পৃথিবীতে ভদ্রজনের জন্য দু’টি পথ খোলা- ০১. ধৈর্য, ০২. সাধনা। আর যদি অভদ্রজন হন, তবে পথের অভাব নেই। শর্টকাটে বিখ্যাত ও বড়লোক হবারও অনেক সুযোগ থাকে তখন। দুনিয়াটা তখন ফুলশয্যাই হয়। কেউ কেউ আবার বলেন- ভাই, সৎপথে থেকেও প্রাচুর্যের মালিক হওয়া যায়, সুনাম কুড়ানো যায়।
এটা আমি কোনভাবেই বিশ্বাস করি না। সুনামের সাথে নৈতিকভাবে উপার্জন করে বড়লোক হবার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। নিজে ফিন্যান্স ও অডিটের একজন বোদ্ধা হয়ে এটা কঠিনভাবেই বলতে পারি। ধর্ম ও রাষ্ট্রীয় নীতি-পদ্ধতি বিবেচনায় ঠিকঠাক নিয়মমতো চললে নিজে লাভবান অতোটা হবার সুযোগ একেবারেই নেই। বরং সার্বিকভাবে সমাজ ও সমাজের অন্যান্য মানুষের উপকার হবার সম্ভাবনা তখন বেড়ে যাবে।
ধরুন, কোন পণ্য যদি উৎপাদন করে বা কিনে আপনি লাভবান হতে চান, তবে কতটা লাভ নৈতিকতার আওতার মধ্যে থাকবে, তা কি আপনি বোঝেন? যে লাভের বিপরীতে ক্রেতাকে কষ্ট দেয়া হয়, সে লাভ কোনভা্বেই নীতিকে সমর্থন করে না।
এটা একটা চেইনের মতো, সবদিক থেকেই পদ্ধতিটি বিশ্লেষণ করতে হবে। অমুক করলে তমুক হয় এ সমস্ত মোটা মাথা দিয়ে এগুলো বোঝানো কঠিন।
হযরত সোলাইমান আ, হযরত দাউদ আ, বাদশা জুলকারনাইন- যার কথাই আনুন না কেন, মহান আল্লাহ্ পাক তাঁদের অর্থবিত্ত ও ক্ষমতার চরম সীমাবদ্ধতার কথা বার বার প্রমাণ করে দিয়েছেন।
ধরুন, কেউ আপনাকে খুশি হয়ে, বা আপনার কাজে খুশি হয়ে অনেক টাকা দিলো। আপনি কি তা নেবেন? কেন নেবেন? ঐ টাকার উৎস কী, উনি কী উদ্দেশ্যে টাকা দিতে চাইছেন, -এই বিষয়গুলো কী বিশ্লেষণ করেছেন? যদি হাবা হ্যাবলার মতো গদগদ হয়ে নিয়ে নেন, তবে আপনি এই লেখার শুরুর লাইনগুলোতে নেই, যা ভদ্রজনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
মারেফাতের কথাগুলো মানুষ কম বুঝতে বা শুনতে পছন্দ করে, কারণ তাতে বড়লোকিত্ব নেই, আছে শুধু সীমাবদ্ধতা আর অনটন।
দুঃখ করবেন না। যারা মহান ব্যক্তি (!) তারা অমনটাই ছিলেন। এই মহানের সংজ্ঞা আবার বুঝে বিবৃত করতে হবে কিন্তু। ভোগবাদের এই পৃথিবীতে সব হারিয়ে বা বিলিয়ে নিঃস্ব হবার সুখ কে বুঝবে বলুন?!?