প্রত্যেক বছরই গ্রীষ্মকালে গ্রামের বাড়ি থাকতাম। স্কুলে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিয়াই মামা বা নানার সাথে চলে যেতাম গ্রামে। আম্মু নাই তাই শাসনও নাই। সকালে ঘুম থেকে উঠতাম ১১টায়। সবাই একটু রাগ করত ফজরের নামাজ পড়তে পারতাম না বলে। কিন্তু মুখে তা কেউ বলত না। মুখ ধুয়ে নাস্তা করতে করতে বেজে যেত ১২টা। তারপরই মামাদের কাছে চলে যেতাম। একসাখে ঘুরে বেড়াতাম আর আর কার কার কোন গাছে কতটা আম আছে মনে মনে লিষ্ট করতাম। আর দিনের বেলায় চুরি করে খেতাম ডাব।
.
একবারের ঘটনা
আমি মামা আর মামার ২ বন্ধু ছিল। কেউ ডাব গাছে উঠতে পারে না। তারা কেউ ডাব গাছে উঠতে পারে না। তারপর গেখি মামার এক ছোট ভাই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। মামাকে বল্ল ভাই কি করেন?
মামা--ডাব খাব। কিন্তু গাছে উঠতে পারি না। তুই পারস?
--জি ভাই পারি। কিন্তু গাছ কার?
মামা--আমাদের। তোর কোন টেনশন নাই, তুই গাছে উঠ।
শেষে ছেলাটা মামার মিছা কথারে বিশ্বাস কইরা গাছে উইঠা ডাব পাড়ল। সবাই ডাব খাইলাম।
.
দিনের টার্গেট করা গাছে আক্রমন করতাম রাতে। মামা মামার বাহিনী (বন্ধু) নিয়ে আসত। গাছের নিচে বিভিন্ন দিক থেকে মামার বন্ধুরা টর্চের আলো ফেলতো আর উপরে কয়েকজন গাছের সব আম পাড়ত, আম একটা নিচে ফেল্লেই নিচে শুরু হয়ে যেত আম কাটা, লবন মরিচ লাগানো ও মাখানো। তারপর সবাই একত্রে শুরু হত ভোজ। এত আম খেতাম যে রাতে ভাত খেতে হত না।
.
.
আজ সেই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ছে। কারন এবার বাড়ি যেতে পারি নাই। বাসায় প্রতিদিনই আমু আম বানায়। কিন্তু আমি খাই না। কারন ভালো লাগে না। কয়েকদিন পর ঢাকা আসবো, ইচ্ছা আছে ঢাকায় থেকে যাওয়া হয়ত আর কবে বাড়ি যাব তাও যানি না। মামাও স্টুডেন্ট ভিসা নিয়া লনডন গেলো জানুয়ারিতে। পুরোনো দিনগুলো এখন শুধুই স্রিতি, হয়ত দিনগুলো এভাবেই চলে যাবে।