চোখ মেলে যারে দেখেছি
তারেই ভালবেসেছি
স্বপ্নের নায়ক সেই তুমি...
রুনা’র গাওয়া এই গানটি যেন শুধু সালমান শাহ্’কে উদ্দেশ্য করেই। সত্যি তো স্বপ্নের নায়ক ছিলেন তিনি। আমাদের প্রিয় নায়ক এইদিনে কী এক রহস্য নিয়ে পরপারের পথ ধরলেন। শুনলাম রাত্রেই তিনি আত্নহত্যা করেছেন। এ ঘটনার খলনায়ক হিসেবে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামও তখন উচ্চারিত হচ্ছিল বেশ। আমার ভজন বন্ধু জিল্লু এসে জানালো জানো রতন মামা, সালমান শাহ্ নেই। কোনভাবেই এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
জিল্লু তখন ওমরসানীকে পছন্দ করতো। সালমানকে ঈর্ষা করতো। বলতো ওমরসানীই সেরা। সেসময় এই দু’নায়কের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতাও ছিল। সালমানের মৃত্যুর পর আমার সেই বন্ধু সালমানের ভক্ত হলেন। আমরা দুই বন্ধু মিলে সালমানের অনেক ছবি দেখেছি। হলে ছবি দেখার সেই শুরু সেই শেষ। তারপর আর উল্লেখযোগ্যভাবে কোন ছবিই দেখা হয়নি হলে যেয়ে।
আমার নিজস্ব স্টাইল ছিল সবসময় আমার মতোই, তবে আমার বন্ধুটি সালমানের মতো করে চুলের কাট দিতো। দেখতেও কাছাকাছি রকম ছিল। অনেকেই তাকে সালমান শাহ্ বলেও ডাকতো। তবে আমি সালমান শাহ’কে তার ক্যাপ পরা স্টাইলটাকে অনুসরণ করতাম। ঐ সময় কত রঙের ক্যাপ যে আমি পরেছি। যেখানেই যেতাম, যে মার্কেটেই, সেখান থেকেই সালমান শাহ্ যে ধরনের ক্যাপ পরতেন তা দেখে অমন স্টাইলের ক্যাপই কিনতাম।
মনে পড়ে, সালমানকে অনুসরণ করতে যেয়ে লম্বা চেইনের স্কীনটাইট প্যান্টও পরেছি অনেক। স্মৃতি হিসেবে সেই প্যান্টগুলো এখনো পুরোনো আলমিরায় সাজিয়ে রেখেছি। ঈদে বাড়িতে গেলে ওগুলো বের করে করে দেখি। সেসময়ের রিল ফিতায় তোলা কতছবি যে থ্রী-আর সাইজের প্রিন্ট করে অ্যালবাম ভরিয়ে রেখেছি। এখন গাঁয়ের বাড়িতে থাকলে পুরোনো ট্রাঙ্ক থেকে বের করে ছবি তুলে তা দেখাতে পারতাম। সালমান শাহ্ অভিনীত অনেক ছবির ডায়ালগ মুখস্থ ছিল আমার। যেকোন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সময় ফাঁকে ফাঁকে সেই ডায়লগগুলো বলে দর্শকদের আরো বাড়তি আনন্দ দিয়েছি।
সালমান, তোমাকে ঘিরে কত স্মৃতি যে মনে পড়ছে আজ। ০৬ সেপ্টেম্বরের এই দিন আসলেই স্মৃতি কাতর হই। সালামান-শাবনূর অভিনীত ছবির কথা মনে পড়লে এখনো মনের কোণে গোপন প্রেমের, ভালোলাগার স্মৃতি বুকের ভেতরটায় নতুন করে নাড়া দিয়ে ওঠে।
ওপারে ভালো থেকো সালমান। খুব ভালো।