মুভির নামঃ Invictus 2009
http://www.imdb.com/title/tt1057500/
"I am the master of my fate
I am the captain of my soul"
নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিয়ে সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত একটি অসাধারন মুভি। নেলসন ম্যান্ডেলা সম্পর্কে প্রথমে একটু নিজের অনুভূতি জানাতে চাই। সমসাময়িক পৃথিবীতে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে আপনার সব থেকে পছন্দের নেতা কে তবে মনের অজান্তেই তার নাম চলে আসে। তিনি এমনই একজন ব্যক্তিত্ব যাকে নিয়ে খুব সম্ভবত তার শত্রুরাও কোন অভিযোগ করার সুযোগ পায়না। সেটা কেন পায়না?? পায়না তার মহানুভবতার কারনে। তিনি যে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পৃথিবীতে তার উদাহরন আসলে অপ্রতুল। এমন মহানুভবতার দৃষ্টান্ত আমরা শুধু নিজস্ব ধর্মীয় বইগুলোতেই খুজে পাই। যাদের কারনে ২৭ টি বছর জেল খেটেছেন, জেল থেকে বেরিয়ে তাদেরকে নিয়েই নতুন করে জাতিগঠন প্রক্রিয়া। জেলে থাকাকালীন অবস্থায় চুনাপাথর ভাঙ্গার কাজ করেছেন। মুভির কাস্টিং নিয়ে বলতে গেলে বলতে হয় নেলসন ম্যান্ডেলা চরিত্রে এই মুভিতে অভিনয় করেছেন #মরগ্যান ফ্রিম্যান। কাকতালীয় বিষয় হচ্ছে নেলসন ম্যান্ডেলা আর মরগ্যান ফ্রিম্যানের চেহারা প্রায় সেইম। পারফেক্ট কাস্টিং। মরগ্যান ফ্রিম্যানের যে মনভোলানো অভিনয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
যাই হোক এবার মুভির প্লটের দিকে নজর দেই। ১৯৯৪ সালে ২৭ বছর পরে জেল থেকে বেরিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। সময় মোটেই ভাল ছিলনা আফ্রিকাবাসীর জন্য। পুরো দেশ আগে থেকেই দুইভাগে বিভক্ত ছিল। কালো আর সাদার লড়াই আফ্রিকার প্রাগৈতিহাসিক আমলের সমস্যা। যা মুলত একটি জাতিগঠন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধাই নয় হুমকিও বটে। নেলসন ম্যান্ডেলার ২৭ বছরের কারাবরন সেই কালো সাদাদের দ্বন্ধেরই ফল বৈকি। নেলসন ম্যান্ডেলা ঠিক সেই জিনিসটাই ধরতে পেরেছিলেন। তাই তিনি জেল থেকে বেরিয়ে নতুন করে যে প্রক্রিয়ায় জাতি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেন তার নাম ছিল #রিকনসিলিয়েশন বা পুনর্মিলন। তিনি যে জাতি তত্বের পুরোধা তার নাম ছিল “রেইনবো ন্যাশন”। তিনি বিশ্বাস করতেন কে কালো কে সাদা তা বিবেচনা করার সময় এখন নয়। তাই তিনি সর্বোচ্চ চেস্টা করেছিলেন আফ্রিকা থেকে কি করে জাতিবিদ্বেষ দূর করা যায়। সেই লক্ষ্য নিয়েই তিনি রিকন্সিলিয়েশন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে একজন কালোদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবার পরেও একজন সাদা চামড়ার মানুষকেও আফ্রিকার কোন পদ থেকে পদচ্যুত করেননি। বরং মুভির মধ্যে আরও দেখা যায় তিনি তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে সাদাদের নিয়োগ দেন। এই ধরনের ঘটনা আফ্রিকার ইতিহাসে শুধু বিরল ছিলনা অবিশ্বাসও বটে। তিনি সবসময় চিন্তা করতেন কিভাবে আফ্রিকার সকল মানুষকে জাতিগত বিদ্বেষ ভুলিয়ে এক মঞ্চে আনা যায় এবং জাতীয় সংহতি অর্জন করা যায়। তারই অংশ হিসেবে তিনি “Springboks” আফ্রিকার জাতীয় রাগবি দলকে সমর্থন দিলেন এবং দলটিকে পুনর্গঠন করে কিভাবে আসন্ন রাগবি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন বানানো যায় তার প্রতি জোড় দিলেন। যার হোস্ট ছিল দক্ষিন আফ্রিকা। “Springboks” মুলত ছিল সাদাদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল যেটি কালোদের পক্ষ থেকে বাতিলের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু নেলসন ম্যান্ডেলা তা করেননি। তিনি বরং এই রাগবি দলকে কিভাবে বিশ্বকাপ জিতানো যায় তার জন্য দলের ক্যাপ্টেন Francois Pienaar (ম্যাট ড্যামন) সহ সকল খেলোয়ারদের পুরোদমে অনুপ্রেরনা যুগিয়ে যান। এখানেই মুভির মূল রহস্য তিনি অনুপ্রেরনা দিতে গিয়ে নিজে কিভাবে ২৭ টি বছর জেলে থেকে অনুপ্রেরনা লাভ করেছিলেন তার বর্ণনা দেন ম্যাট ড্যামনের কাছে। একটি দেশের প্রেসিডেন্ট রাগবি দলের সকলের নাম কিভাবে মনে রেখে তাদের সকলের খোজ খবর নিতে পারেন তা আসলেই অবিশ্বাস্য মনে হয়। এবং তিনি তার প্রচেষ্টায় সফলও হন শুধুমাত্র এই রাগবি খেলার উপলক্ষে তিনি সমগ্র জাতিকে এক মঞ্চে দাড় করাতে পেরেছিলেন যা জাতিগতবিদ্বেষ ভুলে জাতীয় সংহতি প্রতিষ্ঠা করেছিল।
এইকারনেই ম্যান্ডেলা অন্য দশটা নেতা থেকে ভিন্ন যিনি ভিন্ন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছিলেন।
“তাই বলতেই হয়, নেতা অনেক হয়, কিন্তু কেউই ম্যান্ডেলা নয়”
Invictus আসলে একটি কবিতার নাম। এই কবিতা থেকে অনুপ্রেরনা লাভ করেই ম্যান্ডেলা কারাগারে ২৭ টি বছর পার করেছিলেন।
“INVICTUS”
Out of the night that covers me,
Black as the Pit from pole to pole,
I thank whatever gods may be
For my unconquerable soul.
In the fell clutch of circumstance
I have not winced nor cried aloud.
Under the bludgeonings of chance
My head is bloody, but unbowed.
Beyond this place of wrath and tears
Looms but the Horror of the shade,
And yet the menace of the years
Finds, and shall find, me unafraid.
It matters not how strait the gate,
How charged with punishments the scroll.
I am the master of my fate:
I am the captain of my soul.