যুগ যুগ ধরেই Negotiation খুব গুরুত্ব পেয়েছে, এবং এখন তা আরও বেশি পাচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে আরও পাবে। কারণ পৃথিবীতে সম্পদ যত কমে আসবে, আর মানুষের মধ্যে চাহিদাও বাড়বে। তাই সবাই নিজের দিকটা অনেক বেশি দেখবে। সেক্ষেত্রে Win-Win Situation তৈরী করতে হলে অবশ্যই খুব ভাল Negotiator হতে হবে।
Negotiation এ কথা জানা যেমন জরুরী, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ আরেকটা দিক হল Body Language . আর এটাই Non-verbal language.
Job Interview ও একটা Negotiation। তাই এক্ষেত্রে কিভাবে Non-verbal language properly প্রয়োগ করতে হবে ,আজকে এই ব্যাপারটা নিয়ে আলাপ করব।
ছোটবেলা থেকে আমাদের সবাইকেই শেখানো হয় কারো দিকে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকানো টা ভদ্রকাজ নয়। কিন্তু Negotiation এ এ ব্যাপারটি কমবেশি করতে হয়। কারণ Negotiation এ প্রথম যে ব্যাপারটা ঘটে তা হল-
- সৌজন্যমূলক পরিচয়
- তারপর ধীরে ধীরে কথায় আসা
এখানে প্রথমে যে ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে তা হল- অপরপক্ষের বক্তার সৌজন্যমূলক কথা-বার্তার পর হঠাৎ করে কথার Tone এ কোন পরিবর্তন আসে কিনা। এ থেকে তার কথার মধ্যে কতটুকু সত্য বলার প্রবণতা আছে, কতটুকু জোর করে একটি ব্যাপার চাপিয়ে দেবার প্রবণতা আছে বুঝা যায়।
যেমন- কোন একজন ব্যক্তি আপনার সাথে আলোচনার টেবিলে বলল- কোন একটি পণ্যের ক্ষেত্রে তাদের অফারটি বাজারে সেরা এবং কথাটি সে বলল খুব জোর দিয়ে Loud Voice এ। তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যে ব্যাপারটি ঘটবে তা হলে আসলে “He has little to offer” . প্রকৃতই যে ভাল, সে জোর গলায় কথা বলবে না, বরং Confidently কথা বলবে, প্রমাণও দেখাবে।
তাই আলোচনার টেবিলে শুধু পেপার এর দিকে তাকিয়ে না থেকে অপরপক্ষের হাব ভাব বোঝাটা জরুরী।
এরকম কয়েকটি ব্যাপার এখন আমরা দেখব।
১। Proxemics
যেকোন আলোচনাতে একজন থেকে আরেকজনের দূরত্বকেই Proxemics বলা হয়। এটা দেশ থেকে দেশে কিংবা ভিন্ন ভিন্ন কালচারের উপর নির্ভর করে। আমেরিকাতে ব্যাপারটা এরকম-
0-18 inches is intimate space reserved for family and close friends
• 18 inches to 4 feet is personal space used in most interpersonal interactions
• 4-12 feet is social-consultative space used in more formal interactions
২। Appearance
যেকোন ব্যাপারেই পোষাক অনেক গুরুত্বপূর্ন। তাই আলোচনার টেবিলে আপনি নিজে কিংবা অপরপক্ষ কিরকম পোষাক পরেছে নজর রাখুন। কারণ পোষাক থেকেই বোঝা যায় এই আলোচনাতে কার আন্তরিকতা কেমন।
যেমন- ধরুন, আপনার বাসাতে রঙ করতে এল একজন পেইন্টার, তা পোষাক যদি হয় কেতা দুরস্ত, টাই পরা আপনার তাকে ভাল লাগবে না। আপনি কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ পাবেন না। ঠিক একইরকম ভাবে আপনি অপরপক্ষের একজনকে যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন সে যদি কোন সিরিয়াস আলোচনাতে একটা জিন্স এর প্যান্ট আর একটা টি-শার্ট পরে আসে, তাহলে বুঝবেন তার মধ্যে একটা ক্যাসুয়াল ভাব আছে।
তাই আলোচনাটা যদি হয় খুব ভাব-গম্ভীর, তাহলে আপনি স্যুট না পরলেও অন্তত সুন্দর শার্ট-প্যান্ট পরুন, পালিস করা জুতা পরুন। শেভ করুন। Grooming কিন্তু এটাই। আলোচনা যদি হয় কোন ছুটির দিনে ক্যাসুয়াল মুডে, তাহলে আপনি ট-শার্ট আর একটা গ্যাভাডিন প্যান্ট পরুন। আর থাকতে পারে একটা হালকা স্যান্ডেল স্যু অথবা একটা সেমি ফরমাল স্যু। আলোচনার টেবিলে কারা থাকবে, তাদের সম্পর্কে আগেই একটু জেনে নিন সম্ভব হলে।
