্যপায়ী প্রজাতির সাথে তুলনা করে গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে বিবর্তনবাদীরা কল্পকাহিনীর চেয়েও অযৌক্তিক কিছুতে বিশ্বাস করেন।
২. ডিম-মুরগী ধাঁধা: ডিম ছাড়া যেমন মুরগী হয় না তেমনি আবার মুরগী ছাড়া মুরগীর ডিম হয় না। তার মানে মুরগী ও মুরগীর ডিম একে অপরের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। একটি ছাড়া অন্যটির বাস্তবে কোন অস্তিত্ব থাকতে পারে না। আর তা-ই যদি হয় তাহলে যে কোনো একটিকে প্রথমে সৃষ্ট হতেই হবে। এখানে বিবর্তনের কোনো সুযোগই নেই। প্রমাণ তো দূরে থাক এমনকি অন্য কোনো পাখি থেকে মন্থর গতিতে কীভাবে মুরগী বা মুরগীর ডিমের বিবর্তন সম্ভব সেটা তারা নিদেনপক্ষে যুক্তি দিয়েও ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। অতএব, ডিম আগে না মুরগী আগে – এই ধাঁধার যৌক্তিক জবাব দেয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
৩. আম গাছ পেতে হলে আমের বীজ লাগবে। তালের বীজ থেকে কেউ আম গাছ আশা করতে পারেন না। অনুরূপভাবে, আমের বীজ পেতে হলে আম গাছ লাগবে। তালগাছ থেকে কেউ আমের বীজ আশা করতে পারে না। তার মানে আমের বীজ ও আম গাছ একে অপরের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। একটি ছাড়া অন্যটির বাস্তবে কোন অস্তিত্ব থাকতে পারে না। আর তা-ই যদি হয় তাহলে যে কোনো একটিকে প্রথমে সৃষ্ট হতেই হবে। এখানে যেমন বিবর্তনের কোনো স্থান নেই তেমনি আবার আমের বীজ অথবা আম গাছ ছাড়া বিবর্তন শুরু হওয়ারও কোন সুযোগ নেই। পাথর থেকে তো আর আমের বীজ অথবা আম গাছ বিবর্তিত হতে পারে না! শুধু তা-ই নয়, প্রত্যেকটি ফলের আবার আকার-আকৃতি, স্বাদ-ঘ্রাণ, বীজের সংখ্যা, ও খাদ্যপ্রাণ আলাদা। এই উদাহরণকে এবার হাজার হাজার ও হরেক-রকম ফলের গাছের সাথে তুলনা করে গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে বিবর্তনবাদীরা কল্পকাহিনীর চেয়েও অযৌক্তিক কিছুতে বিশ্বাস করেন।
৪. বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তো দূরে থাক এমনকি ধতুরা ফুল বা অন্য যে কোন ফুল থেকে মন্থর গতিতে কীভাবে গোলাপ ফুলের বিবর্তন সম্ভব – সেটা তারা নিদেনপক্ষে যুক্তি দিয়েও ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। প্রত্যেকটি ফুলের আকার-আকৃতি ও ঘ্রাণ কিন্তু আলাদা। কোনো কোনো গাছে কাঁটা আছে আবার কোনো কোনো গাছে কাঁটা নেই। তাছাড়া প্রথম ফুলের বীজ বা গাছ যে কোথা থেকে এলো সেটা কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। পাথর থেকে একটি ফুলের বীজ বা গাছ বিবর্তিত হতে পারে না নিশ্চয়! অতএব, বিবর্তন শুরু হতেও অন্ততঃপক্ষে প্রথম ফুলের বীজ বা গাছকে সৃষ্ট হতেই হবে।
৫. চতুষ্পদী কোনো প্রাণী থেকে মন্থর গতিতে কীভাবে বিশাল আকার-আকৃতির তিমির বিবর্তন সম্ভব – সেটা তারা নিদেনপক্ষে যুক্তি দিয়েও ব্যাখ্যা করতে পারবেন কি-না, কে জানে! সঙ্গত কারণে এগুলো বলার সময় প্রফেসর ডকিন্স না হয় হাসি চেপে রাখেন! কিন্তু তার অনুসারীরা যে কীভাবে এগুলোকে বিজ্ঞানের নামে গাছ থেকে ভূমিতে অ্যাপেল পড়ার মতো সত্য হিসেবে বিশ্বাস করেন, তা ভাবতেও অবাক লাগে!
