somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প শৈশবের সাথী

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি যখন প্রথম মানিক ভাইকে দেখি তখন আমার বয়স কত ছিল মনে নাই । কারন তখন আমি ছোট ছিলাম। যতটুকু মনে পড়ে আমি স্কুলে যাছ্ছিলাম , যাওয়ার পথে বিশাল বাগান বাড়ি ওলা একটা বাড়ির সীমানা প্রাচীরের ভাংগা অংশ দিয়ে ছিটকে বের হল হালকা পাতলা গড়নের কালো রংগের ছেলেটি । পড়নে লুংগী কাছা দেওয়া । এক হাতে গাছ হতে সদ্য পাড়া চার পাঁচটা পাকা আম । আমরা কয়েকজন বান্ধবী উপরের ক্লাসের আপাদের সাথে স্কুলে যাছ্ছিলাম । এই সময় ছেলেটি দৌড়ে বের হয়ে আমাদের সামনে এসে থমকে দাড়াল । আমরা হঠাৎ ওকে দেখে দাড়িয়ে গেলাম। এক সাথে এতগুলো মেয়েকে দেখে ছেলেটি লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি লুংগীর কাছাটা নামিয়ে দিল। এই সময় ঐ সীমানা প্রাচীরের ভাংগা অংশ দিয়ে একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে বের হয়ে এল। ছেলেটি কুকুরটি দেখেই আবার দৌড় দিল। ছেলেটি যেন বাতসে উড়ছে। পিছনে কুকুরটিও ওকে কামড় দেওয়ার জন্য ছুটছে ।

এদিকে আমরা মেয়েরা ভয়ে স্তব্দ হয়ে দাড়িয়ে দেখছি শেষটা কি হয় । ছেলেটি প্রাণপনে দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তা মধ্যেখানে সেতু ছিল । সে সেখান থেকে লাফ দিয়ে খালে পড়ল।

আমরা মেয়েরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম । আবার হাটতে লাগলাম। এইবার আমাদের মধ্যে যারা ওকে চিনে তাদের মধ্যে একজন বলল ” বাপরে কি বিছ্ছুরে বাবা। হারাডা দিন গ্রামডাকে যেন্ মাথায় তুইল্লা রাখে । ”

আরেকজন মেয়ে বলল ” ঠিক কইছস । এই হেদিন আমাগো কলা গাছের এক কাঁদি কলা হাওয়া । এইডা এই মানিক্কার কাম। ”

” আরে রাখ । তোগোত খালি এক কাঁদি কলা । আমাগোত এক রাইতে গোটা পুকুরের মাছই ছাফ কইরা ফালাইছে এই মানিক্কা চোরা।”

আমি অবাক হয়ে দেখি সবাই মানিকের বিরুদ্ধে । এর মধ্যে একজন মানিকের পক্ষে কথা বলে উঠল।

“সাহস থাকলে ওর সামনে কথাগুলি তোরা কইছ দেখি । কামাইল্লা চোরা করলে মানিকের দোষ । সুমন চোরা করলে মানিকের দোষ । পোলাডার বাপ নাইত সবাই হেরে নরম পাইচছ। কামাইল্লা মেম্বারের পোলা , সুমইন্না আড়তদাড়ের পোলা, হেইল্লিগা হেগো বিরুদ্ধে কিছু কস না। ”

সাথে সাথে আরেকজন বলল ” ঠিক কইচ আপা । মানিক্কা গরীবত তাই সবাই তারে দোষে । এই তোগো যে গাছের কলা আর পুকুরের মাছ চুরি অইছে তোরা কি দ্যাখছস মানিক্কা করছে ?

ওরা কোন কথা বলল না ।

কিরে কথা কছ না ক্যা ?

তারপরও ওরা চুপ করে থাকল।

” গরিব বইলা সবাই মানিকেরে দোষ দেছ । যদি স্কুলের হেড মাষ্টার পোলাডারে না দেখত, তাইলে মাইনষে এতদিনে ওর হাড্ডি গুড্ডি এক কইরা ফালাইত। আরে, এই গ্রামের কথা বাদ দিলাম ,আশেপাশে দশটা গ্রামে মানিকের মত পোলা কয়ডা আছে ক দেহি ? জানি দেখাইতে পারবি না । প্রত্যেক বছর পরিক্ষায় ফাষ্ট কে অয় ? আমাগো মানিক্কা ”

যাদের গাছের কলা চুরি হয়েছে সে বলল ” সারাদিন দুইন্নার শয়তানি কইরা রাইতে মাত্র এক ঘন্টার মত পড়ে এতেই ফাষ্ট অইয়া যায় । কি মেধারে বাবা !

