আযানের দো‘আ:
َّﻢُﻬَّﻠﻟَﺍ َّﺏَﺭ ِﻩِﺬٰﻫ ِﺓَﻮْﻋَّﺪﻟﺍ ،ِﺔَّﻣﺎَّﺘﻟﺍ ِﺓَﻼَّﺼﻟﺍَﻭ ،ِﺔَﻤِﺋﺎَﻘْﻟﺍ ِﻥﺍًﺪَّﻤَﺤُﻣ ِﺕﺁ َﺔَﻠْﻴِﺳَﻮْﻟﺍ ،َﺔَﻠْﻴِﻀَﻔْﻟﺍَﻭ ُﻪْﺜَﻌْﺑﺍَﻭ ﺍًﺩْﻮُﻤْﺤَّﻣ ﺎًﻣﺎَﻘَﻣ ْﻯِﺬَّﻟﺍ ُﻪَﺗْﺪَﻋَﻭ -
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা রববা হা-যিহিদ দা‘ওয়াতিত তা-ম্মাহ, ওয়াছ ছলা-তিল ক্বা-য়েমাহ, আ-তে মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলাহ, ওয়াব‘আছ্হু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়া‘আদ্তাহ’ ।
.
অনুবাদ: হে আল্লাহ! (তাওহীদের) এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত ছালাতের তুমি প্রভু। মুহাম্মাদ (সঃ) -কে তুমি দান কর ‘অসীলা’ (নামক জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) ও মর্যাদা এবং পৌঁছে দাও তাঁকে প্রশংসিত স্থান ‘মাক্বামে মাহমূদে’ যার ওয়াদা তুমি তাঁকে করেছ’।
(সংগ্রহীত)
এই আযানের দোয়া শোনার পর এক হিন্দু ভাইয়ের প্রশ্নঃ নবী তো স্বয়ংসিদ্ধ মহাপূরুষ। তেনাকে তো কোন পাপ স্পর্শ করেননা। তাহলে তাঁর জন্য কেন আল্লাহর নিকট সুপারিশ করতে হবে? নবী আমাদেরকে সাফায়ত করবেন, নাকি আমরা নবীর জন্য আল্লাহর কাছে সাফায়ত করবো???
আমার উত্তরঃ
আমরা জানি মোহাম্মদ(সঃ) হলেন আল্লাহর প্রেরিত একজন শ্রেষ্ঠ রসুল এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তবে তার জন্য দোয়া কেন করছি আমরা সামান্য নগন্য, গুনাহগার মানুষরা?
এখানে আযানের দোয়াতে বা বিভিন্ন সময় আমরা রসুল(সঃ) এর প্রতি দরুদ বা আল্লাহর নিকট তার জন্য দোয়া করছি, করার অনেক কারন হতে পারে। যেমনঃ
১। আমরা যেন রসুল(সঃ)এর উপাসনা না করে সর্বশক্তিমান এক আল্লাহর উপাসনা করছি তাহা পরিস্কার করছি। (অন্যান্য ধর্মে যেরূপ ব্যক্তিকেই উপাসনা করা হয় সেরূপ যেন না হয়)
২। রসুল হোক বা নবী হোক বা যেই হোক, সকলেই আল্লাহ প্রদত্ত এবং তাদের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নাই আল্লাহ ব্যতিত, সর্বময় ক্ষমতা আল্লাহর। এটা স্বীকার করছি।
৩। কে বেহেস্ত যাবেন আর কে যাবেন না তাহা একমাত্র আল্লাহ নির্ধারন করবেন, বিচার দিবসের রায় একমাত্র আল্লাহর। এটাও স্বীকার করা এই দোয়ার আরেক অন্তর্নিহিত।
৪। আমরা সবসময় চাইবো আমাদের নেতা মোহাম্মদ(সঃ) যেন বেহেস্ত যায়। নেতা বেহেস্ত না গেলে তার অনুসারীদের বা শিষ্যদের বেহেস্ত যাবার কোন সম্ভাবনাই নাই। তাই দোয়াটা আসলে নিজের স্বার্থেই করা জরুরী।
৫। তার জন্য দোয়া করা (যাকে দরুদ পড়া বলা হয়) আল্লাহতায়ালা খুব পছন্দ করেন, তাই আল্লাহর পছন্দের ব্যক্তি হতে চাইলে তার জন্যও তবে অবশ্যই বেশী বেশী দোয়া করতে হবে।
৬। আল্লাহ তাকে বেহেস্তের সর্বচ্চ সম্মানিত স্থান দান করার ওয়াদা করেছেন- আমরা এটা আল্লাহকে সর্বদা বলে আমাদের নয়নের মনি, সর্বোচ্চ ভালবাসার ব্যক্তিটি যেন সম্মানিত হতে পারেন তার জন্য সুপারিশ করাও অন্যতম উদ্দেশ্য। ভালবাসার বহির্প্রকাশ স্বরূপ।
৭। রসুল(সঃ) তার উম্মতের জন্য কত কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আল্লাহর নিকট হতে কত কিছু আমাদের উম্মতদের জন্য আদায় করিয়ে নিয়েছেন এবং রোজ কিয়ামতের দিনেও কত কিছু করবেন, বিনিময়ে তার জন্য এটুকু দোয়া করা তো খুবই স্বাভাবিক এবং উচিত ( সামান্য কৃতজ্ঞতাস্বরূপ)।
৮। আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়া আল্লাহ খুব পছন্দ করেন এবং এটা একটা বিরাট নেকীর কাজ হিসেবে গন্য করা হয়। বেশী বেশী নেকী পেতে চাইলে বেশী বেশী দোয়া করা উচিত।
৯। আর আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন, তাকে রদ করা বা প্রতিহত করার সাধ্য কার আছে? তাই এই শংকা তো সর্বদাই থাকা স্বাভাবিক যে আল্লাহ ইচ্ছা করলে অন্যথা করতে পারেন।
১০। রসুল(সঃ) এর জন্য আর কিইবা আমাদের করার আছে, আল্লাহর কাছে দোয়া করা ব্যতিত?
ইত্যাদি আরো নানা কারন হয়তো রয়েছে। যারা এসব নিয়ে চর্চ্চা করেন তারা আরও ভালো বলতে পারবেন। আমার জ্ঞানের স্বল্পতার জন্য কোন ভূল হলে মাফ করবেন।
আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও মহান।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:২২