ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল একটিই ঘটনা, আর তা হচ্ছে মাওলানা মামুনুল হক তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে থাকার ঘটনাটি। এই ঘটনাটি মনে হয় আর দেখার কেউ বাকি নেই এখন অবধি। অনেকেই আবার এই সুযোগে ইচ্ছেমতো ভিডিও বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন ইন্টারনেটে। কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যে এগুলো যাচাই বাছাই না করেই যাচ্ছেতাই করে ঘটনাটিকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। মামুনুল হক ও তার স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টের ভিডিওগুলো দেখলেই বোঝা যাবে কী ঘটেছিল সেখানে। আল্লামা মামুনুলের প্রত্যেকটি কথা, জবাব আর যারা প্রশ্ন করছিলেন এগুলো বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে সত্যিকার অর্থে কী কী হচ্ছিল সেখানে।
মামুনুল সাহেব বার বার বলছিলেন তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সেই রিসোর্টে গেছেন। তার সাথেই সময় কাটাচ্ছিলেন। অমন পরহেজগার একজন মানুষের মুখে এমন কথা একবার শোনার সাথে সাথেই দ্বিতীয় আর কোন প্রশ্ন করার কোন সুযোগ অবশিষ্ট ছিল না। হেফাজতে ইসলাম ও এই দলের যারা পরিচালনায় রয়েছেন তারা বার বার একটি কথাই বলে থাকেন- ইসলাম ও মানুষের অধিকার আদায়ের স্বার্থ ছাড়া অন্য আর কোন স্বার্থে তারা আন্দোলন সংগ্রাম করে না।
একজন এমন নামী দামী মানুষকে মুহূর্তেই কেমন বেকুব বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে সেখানে। মুহূর্মুহূ প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে তাকে অপদস্ত করার সকল চেষ্টা করা হয়েছে। যারা প্রশ্ন করেছেন সেই সকল কচিকচি বয়সের প্রশ্নকারীরা কতোটা প্রশ্ন করার যোগ্যতা রাখেন মামুনুল হকের মতো একজন মাওলানার কাছে তা জানতে ইচ্ছে করে বড়। একজন জ্ঞানের পাহাড়, ইসলামের সাহসী এক সিপাহসালার, তার বিরুদ্ধে এমন জঘণ্যতা দেশের অন্যান্য সকল ঘৃণ্য কাজগুলোকেও হার মানিয়েছে।
দেশে যখন ধর্ষণ, পরকীয়া আর সামাজিক অবক্ষয় চরমে তখন বৈধ কোন সম্পর্ককে এমনভাবে ন্যাক্কারজনক অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থাপন করাকে সমাজের অধিকতর অবক্ষয়েরই ইঙ্গিত বহন করে। সেখানে এমন একজনকেও তো দেখলাম না যিনি বললেন- অ্যাই তোমরা থামো। হুজুর যদি অন্যায়ই করে থাকে। ব্যাভিচারই করে থাকে, তবে দেশের প্রচলিত আইন আছে সেই আইনের কাছেই তাকে সোপর্দ করা হবে। কিন্তু কোনভাবেই বাজে আচরণ করা যাবে না।
এমন কেউ কি ছিল না সেখানে? প্রশ্নকারী ও যারা হুজুরকে ঘিরে ধরে অপদস্ত করছিল তাদের সকলকে একটি উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই যেন একত্রিত হয়ে হুজুরকে ঘিরে থাকতে দেখা গেছে। মাওলানা মামুনুল হককে একের পর এক একসাথে বেশকিছুজন মিলে আজে বাজে প্রশ্ন করে যাচ্ছিল। উনি কতজনের প্রশ্নের উত্তর দেবেন তখন? তার গায়ে হাত তুলতেও দেখা গেছে, গলার কাছে পাঞ্জাবী ধরে বোতমগুলো টেনে খুলে ফেলা হয়েছে। ঘাড়ের কাছে তাকে ধাক্কা দিতে দেখা গেছে। নিজের স্ত্রীকে নিয়ে যেকোন রিসোর্টে যেকেউই যাওয়ার অধিকার রাখে।
