মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর বিতর্কিত সিনেমা " ডুব " ( NO BED OF ROSES ।
39'th Moscow International Film Festival এর মাধ্যমে ছবিটি
আজকে দেখার সুযোগ হয়েছিলো ।
বই বা সিনেমা নিয়ে রিভিউ লেখার মত সাহস এখনো হয় নি । এই জন্য এটাকে আমি নিজস্ব মতামত হিসেবে বলতে পারি ।
মতামত , ফারুকীর বিগত প্রত্যেকটি মুভির কিছু শিক্ষনীয় দিক এবং জটিল কোন সমস্যা সমাধানের মধ্য দিয়ে সমাধান করেন । তবে , নিঃসন্দেহে ফারুকীর মত মেধাবী নির্মাতা বাংলাদেশের চলচিত্রে এখনো আশার প্রদীপ । তার প্রমান আমরা ব্যাচেলর মুভির মধ্য দিয়ে পেয়েছি । তার পর থেকে একের পর এক অসাধারন কিছু কাজ উপহার দিয়ে গেছেন ।
ডুব সিনেমার প্রধান বির্তকিত হওয়ার কারন , এটিকে অনেকে কথা সাহিত্যিক হুমায়ন আহমেদের বায়োপিক হিসেবে ধারনা করছেন । ব্যাপারটা আজকে আমার কাছে বেশ পরিষ্কার । বলিউড খ্যাত অভিনেতা ইরফান খান অভিনয় করেন জাভেদ হাসান নামে । যিনি একজন বিখ্যাত সেলিব্রেটি হিসেবে তুলে ধরেছেন তবে তিনি কি হিসেবে সেলিব্রেটি সেটি উঠে আসে নি । তবে সিনেমার বেশ কিছু অংশে তাকে পাবলিক সেলিব্রেটি হিসেবে দেখানো হয় এবং বেশ কয়েক জনকে অটোগ্রাফ দিতেও দেখা যায় । তিশা , তিশাকে এই সিনেমায় সাবেরি নামে দেখা যায় এবং সাবেরি, জাভেদ হাসানের মেয়ে হিসেবে দেখানো হয় । কিন্তু , কয়টি বা কত নাম্বার মেয়ে এই সমস্ত কিছু দেখা যায় নি । তবে , ইরফান খান এবং তিশার বাবা মেয়ের অভিনয় ছিলো মুগ্ধ হওয়ার মত । ইরফান খানের বাংলার বলার ধারন দেখে মনে হয় তিনি বেশ ভালো বাংলা জানেন যদিও তাকে মাঝে মাঝে ইংরেজীতে কথা বলতে দেখা গিয়েছিলো । জাভেদ হাসান মুভি নির্মান করেন । তার মুভিতে নিতু নামে এক নায়িকা কাজ করে । যে কিনা সাবেরির স্কুল জীবনের বান্ধবী ছিলো । এবং স্কুল জীবনে নিতু এবং সাবেরির প্রায় কম্পেটিশন লেগেই থাকত । ওহ ! নিতু নামে অভিনয় করেন ভারতীয় অভিনেত্রী পর্নো মিত্রা । নিতু , জাভেদ হাসানের একটি মুভিতে কাজ করেন । কিন্তু , হঠাৎ একদিন মিডিয়াতে প্রচার হলো , জাভেদ সাহেবের মুভি থেক সরে দাঁড়ালেন নিতু এবং এই নিয়ে জাভেদ সাহের পরিবারে জটিলতা । জাভেদ সাহেবের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন রোকেয়া প্রাচী । তিনি ব্যাপারটি চিন্তা করেন এবং সত্যতা প্রমানের ভিত্তিতে এক পর্যায়ে ডিভোর্সের সিদান্ত নেন ।
জাভেদ হাসানের স্ত্রী একটি কোচিং সেন্টারে ইংরেজী শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করতেন । জাভেদ হাসানের স্ত্রী সাবেরি এবং একমাত্র ছেলে আবির কে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন । আবির , একটি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ছে ।
এইদিকে এই বয়সে ডিভোর্স নিয়ে জাভেদ হাসানের মনে বেশ দাগ কেটে যায় । আবিরের স্কুলের সামনে গিয়ে দাঁড়িতে থাকে । সাবেরির জন্য বারবার গিফট নিয়ে গেলেও বারবার সাবেরি ফিরিয়ে দেয় । এই পরিস্থিতিতে নিতু , জাভেদ হাসানের সাথে দেখা করতে রাতের আঁধারেও দেখা যায় । কিছুদিন পর জাভেদ সাহেব নিতুকে বিয়ে করে । এবং নিতু সবকিছু নিজের মত করে সংসার শুরু করে । পুরান দারোয়ান ও চেঞ্জ করে ফেলে ।
কিছুদিন পর অজানা কারনে জাভেদ হাসানের মৃত্যু হয় । জাভেদ হাসানের স্ত্রীর কাছে ফোন করে ব্যাপারটি যখন বলা হয় তার কোন প্রতিক্রিয়া করতে দেখা যায় নি । এবং তিনি নাস্তার টেবিলে বসে সাবেরি এবং আবির কে তাদের বাবার মৃত্যুর কথা বলেন । জাভেদ হাসানকে দেখতে শুধু সাবেরি এবং আবির গিয়েছিলো । জাভেদ হাসানের স্ত্রী যায় নি ।
জাভেদ হাসানের দাফন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় । নিতু চাচ্ছে জাভেদ সাহেবের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কাঁঠাল তলার দিতে । সাবেরি এবং তার চাচাদের কিছুই করার ছিলো না কারণ , আইনগত ভাবে নিতু এখন জাভেদ সাহেবের স্ত্রী ।
হুমায়ন আহমেদ কতটা জনপ্রিয় লেখক সেটার কারো বলার অপেক্ষা রাখে না । তার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গল্পে তার ব্যাক্তিগত জীবনের কাহিনী উঠে এসেছিলো । সেটা আমি , আপনি সবাই মোটামোটি জানি । কিন্তু , ৫০ বছর বয়সে হুমায়ন আহমেদের আবার জন্ম হয়েছিলো এটা কি কখনো কেউ বুঝতে পেরেছে ?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