এখন একটা কথা বলব (আমার ব্যক্তিগত অভিমত এটা)- অনেক অনুষ্ঠানে দেখা যায় আমাদের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা আসে জিন্স প্যান্ট আর একটা ট-শার্ট বা একটা ক্যাসুয়াল শার্ট পরে। এটা কিন্তু মোটেই উচিৎ নয়। অন্য দেশের খেলোয়াড়দের দেখুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন। বিশ্বকাপ এর কাউন্ট ডাউন এর উদ্বোধনীতে সৌরভ গাংগুলী এসেছিল স্যুট পরে, আর আমাদের মাশরাফী এসেছিল জিন্স আর একটা শর্ট ট-শার্ট পরে, শেভ না করে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি নিয়ে। এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। হ্যাঁ এটা যদিও কোন আলোচনা সংক্রান্ত অনুষ্ঠান না, তারপরও আমি ব্যাপারটা উল্লেখ করলাম, কারণ কিছুটা হলেও ব্যাপারটা প্রাসংগিক।
৩। Eye-Contact
আলোচনার টেবিলে Proper Eye-Contact খুব জরুরী। কারণ এতে ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়, মনোযোগ প্রকাশ পায়, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় গুলো বলতে সুবিধা হয়। কিছু টিপস এরকম-
- যদি আপনার কারো দিকে তাকাতে সমস্যা হয়, তাহলে তার মুখের কোন একটা বিষয় এর দিকে মাঝে মাঝে তাকান ( যেমন-চশমা), তাহলে সমস্যা থাকবে না
- কয়েকজন এর সাথে কথা বলার সময় সবার দিকে তাকান
- Decision maker এর দিকে বেশি বেশি তাকান
- যে শ্রোতা বেশি প্রশ্ন করে বা interact করে তাকে প্রাধান্য দিন
- ফ্লোর এর দিকে বা কাগজ এর দিকে তাকিয়ে থাকবেন না
- যে শ্রোতা মনোযোগী না বা আপনার দিকে তাকচ্ছে না, তাকে প্রাধান্য কম দিন , নতুবা আপনার আত্মবিশ্বাস কমে যাবে
৪। Body Language
কথা বলার সময় একদম Straight হয়ে বসে থাকার দরকার নাই। আবার খুব relaxed হয়েও বসে থাকার দরকার নাই। মোটামুটি Comfortable হয়ে বসতে হবে, পারলে একটু পানি খেয়ে নিতে পারেন অপরপক্ষ দেখার আগে। তাহলে শরীরে আরেকটু Cool একটা ভাব পাবেন। আর বার কয়েক Deep Breath নিয়ে নিন। অনেক Relaxed লাগবে। আরও কিছু Tips এরকম-
- খুব বেশি হাত নেড়ে কথা বলার দরকার নাই
- নাক খোটানো বা মাথা চুলকানো কিংবা আংগুল ফুটানো থেকে বিরত থাকতে হবে
- কলম দিয়ে খট খট শব্দ করা (যা আপনি অজান্তেই করছেন) থেকে বিরত থাকুন
- দাঁত দিয়ে নখ কাটবেন না
- বুকে হাত বেধে কথা বলবেন না বা শুনবেন না
- সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে কথা বলুন, এতে অন্য পক্ষ আপনাকে মনোযোগী বুঝতে পারবে
- চেয়ারে একদম হেলান দিয়ে (Lean Backward) কথা বলবেন না। এতে আপনার মধ্যে একটা অমনোযোগী ভাব বা বস বস ভাব প্রকাশ পায়।
৫। আরও কিছু টিপস-
- মুখে যেন কোন দুর্গন্ধ না থাকে (দরকার হলে মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলি করে নিন)
- নখ যেন বড় বড় না থাকে
- অনেকের হাত Handshake এর সময় ঘামে, সেক্ষেত্রে হালকা ট্যালকাম পাউডার মেখে নিতে পারেন
- হাত ঠান্ডা থাকলে (এতে অন্য পক্ষ আপনাকে নারভাস মনে করতে পারে) হাত একটু গরম করে নিন, মুখে হাত রাখুন কিংবা কম্পিঊটারের মনিটরের পিছনে রাখুন অর্থাৎ হাত টাকে গরম রাখুন।
- Handshake এর সময় হাত খুব জোরে ঝাঁকাবেন না। আর সবসময় নিজে Handshake আরম্ভ করবেনা, অপরপক্ষ Handshake করতে আসলে খুব আগ্রহ এর সাথে Handshake করুন, সেটা বেশি কার্যকর
- Handshake এর সময় eye-contact korun করুন properly with a smiling face
- ঘন ঘন মাথা ঝাঁকাবেন না, এতে আপনার অধৈর্য প্রকাশ পাবে
- গলা খাকারি দিয়ে Excuse me বলাটা অনেকে স্মার্টনেস ভাবেন, যা ঠিক না। তাই অপ্রয়োজনে গলা খাকারি দেয়া বন্ধ করুন
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৩