নেতৃবৃন্দ তাকে সহানুভূতি জানান কোন সাহায্যের প্রতিশ্রুতি ছাড়া। তার গাড়ি, পিএস’এর গাড়ি কে নিবেন তাও নির্ধারিত হয়ে যায় যমুনা ব্রিজে আটকে থাকা অবস্হায়। প্রতিমন্ত্রী সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে যান। সাথে থাকেন শুধু একজন নারী নেত্রী।
রাজনীতিবিদদের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব, সামান্য বিষয়ে মিথ্যাচারিতা আমাদের কুটিল রাজনীতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে- যেখানে স্বার্থের আঘাতে যে কেউ বলি হতে পারে। নির্বাহী বিভাগের অন্দরমহল সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের এনডিসি, ডিসি থেকে সচিবালয়ের উপসচিব, সচিব চরিত্রগুলো খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।
উপন্যাসের নারী চরিত্রগুলোকে প্রায় ক্ষেত্রেই নেতিবাচক মনে হয়েছে। চাকরী পেতে ডেসপারেট ড. ফারজানা, উচ্চাভিলাষী সরকারি কর্মকর্তা তন্দ্রা দেওয়ান, মন্ত্রীর শ্যালিকা আইরিন- প্রত্যেকে সুযোগসন্ধানী। শুধুমাত্র নেত্রী সাকিনা মাহতাব’এর প্রতি পাঠকদের দৃষ্টি আলাদাভাবে আকৃষ্ট হবে তার ব্যক্তিগত অসুস্হতার কারণে। লেখক হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করেছেন যাতে নারী সম্পর্কে পাঠকরা বিরাগ না হোন
মূল চরিত্র মোল্লা আফজাল’কে মানসিকভাবে অত্যন্ত স্ট্রং মনে হয়েছে। আপন ভাইকে খুন করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ভোটারদের সহানুভূতি আদায়, মন্ত্রীত্বকালীন সময়ে সিনিয়র সহকর্মীদের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা, বিরোধীদলকে সাথে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন ঘটানোর চমক, দাম্পত্য জীবনের জটিলতা, স্ত্রীর একসময়ের প্রণয়প্রার্থীকে এপিএস হিসেবে নিয়োগ, নারীপ্রীতি ইত্যাদি সবমিলিয়ে ধূর্ত একটি চরিত্র লেখক পোর্ট্রে করলেও আলটিমেটলি এই সময়ের নষ্ট রাজনীতির রক্তমাংশের মানুষ হিসেবেই পাঠকের কাছে চরিত্রটি চিত্রিত হবে। ক্ষমতাহীন মোল্লা আফজালের অসহায়ত্বও পাঠককে স্পর্শ করবে। তবে বলা হয়েছে- ক্ষমতা বার বার ফিরে আসে। অতএব মোল্লা আফজালের ক্ষমতায় ফিরে আসার বিষয়ে পাঠক অপেক্ষা করতেই পারেন
সব মিলিয়ে আন্দালিব রাশদী ’র উপন্যাস “প্রতিমন্ত্রী” একটি জমজমাট ও সুখপাঠ্য উপন্যাস- যা এবারের প্রথম আলো ঈদ সংখ্যায় ছাপা হয়েছে। আগ্রহী পাঠকরা পড়ে দেখতে পারেন।
কৈফিয়ত: এটা কোন লেখার রিভিউ বা সমালোচনা নয়। অনেকদিন পর একটি উপন্যাস পড়ে খুব ভালো লেগেছে বিধায় মনে হয়েছে পাঠকদের সাথে শেয়ার করি। তাই চেষ্টা নিয়েছি পাঠকরা যাতে আগ্রহী হয়। নাথিং এলস
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ রাত ৮:০০