আরেকজন বলল “এই তাড়াতাড়ি থুক ফেল নইলে নজর লাইগ্যা যাইব। ”

আমরা সবাই এক সাথে থু থু ফেলতে লাগলাম। এরপর পর প্রায় সময় মানিক ভাইকে দেখতাম আমার স্কুলে যাওয়া আসার পথে । কখনও গাছের ডালে বসে কিছু খাছ্ছে । কখনও খেলাধুলা করছে, কখনও মাছ ধরছে ।

েকদিন আমার স্কুলে যেতে আমার দেরী হয়ে গেল তাই সাথি কাউকে পেলাম না । একা একা যাছ্ছিলাম । স্কুলের কিছুটা আগে দেখি মানিক বাগানের ভাংগা দেওয়ালের উপর বসে আছে পাশে দেয়ালের উপর তার বইগুলো রাখা হাতের মুঠোয় নিয়ে কি যেন খাছ্ছে । আমাকে দেখে জিগ্গাসা করল ” এই তোর নাম কিরে ?

আমি ভিতরে ভিতরে কিছুটা শংকিত হয়ে উঠলাম ।

আমি অনেকটা কাপা কাপা কন্ঠে বললাম ” তাসনুভা সুলতানা ”

” ডাক নাম ? ”

” চৈতি ”

” সুন্দর নাম ”

মানিক ভাই এবার লাফ দিয়ে দেয়াল থেকে নামল । লুংগির কোছায় হাত দিয়ে বেশ অনেকটা বেদগুলা বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল । বেদগুলা দেখেই আমার জিবে পানি এসে গেল । তারাতারি নিলে নিলাম । তারপর দৌড়ে স্কুলে চলে এলাম । এরপর প্রায় আমাকে একা পেলেই কিছু না কিছু দিত । আর আমিও ঐ কিছু না কিছু পাওয়ার জন্য এখন ইছ্ছে করেই বান্ধবীদের ছাড়াই স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করতাম ।

তখন জৈষ্ঠ মাস । ডোবা ও পুকুরের পানি প্রায় শুকিয়ে গেছে । আমাদের বাড়ীর পাশে এক পুকুরের সব পানি সেচা হল । আমরা গ্রামের বড় ছোট সবাই হাত দিয়ে মাছ ধরছি । পুকুরের এক পাশে জংলা মত একটা জায়গা আছে । সেদিকে কেউ যাছ্ছে না । কারন সবাই জানে সেখানে সাপ আছে । তাও যেই সেই সাপ না ! বিষাক্ত পদ্ম গোখরা সাপ ! ওদিকে মাছ থাকলেও কেউ যাছ্ছে না । আমি মাছ ধরতে ধরতে কখন ওদিকে চলে গেছি নিজেও জানি না । হঠাৎ ফোঁস আওয়াজ শুনে চিৎকার করে দৌড় দিলাম । আমার এত কষ্ট করে ধরা মাছ সব ছিটকে পুকুরে কাদায় পড়ে গেল। আমার চিৎকার শুনে মাছ ধরা রত সবাই থমকে গেল । মনে করল আমাকে সাপে কামড়েছে। আমি ভয়ে দৌড়াতে যেয়ে জংলা জায়গাটার সামনে কাদায় পা আটকে তখন পড়ে গেছি। ভয়ে হাঁচড়ে পাঁচড়ে উঠতে যেয়ে বার বার পড়ে যাছ্ছি । সাপের ভয়ে আমাকে ধরার জন্য কেউ এগিয়ে এল না । শুধু মানিক এল। সে এসে আমকে দাড় করাল ।

” এই মাইয়া এত ডরাস ক্যা।

সাপে কামড় দিছে ?

