০১. এই মন তোমাকে দিলাম-সাবিনা ইয়াসমিন, গীতিকার-গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুরকার-আনোয়ার পারভেজ। ‘মানসী’ ছবির জন্য ২০ জন যন্ত্রশিল্পী নিয়ে শ্রুতি রেকর্ডিং স্টুডিওতে ৩ সিটিংয়ে গানটি রেকর্ড করা হয়েছিল। গানটির সুর শুনে মুগ্ধ হয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বলেছিলেন ‘গানটি শ্রোতাদের মাঝে প্রচুর সাড়া ফেলবে’। ভয়েজ দিতে কোন বেগ পেতে হয়নি শিল্পীকে। সিনেমা মুক্তির পর গানটি শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়।
০২. একটা ছিল সোনার কন্যা-সুবীর নন্দী, গীতিকার-হুমায়ূন আহমেদ, সুরকার-মকসুদ জামিল। হুমায়ুন আহমেদ গান লিখে মকসুদ জামিলকে বললেন তিনি গানটা সুবীর নন্দীকে দিয়ে গাওয়াতে চান। হুমায়ুন আহমেদের কথামতো সাসটেইন স্টুডিওতে গানের মুখটা সুর করার পর হাজির হন সুবীর নন্দী। রেকর্ড হয়। পরে গানটি ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিতে ব্যবহার করা হয়।
০৩. ফেরারী মন-আইয়ুব বাচ্চু, গীতিকার ও সুরকার- আইয়ুব বাচ্চু। আইয়ুব বাচ্চুর সাথে তাঁর স্ত্রীর তখনো বিয়ে হয়নি। বেশ কিছুদিন প্রেমিকার সাথে দেখা না হওয়ার কারণে বাচ্চুর মন খারাপ। কাগজ কলম নিয়ে চিঠি লিখতে বসলেন। চিঠি লেখার পরিবর্তে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গান তৈরি হয়ে এই গেল।
০৪. মন শুধু মন ছুঁয়েছে-শ্রাবন্তী মজুমদার, গীতিকার ও সুরকার-নকীব খান। বড়ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে চট্টগ্রামে গানটি তৈরী করেন নকীব খান ১৯৭৮ সালে। ১৯৮১ সালে সুপার সোলস এ্যালবামে তপন চৌধুরী গানটি গান। পরবর্তীতে কলকাতার শ্রাবন্তী মজুমদার গানটি রেকর্ড করেন।
০৫. আমার সারাদেহ খেয়োগো মাটি-এন্ড্রু কিশোর, গীতিকার ও সুরকার-আহমেদ ইমতয়াজ বুলবুল। ‘নয়নের আলো’ ছবির প্রযোজক শর্ত দিয়েছিলেন প্রথম গান শুনিয়ে তাঁকে মুগ্ধ করতে হবে। সে অনুযায়ী বুলবুল ২৭ টি গান লিখে এবং সুর করে ৫টি গান চূড়ান্ত করেন। রেকর্ড করান এন্ড্রুকে দিয়ে। গান শুনার পর উপস্হিত অনেকে কেঁদে ফেলেছিলেন। প্রযোজক ফরিদ কান্নাভেজা কন্ঠে বুলবুলকে বুকে জড়িয়ে বলেছিলেন ‘তুমি পাশ’।
০৬. তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে-কুমার বিশ্বজিৎ, গীতিকার-আবদুল্লাহ আল মামুন, সুরকার-নকীব খান। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রামে গানটি তৈরি হয়। তরুণ মামুন তখন কবিতা লিখতেন, তরুণ নকীব নতুন সুর করছেন। নতুন প্রেমে পড়া, ভালোলাগা, ভালোবাসা, আবেগ এই গানে ফুটে উঠেছে। বিটিভিতে প্রথম প্রচার হয় ১৯৮২ সালে। পরে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের বিশ্বজিৎয়ের এ্যালবামে গানটি রাখা হয়।
০৭. কেন এই নিঃসঙ্গতা-পার্থ বড়ুয়া, গীতিকার-কবির বকুল, সুরকার- পার্থ বড়ুয়া। বিটিভির গীতি বিচিত্রায় ডাক পড়ে সোলসের। তখন সোলসের সংগ্রহে কোন গান নেই। কবির বকুলকে সাথে নিয়ে ভোর চারটা পর্যন্ত সুরের রকমফের আর কাটাকাটি করে তৈরি হয়ে যায় ভালোলাগার এই গানটি।
০৮. পরী-বাপ্পা মজুমদার, গীতিকার-রানা, সুরকার- বাপ্পা মজুমদার। ‘ধুলোপড়া চিঠি’ এ্যালবামের সব গান তৈরি শেষ। একটিমাত্র গান বাকী। গিটার নিয়ে টুংটাং করতে করতে সুর তৈরি করে নেন বাপ্পা। মিউজিকম্যান স্টুডিওতে রেকর্ড হয়। শ্রোতারা খুব ভালোভাবে গানটি নিয়ে নেয়।
০৯. যায় দিন-এস আই টুটুল, গীতিকার-কবির বকুল, সুরকার- এস আই টুটুল। ‘হৃদয়ের কথা’ ছবির প্রযোজক-নায়ক রিয়াজ কলিজা ছিঁড়া গান তৈরি করতে বলেন টুটুলকে। একসময় সুর তৈরি করতে না পেরে টুটুল ভেবেছিলেন গান আর হবে না। হঠাৎ করে সুর পেয়ে যান টুটুল। গান শুনে পরিচালক, নায়ক সবাই বলেছিলেন কলিজা ছিঁড়া গানই হয়েছে।
১০. ভালোবাসবো বাসবো রে বন্ধু-হাবিব ওয়াহিদ, গীতিকার-প্রদীপ, সুরকার- হাবিব ওয়াহিদ। প্রদীপের দেয়া গীতিকবিতা নিয়ে শুরু হয় হাবিবের সুর তৈরি করা। বাবা ফেরদৌস ওয়াহিদ পরামর্শ দিয়েছিলেন সফট মেলো রোমান্টিক ধারার গান করতে। ফোকের প্রতি দুর্বলতা থাকার কারণে গানে ফোক সুরের ছোঁয়া মিশিয়ে দেন হাবিব। ২৫ দিন পর তৈরি হয় ট্র্যাক। তারপর হাবিব ভয়েজ দেন।
-------------------------------------------------------------------------
তথ্যসূত্র: পাক্ষিক আনন্দধারা (২১৬), ঈদ সংখ্যা ২০০৭
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৩