৬. জলচর প্রজাতি থেকে সরীসৃপ প্রজাতির বিবর্তন: কিছু উভচর জীব ছাড়া মাছ ও অন্যান্য জলচর জীবকে ডাঙ্গায় রেখে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়। আর মারা না গেলেও পানি থেকে ডাঙ্গায় উঠে একটি মাছ থেকে কীভাবে ধীরে ধীরে সরীসৃপ বিবর্তিত হওয়া সম্ভব! মাছ থেকে সরীসৃপ তো দূরে থাক এমনকি একটি মাছ থেকে অন্য একটি মাছের বিবর্তনের পক্ষেই তো কোনো প্রমাণ নেই! সারা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন আকার-আকৃতির ও অদ্ভুত রকমের এত বেশী মাছ ও জলজ জীব আছে যে, শুধু সেগুলোর বিবর্তনই তারা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করতে পারবেন না।
৭. শিংহীন প্রাণী থেকে শিংওয়ালা প্রাণীর বিবর্তন, লেজহীন প্রাণী থেকে লেজওয়ালা প্রাণীর বিবর্তন, লেজওয়ালা প্রাণী থেকে আবার লেজহীন প্রাণীর বিবর্তন, চোখহীন জীব থেকে চোখওয়ালা জীবের বিবর্তন, ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদির বিবর্তন কেনো ও কীভাবে হয়েছে সেগুলোর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ নাই।
৮. যদিও প্রথম জীব কবে, কোথায়, ও কীভাবে উদ্ভব (!) হয়েছে তার কোনো সদুত্তর এখন পর্যন্তও বিজ্ঞানীদের হাতে নেই তথাপি ধরে নেয়া যাক যে ব্যাকটেরিয়ার মতো সরল একটি অণুজীব থেকে কারো হস্তক্ষেপ ছাড়াই আপনা-আপনি বিবর্তিত হতে হতে মানুষে এসে ঠেকেছে! তথাপি হাজারো প্রশ্ন থেকে যায়। যেমন প্রথম জীব কোন লিঙ্গের ছিল? সেখানে থেকে পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ কেনো ও কীভাবে আলাদা হলো? প্রত্যেকটি প্রজাতির পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ একই সাথে নাকি আগে-পরে বিবর্তিত হয়েছে? জৈবিক চাহিদা পূরণ ও বংশবিস্তারের জন্যই কি পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ বিবর্তিত হয়েছে? মানুষ ও পশুদের অণ্ডকোষ কেনো ও কীভাবে বিবর্তিত হলো? বংশবিস্তারের জন্য তাদের মধ্যে কেনো ও কীভাবে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু বিবর্তিত হলো? একে অপরের প্রতি আকর্ষণই বা কেনো ও কীভাবে বিবর্তিত হলো? রক্ত চলাচলের জন্য অতি সূক্ষ্ম শিরা-উপশিরা কেনো ও কীভাবে বিবর্তিত হলো? রক্তই বা কেনো ও কীভাবে বিবর্তিত হলো? প্রথম জীবের কোনো জীবাশ্ম আছে কি-না? তার ঠিক পরের জীব কোনটি? প্রাণীদের প্রয়োজনেই কি খাদ্য বিবর্তিত হয়েছে নাকি উল্টোটা? খাদ্যের প্রয়োজনেই কি মুখ-সহ পরিপাক প্রক্রিয়া বিবর্তিত হয়েছে নাকি উল্টোটা? দেখার প্রয়োজনেই কি চক্ষু বিবর্তিত হয়েছে নাকি বিপরীতটা? শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজনেই কি নাসারন্ধ্র বিবর্তিত হয়েছে নাকি বিপরীতটা? কেনোই বা শ্বাস-প্রশ্বাসের দরকার হলো? শোনার প্রয়োজনেই কি কর্ণ বিবর্তিত হয়েছে নাকি উল্টোটা? অসার বস্তু শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্যই কি পায়ু পথ ও মুত্রনালি বিবর্তিত হয়েছে নাকি বিপরীতটা? ইত্যাদি! ইত্যাদি! ইত্যাদি! এ-রকম হাজারো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের যৌক্তিক জবাব দেয়া বিজ্ঞানীদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।