তখন ভয়ে আমার দুই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মাথা নেড়ে না বললাম।

ও এবার আমাকে ছেড়ে দিয়ে জংলার কাছে এগিয়ে গেল। ওকে জংলার দিকে এগিয়ে যেতে দেখে সবাই চিৎকার করে নিষেধ করল। কিন্তু কে শোনে কার কথা । ও আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে হঠাৎ ভিতরের দিকে হাত দিয়ে ঝটকা মারল। সাথে সাথে দেখি ওর হাতে প্রায় চার-পাঁচ হাত লম্বা গোখরা সাপ মোচড়াছ্ছে । মানিকের ডান হাতের মুঠায় সাপের মাথাটা শক্ত করে ধরা । ভয়ে মাছ ধরা রত দুই একজন বাদে সবাই পুকুর ছেড়ে পাড়ে উঠে গেল। আমিও যে কখন পাড়ে উঠে গেছি নিজেও জানি না । মানিক সাপটাকে নিয়ে পাড়ে উঠে বিলের দিকে গিয়ে আস্তে করে সাপটাকে ছেড়ে দিল । সাপটাও মাটির ষ্পর্শ পেয়েই একেবেকে চলে গেল। ও আবার পুকুরে নামার পর সবাই বলতে লাগল ” তুই সাপটারে মারলি না কেন ?”

” সাপ আমাগো উপকার করে হের লিগা মারি নাই । তয় যদি মাইয়া ডারে কামড় দিত তহন মাইরা ফালাইতাম। ”

আমি আর সেদিন মাছ ধরিনি । বারবার শুধু মনে হছ্ছিল মানিক ভাইয়ের কি সাহস ! কত্ত বড় সাপটাকে এক ঝটকায় ধরে ফেলল ।

আমি বাড়িতে এসে মাকে ঘটনাটা বললাম । মা ঘটনা শুনে অবাক গেলেন। এরপর আমি মাকে বললাম ” মা আমি নলকূপে যাই, গোসল কইরা আসি ।

আমি গোসল করে ফিরে এসে দেখি মা মাছ কুটছে । সদ্য তাজা মাছ দেখে মাকে বললাম ” মা মাছ কই পাইলা ?

” মানিক দিয়া গেছে । কইল ওর মায়ে পাডাইছে ।

আমি অবাক হয়ে গেলাম, ওর মা আমার মাকে কি ভাবে চিনে যে মাছ পাঠাবে ।

” ওর মা কি তোমারে চিনে ? ”

মা মাছ কুটা ক্ষ্যান্ত দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল ” চিনবা ক্যা ? মানিকের মা আমার বাল্যকালের সাথী । ”

এর কয়েকদিন পর এক শুক্রুবার মা আমাকে বললেন আইজকা বিকালে তোরে লইয়া আমার সাথীর বাসায় যামু । ঘরে থাকিস।

সেদিন বিকালে আমি আর মা মানিক ভাইদের বাসায় বেড়াতে গেলাম । গ্রামের একবারে শেষ মাথায় মানিক ভাইদের বাড়ি । গাছগাছালি ঘেরা পাখির কলরবে ভরা , নিকানো উঠানে সুন্দর একচালা বাড়ি । আমরা উঠানে পা রাখতেই মানিক ভাইয়ের মা দৌড়ে এল।

“কিরে সই তুই কারে নিয়া আইলি ? ”

এই বলে আমার দুই গালে চুমু দিয়ে আমাকে কোলে তুলে নিল । আমি কিশোরী হলেও দৈহিক গঠন বাড়ন্ত হওয়ায় আবার নামিয়ে দিলেন।

” ডাঙ্গর হইয়া গেছস ।”

আমি আর মা ঘরে ঢুকলাম । ভিতরে ঢুকতেই পিছনের দরজা দিয়ে বাইরে পিছনের উঠান দেখা যায়। সেখানে মানিক ভাই একটা বাঁশের বানানো খাচায় বন্দি একটি ধান শালিকের বাচ্চাকে আদার খাওয়াছ্ছে । আমি সেদিকে এগিয়ে গেলাম । পিছনে উঠানে নামতেই দেখলাম উঠানের মধ্যেখানে বাঁশের মাচার কবুতরের টং ( বাসা ) । সেখানে অনেক কবুতর । উঠানে কিছু গাছের ডালে কিছু বাকবাকুম করছে ।

আমি মানিক ভাইয়ের সামনে এসে দাড়ালাম । সে আমার দিকে না তাকাল না । পাখির বাচ্চাটাকে আদার খাওয়ানোর পর খাঁচায় রেখে আমাকে প্রশ্ন করল ” কখন এসেছিস ? ”

” এইত এখন । মানিক ভাই তোমার এখানে এত কবুতর কইথ্থিকা আনছ ? ”

