হে ঈমানদারগন, তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার। এটি গুটি কয়েকটি দিনের জন্য। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে অথবা ভ্রমনে থাকবে (তারা ব্যতিত), অন্য সময় সে তার রোজার সংখ্যা পুরন করে নিবে আর এটি যাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়, তারা তৎপরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। কেউ খুশির সাথে সৎকর্ম করলে তা তার জন্য কল্যানকর। আর যদি রোজা রাখ, তবে সেটা হবে তোমাদের জন্য অধিক কল্যানকর, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে পার। (সুরা বাকারাহ- আয়াত ১৮৩ ও ১৮৪)।
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন স্বয়ং বলেছেন এটা মানুষের জন্য কল্যানকর যতই কষ্টকর হোক। এতদিনে বিজ্ঞান এটা কেন মানুষের জন্য কল্যানকর তা আবিষ্কার করতে পেরেছে। সেই ব্যপারটা হলো প্রানীকোষের অটোফ্যাগি (Autophagy) বা আত্নভক্ষন (নিজে নিজেকেই খেয়ে ফেলা)।
যখন আমরা আমাদের শরীরকে নিদিষ্ট পরিমান খাদ্য না দেই অর্থ্যাৎ বাইরে থেকে যখন খাবার সাপ্লাই বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন শরীরের খাদ্য ঘাটতি হতে শুরু করে কিন্তু কোষগুলোর তো খাদ্য প্রয়োজন আর তারা চুপচাপ বসে থাকে না। তখন তারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, অসুস্থ, মৃত, অপ্রয়োজনীয় কোষগুলোকে পরিশোধন করে নিজেদের খাদ্য করে নেয়। ফলে আমাদের দেহের আবর্জনা তথা এই অসুস্থ ও মৃত কোষগুলি নির্মূল হয়ে যায় এবং শরীর হয় মৃত ও অসুস্থ কোষশুণ্য এবং আবর্জনামুক্ত। এই প্রক্রিয়া শরীরের ভিতরের সকল আবর্জনা পরিস্কার করে আমাদের শরীরকে অনেক প্রকার রোগ থেকে রক্ষা করে বিধায় ইহা একটি অতি উত্তম পদ্ধতি শরীরকে নিরোগ রাখার। অটোফ্যাগি ব্যপারটা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে জাপানের বিজ্ঞানী ওশিনরী ওসুমী (Yoshinori Ohsumi) নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন ২০১৬ সালে।
বিশেষ করে এ্ই অটোফ্যাগী বেশী উপযোগী বৃদ্ধদের জন্য কারন তাদের শরীরের অসুস্থ, মৃত ও অপ্রয়োজনীয় কোষ বেশী হয় এবং এর ফলে হতে পারে ক্যান্সার বা পার্কিনসন্স ডিজিজ বা স্মৃতিভ্রংশসহ নানা জটিল রোগ। কিন্তু বেশীরভাগ বৃদ্ধরাই রোজা রাখেন না অসুস্থ হবার ভয়ে। এটা ভুল। বরং চেষ্টা করা উচিত রোজা রাখতে একটু কষ্ট হলেও।
আমরা এটা জানতাম না কিন্তু যে এর কারিগর সে ঠিকই জানত বলে রোজাকে সকল সময় অবশ্য পালনীয় করেছেন সকল মানুষের জন্য।
তাই যত কষ্টই হোক রমজান মাসে রোজা রাখুন এবং মাঝে মাঝে সুন্নত বা নফল রোজা করুন। এতে আপনি উপকৃত হবেন নিশ্চিত। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ৮:৫২