“সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমার কিছু প্রস্তাবনা"
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
“একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না”। শুধু কান্না বললে কম বলা হবে। একটি পরিবারকে পথে বসানোর জন্য ছোটখাট একটি দুর্ঘটনাই যথেষ্ট। সড়ক দুর্ঘটনা একটি চলমান ইস্যু। সড়ক দুর্ঘটনার কারন ও প্রতিকার বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি ও আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা আদৌ কমেছে বলে কেউ বলতে পারবেন না। বরং দিন দিন বেপরোয়া ভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। আমার মতে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহন করা যেতে পারেঃ
১। চালক ও পথচারী সবারই সচেতনতা প্রয়োজন। চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। আর পথচারীদের ও যত্র তত্র রাস্তা অতিক্রম করার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
২। সমগ্র ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। ডিজিটাল সিগন্যাল বাতি, কোজ সার্কিট ক্যামেরা ও দুর্ঘটনা পরবর্তী স্পেশাল টার্স্ক ফোর্সের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যাবস্থার উন্নয়ন করা যেতে পারে। যার ফলে দোষী চালকদের পাকড়াও করা সহজ হবে এবং যান চলাচলের উপর নজরদারী বাড়ানো যাবে।
৩। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা ও অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদ করে যান চলাচলের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৪। হাইওয়েতে জরুরী ভিত্তিতে রোড ডিভাইডার দিতে হবে। প্রয়োজনে প্রধান প্রধান হাইওয়ে গুলোকে আরো প্রশস্ত করতে হবে।
৫। এক্সিডেন্ট এর জন্য দায়ী চালকদের লাইসেন্স বাতিল/স্থগিত করতে হবে। নতুন লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি সমমান হতে হবে। এছাড়াও লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রচলিত বিধিমালা কঠোরভাবে অনুসরন করতে হবে।
৬। প্রচলিত আইনের আওতায় দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কোন অবস্থাতেই দোষী ব্যক্তি যেন আইনের ফাক গলিয়ে বেরিয়ে আসতে না পারে সেদিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নজর দিতে হবে।
৭। কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে চালকদের সহমত ও সহিষ্ণতার চর্চা করাতে হবে। ওভারটেকিং প্রবনতা ও অতিরিক্ত গতি তোলার প্রবনতাকে পরিহার করতে হবে।
৮। ট্রাফিক পুলিশের উপর নির্ভরতা কমাতে হবে। এক্ষেত্রে কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করা যেতে পারে।
সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ স্বরুপ। দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলেছে। আমরা এর বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। কারন আমাদের দুরদর্শিতা ও সচেতনতার অভাব রয়েছে। ভঙ্গুর প্রশাসনিক কাঠামো ও অব্যবস্থাপনা আমাদের কে সমস্যার গভীরে হাবুডুবু খাওয়াচ্ছে। এ অবস্থার উত্তরন জরুরী। তাই আসুন আমরা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করি।
বিঃদ্রঃ যখন এই লেখাটা লিখছি ততক্ষনে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নয়জন সহ বার জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর ছাপা হয়েছে পত্রিকার পাতায়। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সকলের মাগফেরাত কামনা করছি।
আহমেদ ইউসুফ
ঢাকা ৩১ মে ২০১২ ইং
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!
হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ



ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন
মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।