” কিছু বাজার থিকা কিছু বন্ধুগ থিকা ।”

কবুতরগুলির নাম কি ? এই যে লেজডারে ময়ুরের পেখমের মত ছড়াইয়া রাখছে ।

” এইডার নাম ময়ুরী । ”

” কাউয়ার মত গলাডা ফুইল্লা রইছে ঐডার নাম কি ? ”

” ঐডা বহুত দামি কবুতর । নাম পিনবল । ‘

মানিক ভাই এর মাঝে ঘরে বেড়ার সাথে ঠেস দিয়ে রাখা কয়েকটা বড়শির ছিপ থেকে একটা তুলে নিল ।

” কই যাইবা ?”

” মাছ ধরতে । তুই যাবি ? ”

‘ যামু । মারে কইয়া আহি ।”

” খালাম্মারে কইলে আর যাইতে অইব না । তাইলে তুই থাক ।”

” ঠিক আছে কমু না । চল।

আমরা দুইজন বাড়ির পিছন দিয়ে নাল জমিতে নেমে গেলাম তারপর কিছু দুর একটা ছাড়া ভিটার ভিতর দিয়ে জংগলে প্রবেশ করলাম। জগংলটা ছোট ছিল ওটা পার হতে বেশিক্ষন লাগল না । জংগলের পরেই কবরস্থান তারপর খাল। কবরস্থানটা অনেক পুরানো । এখন এখানে লাশ দাফন করে না । আগে যখন গ্রামে কলেরা বা বসন্ত হত তখন এখানে ঐসব লাশ দাফন করত। কবর স্হানে প্রচুর বিশাল বিশাল গাছ । এই গাছগুলোর কখনও ডাইনে কখনও বায়ে পাশ কেটে খাল পাঁড়ে এসে আমরা পৌছলাম । খালটা মোটামুটি বড় ধরনের । পানিতে তেমন একটা স্রোত নাই। জোয়ার-ভাটা হয় তবে বোঝা যায় না । মনে হয় পানি সব সময় এক রকম থাকে । এই রকম খালে প্রচুর মাছ থাকে । মানিক ভাই সুবিধা মত একটা জায়গা দেখে বসে পড়ল। তারপর সাথে আনা পলিথিনের মুখ খুলে জ্যান্ত কেচো বের করে বড়শীতে গেথে পানিতে ছেড়ে দিল । আমি মানিক ভাইয়ের পাশে বসে খালের অপর পাড়ে মানুষের আনাগোনা দেখতে লাগলাম । কিছুক্ষনের মধ্যে মানিক ভাই দশ -পনরটা কই আর শোল মাছ ধরে ফেলল । সেগুলো সাথে আনা বেতে টুকরির ভিতর রাখল । হঠাৎ আমি বললাম ” মানিক ভাই আমরে দাও আমি কয়েকটা ধরি ।

আমার কথায় সায় দিয়ে মানিক ভাই বলল ” পারবি ? পারলে ল । আমি খালে নাইম্মা পাড়ের ফুটের মধ্যে হাতাইয়া দেখি কোন মাছ পাই কিনা, “”

মানিক ভাই আমাকে ছিপটা দিয়ে লুংগী কাছা মেরে খালে নেমে গেল।

এই সময় আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ঈশান কোন লাল হয়ে আসছে ।

” মানিক ভাই তুফান আইব মনে অয় । ”

মানিক ভাই মাছ ধরা অবস্থায় পিছন ফিরে ঈশান কোনে তাকাল ।

” হরে ঠিক কইছস । চল আর মাছ ধরনের দরকার নাই । তুই না থাকলে আমি যাইতাম না । ”

এই বলে মানিক ভাই পানি থেকে উঠে গেল । তাড়াতাড়ি সব কিছু গুছিয়ে নিতে লাগল । ইতি মধ্যে ঝড়ো বাতাস শুরু হয়ে গেছে।

আমরা দুজনে তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম। করবস্থানের বড় বড় গাছ গুলো তখন ঝড়ো বাতাসের সাথে মোচড়ানো শুরু করে দিয়েছে । মানিক ভাই বলল " তাড়াতাড়ি কবরস্থানটা পাড় হ । নাইলে মাথার উপর ডাইল ভাইংগা পড়তে পারে । "

