মানুষের স্বাভাবিক মৌলিক বৈশিষ্ট্য হল চিন্তা করার ক্ষমতা। এই চিন্তা প্রক্রিয়াতে যা কার্যকর থাকে, যাকে আমরা মস্তিষ্ক বলি, তা কখনই অন্যায়ভাবে অন্য কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।তবে মানুষের এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতে এখন প্রভাব বিস্তার করতে চলেছে মোল্লা-তন্ত্রের চাপাতি আর সরকারে বিমাতা সুলভ আচরণ।
একজন মানুষ কি চিন্তা করবে, কি চিন্তা করবে না- তা কি কখনও নিয়ন্ত্রণযোগ্য? চাপাতির ভয় দেখিয়ে, কল্লা কেটে কি মানুষের মুক্তচিন্তার পথ রুদ্ধ করা সম্ভব? ইতিহাস কি বলে? সক্রেটিস শাসক শ্রেণীর পক্ষে কথা না বলায়, বরং তার কথাই সেই সময়কার সমাজে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগায় তিনি পড়েছিলেন সেই দেশের আদালতের রোষানলে। আর শেষ পর্যন্ত ৪৬৯ খ্রিষ্টপূর্বে জন্ম নেয়া এই মহান ব্যক্তিত্বকে ৩৯৯ খ্রিষ্টপূর্বে তাকে হেমলক নামক বিষ পান করিয়ে হত্যা করা হয়।
ইতালিতে জন্ম নেয়া বিজ্ঞানী গেলিলিও ১৬১৫ সালে সর্বপ্রথম বলেছিলেন ‘সূর্য নয়, পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘুরে’। যার ফলে তৎকালীন পাদ্রি সমাজ বা চার্চ তাকে "vehement suspicion of heresy" গ্র্যান্ডে কন্টেম্পট করেছিলো। এবং ১৬৪২ সালে মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত বন্দি রেখেছিলো তাকে। যদিও গেলিলিও-র মৃত্যুর কয়েক শত বছর পরে ওই অত্যাচার-নির্যাতনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া হয়েছিল। এবং তার সেই আবিষ্কারের স্বীকৃতি দেয়া হয়।
তাই প্রশ্ন আসে, বর্তমান সরকারের রক্তচক্ষু আর মোল্লা-তন্ত্র চাপাতি নাড়িয়ে যেভাবে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে ব্যাহত করতে চাচ্ছে, তা আদৌ কি সম্ভব? এই চর্চা বন্ধ করার জন্য মোল্লা-তন্ত্র কতজনের কল্লা কাটবে? সূর্যকে কি গণেশের মতো কল্পকাহিনী দ্বারা বগলদাবা করা সম্ভব?
তাহলে কেন এই রক্তের খেলা? আমি বলার, লেখার অধিকার চাই। মানুন আর না মানুন তা আপনার নিজস্ব ব্যাপার। তাই বলে কেন আমাকে খুন হতে হবে? তাহলে কি ইসলাম মানেই সন্ত্রাসী ধর্ম? আর যদি মুসলিমরা দাবী করেন যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম! তবে শান্তি কোথায়, কল্লা কাটায়? কল্লা কেটেই কি আপনারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান! কে দিয়েছে সে অধিকার আপনাদের? কে দিয়েছে সে শিক্ষা?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