সেইজন্য কাউকে বিয়ের কাবিননামা, রেজিস্ট্রেশন কপি সাথে নিয়ে যেতে হবে এমনটা তো হবার কথা নয়। মাওলানা মামুনুল হক, সাধারণ কোন মানুষ নন। তাকে কেউ চেনেন না এমনটাও তো নয়। তিনি স্কুল পড়ুয়া বা সদ্য ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে প্রেম প্রেম খেলা করা কোন অপরিচিত যুবক নন। তার কাছ থেকে বিয়ের কাবিননামা দেখে তারপর প্রমাণ করতে হবে তারা বিবাহিত। এটা সাক্ষাৎ জঘণ্যতা। চরম অন্যায়। এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিৎ। করা উচিৎ দুর্বার প্রতিবাদ। এমন পরিস্থিতিতে অনেকই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করারও চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা বানাচ্ছেন বিভিন্ন ভিডিও।
একটি ভিডিওতে অডিও রের্কড জুড়ে দিয়ে বলা হচ্ছে- মামুনুল হক তার প্রথম স্ত্রীর সাথে সেলফোনে কথা বলছেন। সেখানে তিনি তার স্ত্রীকে বলছেন যে তার সাথে থাকা নারীটি তার স্ত্রী নয়, কোন এক রাজনৈতিক সহযোদ্ধার স্ত্রী। তিনি সেই সময়ের গ্যানজাম থেকে বাঁচতে তাৎক্ষণিকভাবে সেই নারীকে তার বিয়ে করা দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে জানিয়েছেন।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে- মামুনুল হক যে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন তা তার রাজনৈতিক সহকর্মীরা বিশেষ করে ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতার জানেন না। এইভাবে তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একেবারে অপদস্ত ও অপাঙতেয় করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে কিছু ইউটিউবার ও ফেসবুকার। একজন নারী প্রশ্নকর্তা আবার তরুণী সেই নারীর অর্থাৎ মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। সেই মহিলার প্রশ্ন করার স্টাইল দেখে মনে হয়েছে তিনি বোধকরি কোন বেহায়া বেগানা নারীকে জীবনে এই প্রথম দেখলেন। তাকে প্রশ্ন করার স্টাইল এতটাই বাজে ছিল যে, মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী বলছিলেন যে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তারপরও যেন সন্দেহের গন্ধ ছিল সেই প্রশ্নগুলোতে। এইসকল ঘৃন্য অপচেষ্টা নিঃসন্দেহে বর্বরতা।
একজন বুজুর্গ আলেমের প্রতি ঘৃণ্য ও জঘণ্য দূরভিসন্ধিমূলক অপপ্রচার। এতোই যদি সমাজের ব্যাভিচার, অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে আপনাদের মাথাব্যথা, তবে কেন থামাতে পারছেন না ধর্ষণ, ব্যাভিচার, পরকীয়া, অন্যের বউ ভাগিয়ে নেয়ার মতো ঘটনার? তাই তো অনেকেই বলেছেন- মামুনুলের মতো বাঘের বাচ্চাদের চারটি বিয়ে করা উচিৎ। কারণ এমন মানুষদের ঔরস থেকে যত মানুষ জন্মাবে তারা হবে পরহেজগার আল্লাহওয়ালা। আর ইসলামের পথের কান্ডারির বৃদ্ধি ঘটানো আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তখন সেই সমাজেই থাকবে না কোন নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, বেলাল্লাপনা, বেহায়াপনা, অবৈধ সম্পর্ক, ব্যাভিচার, পরকিয়া, অন্যের বউ ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করা, ধর্ষণ ইত্যাদি সামাজিক জঘণ্য অপরাধগুলো।
যারা এখনো সন্দেহের মধ্যে আছেন তাদেরকে বলি- অপেক্ষা করুন। সত্যটা জানতে পারবেন। তখন বৈধ এই সম্পর্কে যে ঘটনাটা আপনারা ঘটালেন তার লজ্জা ঢাকবেন কি করে??