আমি এই কথা শুনে আরও জোরে দৌড়াতে লাগলাম। মানিক ভাই আমার জন্য আস্তা আস্তে দৌড়াছ্ছে । এখানে চাইলেও জোরে দৌড়ানো যায় না , কারন বড় বড় গাছের জন্য রাস্তাটা আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে । ইতিমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। ইয়া মোটা মোটা এক একটা ফোটা । গায়ে লাগলে চামড়া জ্বলে উঠে ।

মানিক ভাই আবার বলল " চৈতি জোরে আরও জোরে দৌড়া । এখন ঠাডা পড়া শুরু অইব । তখন এই সব গাছের নিচে থাকলে বিপদ। গাছের উপর ঠাডা বেশি পড়ে । ঠাডা পড়ার সময় গাছের নিচের থিকা খোলা জায়গায় থাকনডা বেশি নিরাপদ।

এর মধ্যেই আমরা কবরস্থান পাড় হয়ে গেলাম । বিকট আঁওয়াজে বজ্রপাত হছ্ছে । মনে হছ্ছে কান ফেটে যাবে । ভয়ে আমি দুই চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে গেলাম । মানিক ভাই আমাকে দাড়িয়ে পড়তে দেখে এগিয়ে এল " আমাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বলল " কিরে ডর লাগে ? ক্যান আমি আছি না । এই ঠাডা তোর গায়ে পড়ার আগেই আমি নিজের বুক পাইত্যা ঠেকামু । "

আমি চোখ খুলে মানিক ভাইয়ের দিকে তাকালাম । মাথার চুলগুলো ভিজে মুখের উপর লেপ্টে আছে। গভীর কালো দুই চোখে কিশোরের দুরন্ত ভয়হীন কোমল দৃষ্টি । দেখেই বুঝতে পারলাম সেখানে আমার অবস্থানটা কোথায় ? আমার কিশোরী দেহ কিসের এক অজানা শিহরনে কেঁপে উঠল। বুজতে পারলাম না তাকি বৃষ্টির হিমেল স্পর্শে না অন্য কিছু। মনে হল সত্যি তাই করবে। এর উপর ভরসা করা যায়। হঠাৎ করে আমার ডর-ভয় সব কোথায় চলে গেল।

" মানিক ভাই আমি আর দৌড়ামু না হাইট্টা যামু । তুমি লগে থাকলে আমার একটুও ডর লাগব না । আমার হাতটা ধর। "

মানিক ভাই আমার কথা শুনে আমার দিকে তাকাল

তারপর মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলল " ঠিক আছে চল। "

আমরা দুইজন কিশোর- কিশোরী হাত ধরাধরি করে, জমির আল বেয়ে হাটছি । চারদিকে ধূ ধূ জমিন, তার মাঝে ঝড়ো বাতাসের সাথে ঘন বৃষ্টি আমাদের অবগাহন করছে । বৃষ্টির ঘনত্বে চারদিকটা হয়ে গেছে ধোয়াশা । মাঝে মাঝে বিকট শব্দে আছড়ে পড়া বজ্রপাত, মাটির বুকে মাথা ঠুকে নিষ্ফল আতংক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি এখন আর কিছুকেই ভয় পাইনা ।

সেদিন বাসায় ফেরার পর আমার গায়ে প্রচন্ড জ্বর এল । পরবর্তিতে সেই জ্বর নিউমোনিয়ায় রুপ নিল; , আমাকে প্রথমে গ্রামের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হল। সেখানকার ডাক্তাররা অপারগতা প্রকাশ করায়, ঢাকা বিভাগীয় হাসপাতালে নেওয়া হল। ওখানে প্রায় পনের হতে বিশদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হলাম । সুস্থ হলেও শরীর খুব দুর্বল ছিল তাই আর গ্রামে যাওয়া হল না । বাবা ঢাকায় সরকারী চাকরী করতেন তাই মেসে থাকতেন । আমি অসুস্থ হয়ে ঢাকা আসার পর বাবা সরকারী কলোনীতে বাসা পেলেন । মা ও আমার ছোট ভাইসহ সবাই গ্রামের তল্পি তল্পা গুটিয়ে ঢাকার স্থায়ি ভাবে বসবাস করতে লাগলাম। আমদের দুই ভাই-বোনকে এখানে একটা স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হল।