এ-রকম আরো অসংখ্য উদাহরণ দেয়া সম্ভব যেগুলো নিয়ে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বিজ্ঞানের নামে বিবর্তনবাদীদের কল্পকাহিনী আর প্রতারণার রহস্য উন্মোচিত হয়। যৌক্তিক ও বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি প্রাণী থেকে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রাণীর বিবর্তন আসলে সম্ভব নয়। যেটা সম্ভব হতে পারে সেটা হচ্ছে একটি প্রাণীর পেট থেকে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রাণীর জন্ম। কিন্তু সেটাও হবে দৈব ঘটনা। সকল প্রকার প্রজাতি মোটামুটি একই রকম ও হাড়বিহীন হলে না হয় একটা কথা ছিল। কোনো-না-কোনো ভাবে হয়ত একটু-আধটু এদিক-সেদিক হতে পারতো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বেশীরভাগ জীব-জন্তুর শরীর হাড়-হাড্ডির সমন্বয়ে গঠিত। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের শরীরের গঠন অস্বাভাবিক রকম আলাদা। এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতি অস্বাভাবিক রকম আলাদা। এমনকি একই প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন উপ-প্রজাতিও অনেকটাই আলাদা। গায়ের রঙ-সহ অনেক কিছুই আলাদা। ফলে অকাট্য প্রমাণ ছাড়া একটি প্রজাতি থেকে অন্য কোনো প্রজাতি বা এমনকি একটি প্রাণী থেকে অন্য কোনো প্রাণীর বিবর্তন কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাও আবার অন্ধ-অচেতন ও উদ্দেশ্যহীন প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে!
বাকি থাকে আণবিক জীববিদ্যা ও জেনেটিক্স! তবে যেখানে অখণ্ডনীয় যুক্তির সাহায্যে দেখিয়ে দেয়া হলো যে, একটি প্রজাতি থেকে ধীরে ধীরে ভিন্ন প্রজাতির বিবর্তন বাস্তবে সম্ভব নয় সেখানে আণবিক জীববিদ্যা বা জেনেটিক্স দিয়ে আবার কীভাবে তা সম্ভব করা সম্ভব! বিগত কয়েক দশক ধরে জীবাশ্মের উপর ভিত্তি করে কল্পনা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিবর্তনবাদকে প্রমাণ করতে না পেরে অবশেষে আণবিক জীববিদ্যা ও জেনেটিক্স এর মতো অস্পষ্ট একটি বিষয়ের দিকে মানুষকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আণবিক জীববিদ্যা ও জেনেটিক্স ছাড়া নাকি বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বোঝা যাবে না! চার্লস ডারউইন নিজেই তাহলে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বুঝতেন না! অথচ কিছুদিন আগেও বিবর্তনবাদ তত্ত্ব নিয়ে কেউ সংশয় প্রকাশ করলে জীবাশ্মবিদ্যায় অজ্ঞানতার কথা বলা হতো। তার মানে ইতোমধ্যে জীবাশ্মবিদ্যা থেকে পিছুটান দেয়া শুরু হয়েছে!