মানুষ সৃষ্টি কর্তার শ্রেষ্ঠ জীব। আর এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- সে চিন্তা করতে পারে। মানুষকে দেয়া হয়েছে অতি উন্নত বিবেক বুদ্ধি। যা পরিমাপ করা অসম্ভব ধরণের।
নানাবিধ কারণে মানুষ তার বিবেক-বুদ্ধি, চিন্তা-চেতনা কাজে লাগাতে পারে না। আল্লাহ্ তা’লা তার একেক বান্দাকে একেক ভাবে রাখতে পছন্দ করে এবং ঐ হালতে তাকে পরীক্ষা করেন।
একজন চিন্তাশীল মানুষ একটা সময়ে চিন্তা করে, তার মেধা বর্তমানে কোন অবস্থায় আছে এবং সে কতটুকু সফলতা অর্জন করেছে। অনেকেরই ভালো মেধা রয়েছে। মেহনত করে ঐ মেধাকে কাজের উপযোগী হিসেবে তৈরি করতে হয়। অনেকেই এ কাজে ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতা এই জন্যই আসে যে, সে মেহনত করতে রাজি নয়। অথচ মেহনত করলেই তার মেধা ও চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করার উপযোগী হতোই। যদিও সে মেধা প্রয়োগের দ্বারা সফলতা না আসে।
মানুষের একটা সমস্যা হলো সে, পরিণতির দিকে লক্ষ্য করে। যদি তার মেহনতের দ্বারা সফলতা আসে তবে সে সন্তুষ্ট হয়ে যায় এবং তার মেহনতকে যথেষ্ট সার্থক মনে করে।
পক্ষান্তরে, যদি তার সফলতা না আসে, তবে সে যদিও অত্যাধিক মেহনত করতে থাকে, তখন সে তার মেহনতকে বৃথা ভাবে এবং মনে করে তার মেহনত যথেষ্ট ও যথাযথ হয়নি, যার দরুন সফলতা অর্জন করতে পারলো না।
মানুষ একটা বয়স থেকে সে তার পরিণতির দিকে লক্ষ্য করে। তার আর্থিক অবস্থা, নিচের দিকের হলে সে মানসিক ভাবে দূর্বল হতে থাকে। এছাড়া তার জীবনের সব কর্মকাণ্ডের হিসাব করে দেখে, সফলতা এবং ব্যর্থতা কতটুকু আসলো। যদি ব্যর্থতা বেশি হয়, তবে সে মানসিক ভাবে দুর্বল হতে থাকে। তার চিন্তা-চেতনা সংকীর্ণ হয়ে যায়। তার সংকীর্ণ মন তাকে অসহায় করে তোলে। অথচ সে মানসিক ভাবে সবল ছিলো। সে নিজেকে বড়ই অসহায় ভাবে। তার এই সংকীর্ণ মনোভাব তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে। সে তার থেকে উপরের স্তরের লোকদের কাছে নিজেকে অসহায় ভাবে। এর ফলে সে, মানুষের স্বাভাবিক কথাবার্তা, আচার-ব্যবহারকে ভাবে; তারা অহংকারী। সাধারণ ধরনের রসিকতা তারা সহ্য করতে পারে না। ভাবে, তার অসহায়ত্ব দেখে লোকেরা পরিহাস করছে। প্রত্যেক সাধারণ ও স্বাভাবিক কথাবার্তাকেই মনে করে, তাকে বুঝি অপমান ও হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকে বাহ্যিক ভাবে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে না।
তখন সে একটা মজার কাজ করে, সেটা হচ্ছে- সে ধনী ও ক্ষমতাশালী অথবা তার চেয়ে উচ্চ শ্রেণীর লোকদের সাথে খুব দাপট নিয়ে কথা বলে। খুব অহংকারী ভাবে নিজেকে অপরের নিকট পেশ করার অপচেষ্টা করে। যাকে বলা যায় “শাক দিয়ে মাছ ঢাকা’’। সে যে অবস্থানে আছে, সেই অবস্থান থেকে অনেক উচ্চ স্থানের কথা বলে। এই ভাবে সে তার মানসিক সংকীর্ণতা ও অসহায় অবস্থাকে দূর করতে চায়। প্রকৃত পক্ষে এটা একটা অনর্থক প্রচেষ্টার বহিঃ প্রকাশ। বরং এতে করে সে তার মেধাকে বনসাই করে ফেলছে। এবং তার সংকীর্ণ মনোভাব তাকে আরও সংকীর্ণ করে ফেলবে। এই সংকীর্ণতা এক অতি ভয়াবহ মনোভাবের জন্ম দেয়। আর তা হচ্ছে- “হিংসা”।
সে তার থেকে উঁচু স্তরের লোকদের প্রচণ্ড পরিমানে হিংসা করতে থাকে। সে যদি তার অতি প্রিয়জনও হয়, তার ক্ষেত্রেও হিংসা হয়। বরং এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কাছের এবং অতি প্রিয় লোকদের প্রতি হিংসার মাত্রা আশংকাজনক ভাবে বেশী। প্রিয় জনের অত্যন্ত স্বাভাবিক শাসনকে সে মনে করে, তাকে বুঝি অপমান করছে। তার দোষ সংশোধনের উদ্দেশ্যে কোন পরামর্শ বা উপদেশ বা আলোচনা করলে সে ভাবে তাকে হেয় করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় সে আরেকটি বাজে ভুল করে বসে, তা হল- উক্ত ব্যক্তিকে সে উল্টা পাল্টা কথা বলা শুরু করে। অযুক্তিক অভিযোগ অন্যর উপর চাপানোর চেষ্টা করে। মিথ্যা কথার আশ্রয় নেয়। হাস্যকর হচ্ছে, তাকে যে সমস্ত কথা মানুষ শুনাবে, উল্টা সেই সব কথা মানুষকে শুনিয়ে দেয় ( কারন এতদিনে তার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে যে তার দুর্বলতা কি এবং লোকেরা তাকে কি কি বলতে পারে) । সে সব ধরণের স্বাভাবিক কথাবার্তা ও কার্যক্রমকে ‘তার সংকীর্ণ মনোভাব’ ‘অপমান ও হেয়’ হিসাবে গ্রহণ করায়। যাকে আমরা বলি ‘Divert/ডাইভাট্’ করা। প্রতিটা কথাই সে ‘ডাইভাট্’ করে (কথা ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে) ফেলে। ইহা ভয়াবহ মানসিক ব্যাধি।
এই লেখাটি অসমাপ্ত এবং অনেকটা অগোছালো। ইহাতে সংযোজন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন হবে, ইন্শা-আল্লাহ্। এই বিষয়ে বিস্তারিত এবং ব্যাপক তথ্য থাকা সত্ত্বেও লিখতে পারছি না। লেখালেখি করা বড়ই কঠিন।
এই প্রসঙ্গে আরও কিছু একটা কাগজে লিখে ছিলাম এবং উক্ত কাগজ মানিব্যাগে রেখেছিলাম। কিন্তু সেই মানিব্যাগ আমার নিকট আর
নেই.....
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:০৪