আমি গ্রামের মেয়ে । দড়ি ছাড়া গরুর মত সারাদিন বান্ধবীদের সাথে টৈ টৈ করে পাড়াময় ঘুরে বেড়াতাম । শহরে আসার পর কয়েকদিন নতুনত্বের কারনে ভাল লাগলেও , পরবর্তিতে এই ছোট্ট গন্ডির ভেতর হাপিয়ে উঠলাম । মাস খানেক পরই শুরু করলাম ঘ্যানঘ্যানানি ।

" এইহানে থাকুমা চলেন আমরা আমাগো বাড়িতে যামুগা । আমার এই হানে ভাল লাগে না । একটু বেড়ান যায়না । কেউর লগে কথা কওন যায়না । সবাই যার যার ঘরে বইয়া থাকে । আমার ভাল লাগে না । "

আমার এই ঘ্যাননানিতে মা -বাবা দুজনেই স্বান্তনা দিতেন ।

" আর কয়ডা দিন থাক দেখবি তখন খুব ভাল্লাগবো । "

তারপরও আমি কান্না করতাম।

আমার মন সারাক্ষন পড়ে থাকত সেই সবুজ ছায়া ঘেরা পাখির কলতানে সরব গ্রামে ।

দখিনা বায়ুর ছুয়ে যাওয়া অনাবীল সবুজ -সোনালী ধান ক্ষেতের বুকে।

কলকল - ছলছল করে এঁকে বেঁকে যাওয়া ছোট্ট খালের বুকে ভাসা কোসা নায়ে।

পুকুরের বুকে দাপাদাপি করে, গোসল করা ভেজা কাপড়ে সোনালী রোদের ছোয়া সেই দুপুরে ।

গাছের ডালে ঝুলে শামুক ভাংগা দিয়ে আমের চামড়া ছিলে খাওয়া সেই ছুটির দিনে ।

বাঁদল দিনের ঘন বরষে ভিজে কাদায় লুটোপুটি করা সেই দুষ্টুমিতে ।

মেঠো পথে দুই পাশের জংলা গাছের আশেপাশে উড়া জোনাকি পোকা দুই হাতের মুঠায় ধরে বাড়ি ফেরা সেই রাতে ।

শীতের কুয়াশায় কাঁপতে কাঁপতে খেজুর রস খাওয়া সেই ভোরে ।

মন পড়ে থাকত মানিক ভাইয়ের ডানপিটে কাহিনী শোনা সেই রুপকথাতে ।

মন চাইত ছুটে যাই এই দালানের কারাগার ভেংগে ছোট্ট আমার সবুজ গাঁয়ে । যেখানে আছে আমার সহপাঠি বান্ধবীরা । আছে খালা-ফুপু দাদী-নানীরা আরও আমার রোমান্চে ভরা সেই প্রিয় দিন গুলির সাথী মানিক ভাই । যেখানে ফেলে এসেছি আমার রাংগানো শৈশব ।

আছ্ছা মানিক ভাই এখন কি করছে ? নিশ্চয় আমার কথা ভেবে আমার মতই কাঁদছে । আমাদের বাড়ির উঠানে বারবার এসে দেখছে আমরা এসেছি কিনা ।এই সব ভাবনায় কেটে যেত আমার সারাদিন । স্কুলেও সারাদিন উদাস হয়ে থাকতাম । তবে পড়ালেখা ঠিক ছিল।

এভাবে আস্তে আস্তে বছর শেষ হয়ে গেল। স্কুলের সমাপনী পরিক্ষা শেষ হলে আমরা স্বপরিবারে গ্রামের বাড়িতে এলাম ।আমরা বাড়িতে আসা মাত্র আমাদের আত্মিয় স্বজনরা এল । আমার বান্ধবীরা সবাই আমাকে দেখে বলল " কিরে শহরে যেয়ে তুই অনেক সুন্দরী আর ডাংগর অইয়া গ্যাছস । "

আমি ওদের কথা শুনে লজ্জিত হয়ে যাই ।

সবাই এল মানিক ভাই এল না । দুই চোখে শুধু তাকেই খুজি । বাইরে কারও আওয়াজ শুনলেই মনে হত এই বুঝি মানিক ভাই এল । কিন্ত দুই দিন পার হওয়ার পরও মানিক ভাই এল না । দুই দিনের দিন মানিক ভাইয়ের মা এলেন । সইকে দেখে আমার মা কি খুশি ! দুজন দুজনকে বুকে জড়িয়ে কত অভিযোগ করে ফেললেন ।

" কিরে সই আইজ দুইদিন অইল আমি আইছি, তোর এত দিনে আমার লগে দেখা করতে আহনের সময় অইল ?

