দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ। জানা যায় ইরানের মাজদারানের উত্তর প্রদেশের ছোট শহর রোয়ানে সাত বছর আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেলাল নামে এক লোক ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ১৮ বছর বয়সী আবদুল্লাহ হুসেইন জাদেহকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু আবদুল্লাহর হয় ।
ইরানের ধর্মীয় আইন অনুযায়ী ফাঁসির রায় হয় হত্যাকারী বেলালের। যথা সময়ে চোখ বেঁধে আসামি বেলালকে দাঁড় করানো হলো ফাঁসির বেদিতে, ফাঁসির দড়িও পরানো হলো গলায়, আসামি বেলাল ভেবেছিলেন তিনি হয়তো শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন। কিন্তু তার আগেই ঘটল এক বিস্ময়কর ঘটনা।
দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিহত আবদুল্লাহর পরিবারকেও অংশ নিতে হয় ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায়। নিহত ব্যক্তির পরিবারের কোনো সদস্যকে আসামির পায়ের নিচের চেয়ারকে সরিয়ে দেয়ার নিয়ম । নিহত আবদুল্লাহর মা এগিয়ে এসে আসামী পায়ের চেয়ার না সরিয়ে বেলালকে এক চড় মেরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। নিহতের বাবা এগিয়ে গিয়ে বেলালের চোখের বাঁধন মুক্ত করে দিলেন।
সন্তান হারা এক মা এভাবেই তার সন্তানের খুনির জীবন বাঁচালেন। ইরানে ফাঁসির রায় কার্যকর করার সময় সম্প্রতি এমনই এক ‘বিরল’ ঘটনা ঘটে।
যেখানে মৃত্যুই ছিল বেলালের একমাত্র পরিণতি সেখানে প্রাণ ফিরে পেল সে। আবেগে ভেসে গেল উপস্থিত জনতা।
সন্তানের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়ে যখন আবদু্ল্লাহর মা ফাঁসির বেদি থেকে নেমে আসলেন, তখন বেলালের মা এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনই ডুকরে কেঁদে ফেলেন। দুই মা-ই কেঁদে যাচ্ছেন। একজন কাঁদছেন তার সন্তানকে হারানো শোকে আর অপরজন তার সন্তানের প্রাণ ফিরে পাওয়ার সুখে।
আবদুল্লাহর মা বলেন, ‘আমি আবদুল্লাহর আগে আরেক সন্তান আমির হুসাইনকেও হারিয়েছি। মাত্র ১১ বছর বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় সে নিহত হয়।’
আবদুল্লাহর বাবা হুসেইন জাদেহ বলেন, ‘একটি স্বপ্নই আমার স্ত্রীকে এই কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।’
তিনি বলেন, ‘তিনদিন আগে আমার স্ত্রী বড় সন্তান আবদুল্লাহকে স্বপ্নে দেখে। আবদুল্লাহ তাকে বলছে, মা, আমরা খুব সুখে আছি, তুমি (বেলালের ওপর) প্রতিশোধ নিও না। ফলে আমাদের মন পরিবর্তন হয় এবং আমরা বেলালকে ক্ষমা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
আমার দেশ পত্রিকা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০২