ঈদের পরদিন সকালে আমি উনুনের পাশে বসে আগুন পোহাচ্ছিলাম। তখন হঠাৎ কোত্থেকে খায়রুল এসে হাজির। এসেই আমার শার্টে ধরে টানাটানি শুরু করল। ওর মা খিচুরী রান্না করেছে আমাকে ছাড়া কিছুতেই ও খাবে না।ও আমাকে ধরে বলে.."দাদা আইয়্যুন, মা খিচুরী রানছে,আফনে খাইবেন।"এমন নাছোড়বান্দা ছেলে কিছুতেই ছাড়ছে না।আমি ওকে খুশি করার জন্য ২ টাকা দিলাম। কিন্তু তাতে কাজ হল না। তারপর আরও ২০ টাকা দিলাম ।উহু তাতেও কাজ হল না। সে টাকাটা পকেটে রেখে আবারও টানাটানি করতে থাকে। ও একা আমাকে তুলতে পারছে না তাই ওর বড় ভাই হৃদয়কে বলে.."ধর,ধর, দাদারে ধর।"আমি দাঁত ব্রাশ করে যেতে চাইলাম তাও মানে না।কি আর করার আছে ছোট বাচ্চার কাছে পরাজিত হতেই হল।
তারপর ওদের বাড়িতে আমাকে ওর মায়ের জিম্মায় রেখে এক দৌড়ে আমাদের বাড়ি থেকে এসে টুথ পাউডার নিয়ে গেল।নিজেই পানি এনে আমার মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করল।ওর মাকে বলল দুজনের জন্য খাবার দিতে।দুজনেই খেতে বসলাম কিন্তু গরমের জন্য ধরতে পারছিলাম না। ও আবার জিজ্ঞেস করল.."দাদা,ততা (গরম )লাগে? আমি বললাম,হ্যাঁ।ও তার মাকে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে বলল। পরম তৃপ্তিতে খাওয়া শেষ করলাম।
খাওয়া শেষ হলে ওর পকেট থেকে ২২ টাকা বের করে আমাকে ফেরৎ দিল। আসলে টাকাটা ও শুধু আমাকে ম্যানেজ করার জন্য নিয়েছিল।এতটুকু বাচ্চার মাথায় এমন ধরনের বুদ্ধি কি করে কাজ করে ভাবতেই অবাক লাগে।
এমন আন্তরিকতার সাথে আপ্যায়ন পাওয়া তাও আবার মাত্র ২ বছরের শিশুর কাছ থেকে সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার ।আমি কখনও তা ভুলতে পারব না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৮:৩৩