" কি করুম ক , একা মানুষ তার উপর বাবা অসুস্থ । আজকা বাবা একটু সুস্থ অইছে । তয় মানিকেরে ঘরে থুইয়া তরে দেখতে আইছি ।''

আমি সামনে এসে খালাকে সালাম দিলাম । খালা আমাকে দেখেই বুকে টেনে নিলেন " কিরে তুইতো আরও ডাংগর অইয়া গ্যাছস, সুন্দরও অইছস । সই কয়দিন পরত তর মাইয়ার লিগা রাজপূত্র আনন লাগবরে । "

এই কথা শুনে আমি জোর করে খালার হাত থেকে ছুটে বের হয়ে গেলাম । যেতে যেতে শুনলাম মা বলছে " তোর রাজপুত্রটাকে দিয়া দে না ।"

আমি দৌড়ে আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় আসতেই দেখি আমার কয়েকজন বান্ধবী আমার বাড়ির দিকে আসছে ।আমি দৌড়ে আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় আসতেই দেখি, আমার কয়েকজন বান্ধবী আমার বাড়ির দিকে আসছে।

আমকে দেখে বলল “তোর কাছেই আইতাছি। আমরা পূবের বিলে যাইতাছি। নৌকায় কইরা বেড়ামু। তুই যাবি ?

মানিক ভাইয়ের সাথে দেখা না হওয়ার কারনে আমার কিছুই ভাল লাগছিল না তাই বললাম।

“নারে ভাল লাগতাছে না। আমি যামু না।”

“তুই যাবি মনে কইরা, আমরা এতদূর হাইট্টা আইলাম।

” শরিরডা ভাল না তাই যাইতে ইছ্ছা করতাছে না।

ওরা আর কিছু না বলে চলে গেল।

বিকেলের আকাশ রোদের কিরনটা মোলায়েম। অগ্রহায়ণের বাতাসে হিমেল হিমেল ভাব আর নতুন ধানের ঘ্রাণ। ধান কাটা মাঠে কবুতর চড়ুই টিয়া ও আরও অন্যান্য পাখিদের বিচরনে মুখরিত। চাষিরা ক্ষেতের মাঝেই নতুন ধান মাড়াই করছে।ফসল ভাল হওয়ার খুশিতে কৃষকের খুনসুটিতে কিষানীর মুখে মধুর হাসি।

আমি এইসব দেখে হাটতে হটতে কখন যে মানিক ভাইয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে চলে এসেছি নিজেই জানি না। দুর থেকে হঠাৎ মানিক ভাইয়ের বাড়ি দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্রই থমকে গেলাম ! লজ্জায় দাড়িয়ে গেলাম। ভাবলাম একি করছি ? আমার কি হয়েছে ? তাড়াতাড়ি আমি ফিরতি পথে আমার বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলাম। মাথা নিচু করে হাঁটছি আর ভাবছি আমার কি হয়েছে ? মানিক ভাইকে দেখার জন্য এমন পাগলামী কেন করছি ? তাহলে কি আমার …….। আর কিছু ভাবতে পারছি না। ছিঃ আমার এই রকম অবস্থা বুঝতে পারলে মানিক ভাই কি মনে করবে ? ভাববে আমি একটা ফালতু মেয়ে। নাহ এখন থেকে নিজেকে সংযত করতে হবে। মানিক ভাইয়ের সামনে নিজকে ছোট করা যাবে না।

“চৈতি”

মানিক ভাইয়ের ডাক শুনে সন্ধ্যার বাল্যকালে চমকে উঠলাম। মাথা তুলে দেখি মানিক ভাই আমার সামনে দাঁড়ানো। কাদা পানিতে শুকিয়ে যাওয়া চুল চিরাচরিত নিয়মে প্রশস্ত কপালে লেপ্টে আছে। উদোম গা। পরনে ভিজা লুংগী। সারা দেহে শুকিয়ে যাওয়া কাদা মাটির প্রলেপ মাখানো। কাধে রাখা তিন কোনা মাছ ধরার জাল ডান হাতে ধরে আছে। বাঁ হাতে বেতের লম্বা একটা ঝুড়ি।

“কিরে মাথা নিচু কইরা, কি ভাবতে ভাবতে হাটতাছস ?”

