নবাবগঞ্জের কলাকোপা'র বিখ্যাত ও প্রাচীণ বৌদ্ধ মন্দির। এখানকার গৌতম বুদ্ধের মূর্তিটার মাথা নেই............ ১৯৭১ এ পাক বাহিনী ভেঙ্গে দিয়ে গেছে।
কলাকোপায় কোকিলপ্যারী জমিদার বাড়ী
কলাকোপা আনসার ক্যাম্পের ভেতর এই কোকিলপ্যারী জমিদার বাড়ী এখন আনসারদের কোয়ার্টার !!!!
কলাকোপায় জমিদার বাড়ী। এখন বেদখল - কোকিলপ্যারী হাইস্কুলের টিচার্স কোয়ার্টার !!! বৌদ্ধ মন্দিরের ঠিক পেছনে।
নিস্তরঙ্গ, বিগত যৌবনা............ নদীর নাম ইছামতী
কলাকোপায় অনিন্দ্যসুন্দর জজ বাড়ী ! ঢুকতে দেয়না, তাই গেটের বাইরে থেকেই ছবিটা নিয়ে চলে আসলাম। এর পাশেই আবার আছে উকিল বাড়ী সেটাও গরজিয়াস।
"আন্ধার কোঠা"............ জমিদার খেলারাম দা'র বাড়ী। এই মহলটা নাকি পাচতলা ছিলো, একরাতে হঠাত করে তিনতলা ধ্বসে গিয়ে মাটিতে ঢুকে যায়, এখন শুধু উপরের দুই তলা মাথা জাগিয়ে রেখেছে !!!! তবে সিড়ি দিয়ে নিচের তলাগুলোতে নামা যেতো, এখন বন্ধ।
কথিত আছে জমিদার খেলারামদা এর মা একদিন তার সন্তানের কাছে দুধ খেতে চাইলে সে তার মায়ের জন্য এই চৌবাচ্চা বানানোর নির্দেশ দেন। পড়ে সেই বিরাট চৌবাচ্চায় দুধ এবং কলা দিয়ে পূর্ণ করে তার মাকে সেই চৌ্বাচ্চায় নামিয়ে দেন। তার মা সাতার কেঁটে কেঁটে মনের সাধ মিটিয়ে দুধ খেয়েছিল।
ভয়াবহ সিড়ি......... তিন স্টেপ পরেই একটা বিশাল গর্ত, প্রায় পাচ ছয় ফুট গভীর। এই সিড়ি চলে গেছে আন্ডারগ্রাউন্ডে.........
হরর মুভি করার জন্য এইটা একটা আদর্শ জায়গা হতে পারে
এরপর কলাকোপা থেকে আমরা চলে আসলাম দোহারের কার্তিকপুর। এখান থেকে মৈনট ঘাট যাওয়ার জন্য "অটো রিকশা" পাওয়া যায়।
রংচঙ্গে রিকশার বডি, হেড লাইট, সাইড মিরর, গিয়ার বক্স, অটো ব্রেক আর শ্যালো ইঞ্জিন......... এই হলো সত্যিকারের "অটো রিকশা" !!! বাঙ্গালীর বুদ্ধি নাই বলে কে !
পদ্মা নদীর মাঝি
আরে সমস্যা নাই............ হেটেই নদী পার হয়ে যাবো ব্রীজ লাগবে না :p :p
পদ্মার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ (অন্তত আমার কাছে)............ নদীর ভেজা বাতাসে ঘাটের ইটালিয়ান হোটেলে বসে ইলিশ মাছের টকটকে লাল ঝাল ঝোল......... সাথে পদ্মার টেংরা মাছের ভুনা !!!! মাত্র ষাট টাকায় আমাদের রসনাপূর্তি হলো সেইরকম।
ধোয়াটে মেঘ............ সর্বনাশা পদ্মা নদী। সংক্ষিপ্ত ট্যুর সমাপ্ত
যেভাবে গেলামঃ
গুলিস্থানের গোলাপ শাহ মাজার থেকে বান্দুরা,জয়পাড়া সরাসরি মৈনটঘাট বাস (যমুনা, এন মল্লিক) পাওয়া যায়। আপনি যদি বান্দুরা বা মৈনটঘাটের বাসে ওঠেন তাহলে প্রথমেই নবাবগঞ্জ বা কলাকোপা নামতে পারবেন, পরে সেখান থেকে দোহার যেতে পারবেন। ভাড়া নিবে ৬০ টাকা, সরাসরি মৈনট গেলে ৮০ টাকা। সময় লাগবে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা।
গুলিস্তান থেকে বাবুবাজার ব্রীজ পেরিয়ে কেরাণীগঞ্জ হয়ে পড়বে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান। এরপর ইছামতীর উপর মরিচা এবং তুলসীখালী সেতু, পার হয়ে পড়বে আগলা, নবাবগঞ্জ শহর এবং আরেকটু সামনেই কলাকোপা। এখানে পাশাপাশি আন্ধার কোঠা, বৌদ্ধ মন্দির,কোকিলপ্যারি জমিদার বাড়ি,জজ বাড়ি,আনসার ক্যাম্প,ইছামতি নদী দেখে আমরা সরাসরি চলে গিয়েছি কার্তিকপুরের মৈনট ঘাটে। ফিরতি বাস পাওয়া যায় রাত আটটা পর্যন্ত। পদ্মার ওপারে ফরিদপুরের চর ভদ্রাসন। স্পীডবোটে ১৩০ টাকা ভাড়া। ট্রলারে নেবে ৬০ টাকা। সময়ের টানাটানিতে বান্দুরা বা মাঝিরকান্দায় থামা হয়নি। ওখানে সম্ভবত একটা ভাঙ্গা মসজিদ, গির্জা আর সাত মাথার এক মূর্তি ছিলো। বান্দুরার মিষ্টি খাবার সুযোগও পেলাম না এইবার।
সহজ সরল এই সৌন্দর্যের টানে আবারো যাবো দোহার-নবাবগঞ্জ !!! যেতেই হবে..................
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৩২