আজ আমার এক শিক্ষকের কথা বলবো যিনি মিশরের বড় বড় প্রফেসরদের মাঝে অন্যতম, আমার এই প্রফেসরের শিক্ষা ও জ্ঞান গরিমা দেখলে অবাক হওয়ার মত, উনার অর্জিত ও সম্মানী ডিগ্রী সব মিলিয়ে (৪০) চল্লিশের উপরে হবে। উনি দীর্ঘ দশ বছর গবেষণা করে শিক্ষা ব্যবস্থার একটি সিলেবাস তৈরী করেছিলেন, আজ পৃথিবীর (৫০) পঞ্চাশটিরও বেশি দেশে তার তৈরীকৃত সিলেবাস পড়ানো হয় এবং ব্যপকভাবে সমাদৃত হয়েছে, আমাদের এক ক্লাসে তাকে তার জিবনের এত অগ্রগতির পিছনে যে কারন কাজ করেছিল সেটা জিজ্ঞাসা করা হলে উনি বলেন যেঃ- আজ আমার যা কিছু দেখছো সেটা আমার স্ত্রীর ঐকান্তিক সহযোগিতার কারনে আল্লাহ আমাকে আজ এখানে এনেছেন, তিনি তার স্ত্রীর সহযোগিতার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন আর বলেন যে আল্লাহর নেক এই মহীয়সী নারীকে যদি আমার জিবনে না দিতেন তাহলে আমি হয়তোবা আজ এই স্থানে আসতে পারতাম না, আমার শিক্ষা জিবনের সেই কঠিন সময়ে অনেক সময় এমন হয়েছে সে আমাকে চা দিয়ে গেছে কিন্তু আমি আমার পড়ায় এতই ব্যস্ত ছিলাম যে তা বলতে পারবো না কিছুক্ষণপর চা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ায় সে কিছু না বলে আবার চা দিয়ে গেছে এভাবে একই দিনে ৪/৫ বার চা পরিবর্তন করে দিয়ে গেছে কিন্তু একটি বারও চায়ে চুমুক দেওয়া হয়নি অথচ সে আমাকে কিছুই বলেনি শুধু চুপে এসে চা পরিবর্তন করে দিয়ে গেছে। ঘর, সংসার, বাচ্চাদের ব্যপারে যা না হলেই নয় এমন ছাড়া সে আমার কাছে কোনদিন কিছুই চাইতো না। সে আমার সব সন্তানদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে, আল্লাহর শুকরিয়া আমার ছেলে মেয়েদের সবাই আজ খুব ভাল অবস্থানে আছে আর সবার ছোটজন বর্তমানে অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করছে। সেই সময় মাঝে মাঝে পড়াশুনার ব্যপারে আমাকে যখন হতাশা আচ্ছাদিত করে ফেলত তখন আমার স্ত্রী আমাকে সাহস যোগাত সামনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার, আজ আমার যা কিছু অর্জন তা আমার না এগুলো হলো আমার স্ত্রীর, আমি যখনই আল্লাহর কাছে দোয়ার উদ্দেশে হাত উঠায় তখনই আমার তার কথা মনে পড়ে আর জান্নাতি আমার এই স্ত্রীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
ডঃ আব্দুর রহিম হুসনি কিন্দীল
কায়রো, মিশর।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:৪৪