এমন সময় মাথার উপর দিয়ে এক ঝাঁক টিয়া পাখি ট্যাঁ ট্যাঁ ডাক দিয়ে উড়ে গেল। আমি মাথা উচিয়ে টিয়া পাখির ঝাঁকের দিয়ে তাকিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কোন বাক্যই খুজে পেলাম না। কারন সত্য কথা যায় না বলা তা শোভনীয় নয়। মিথ্যা কথা কি করে বলি, তাতেত গুনাহ হবে। তাই আকাশের দিকে তাকিয়ে চুপ করে থাকলাম। আমার থেকে কোন সদুত্তর না পেয়ে এবার বলল ‘”সন্ধ্যা অইতাছে বাড়িতে যা গা।”

“তুমি কইথ্থিকা আইতাছ। সারা শরিলে ফুট মাখা।”

“মা কইছিল আমার সই আইছে ওগো লাইগা মাছ ধইরা লইয়া আয়। ওরা এখন ঢাকা শহরে থাকে ওখানে তাজা মাছ পায় না পায় কে জানে।”

“পুবের বিলে পানি কইম্মা গেছে তয় ওখান থিকা তগো লিগা মাছ ধরছি।”

“কি কি মাছ পাইছ ?”

বড় বড় ষোল মাছ, বাইলা মাছ, শিং মাছ, বাইন মাছ, আর কয়ডা বড় বড় কই মাছ পাইছি, মাছ আনার পর খালায় কইলো তুই নাকি কই মাছ বেশি পছন্দ করছ ? আগে জানলে আরও বেশি কইরা কই মাছ ধরতাম।”

“কেন আমার লাইগ্যা বেশি ধরন লাগব ক্যা ?”

মানিক ভাই আমার দুই চোখে গভীর দৃষ্টিতে তার দুই চোখ রেখে বলল “হেইডা তুই এখন বুঝবি না। আরও ডাংগর অইলে বুঝবি। যা বাড়িতে যা গা সন্ধ্যা অইয়া গেছে।”

এই বলে মানিক ভাই হন হন করে হেটে চলে গেল। আমি উনার শেষ কথা শুনে পাথরের মত স্থির হয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে এই গাছ, পাখি ঐ সুনীল আকাশ, দেহ ছুয়ে যাওয়া বাতাস আহ ! কত সুন্দর ! আগেত কখনও এমন লাগে নি। আমার সারা দেহে যেন ভাল লাগার এক ভয়ানক সর্বনাশা ঝড় বয়ে যেতে লাগল।

এর কয়েকদিন পর আমরা শহরে চলে এলাম। মানিক ভাইয়ের সাথে আমার আর দেখা হয়নি।

এর মাসখানেক পর আমার বাবার প্রমোশন হয়ে খুলনায় বদলী গেলেন। এতে বছরের শেষ দিকে বাড়িতে যাওয়া টা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে গেল। আমরাও আর বাড়িতে তেমন একটা যেতাম না। প্রথম দিকে মানিক ভাইয়ের কথা স্মরণ করে প্রায় উদাস হয়ে যেতাম। মানিক ভাইয়ের মত কাউকেই দেখলেই লুকিয়ে লুকিয়ে বার বার তাকাতাম। ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলাম। আমার কিশোরী কাল পেরিয়ে তারুণ্যের জগতে প্রবেশ করলাম। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হলাম। সেখানে নানা রকম বন্ধু ও বান্ধবীদের সাহচর্যে আমি বদলে যেতে লাগলাম। বদলে যেতে লাগল আমার কচি মনের পৃথিবী। মানিক ভাইয়ের স্মৃতি আস্তে আস্তে হৃদয়ের প্রাচীন ঘরে হারিয়ে যেতে লাগল। আমার নতুন বন্ধুদের তুলনায় মানিক ভাইকে গেঁয়ো মনে হতে লাগল। এত কিছুর পরও সেই বিকেলের পর সন্ধ্যার লগনের ভাল লাগাটা যেন আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি হয়ে রইল। সেই অচিন ভাল লাগার শিহরিত আবেশ জীবনে আর কখনও পাইনি । তখন উপলদ্ধি না করতে পারলেও এখন বুঝি ওটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম প্রেম। আর মানুষ প্রথম প্রেমের স্মৃতি কখনই ভুলতে পারেনা।

আজও বুভুক্ষ হৃদয় সেই ক্ষণটি বার বার ফিরে পেতে চায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×