আর ক’দিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে ২০১২ সামার অলিম্পিকস, যা লন্ডন অলিম্পিক হিসেবেই সুপরিচিত। কিন্তু এই বর্ণাঢ্য আয়োজনের নেপথ্যে কি কোন ভয়াবহ ঘটনা মঞ্চায়নের প্রস্তুতি চলছে ? অলিম্পিকের লোগো, ম্যাসকট, প্রস্তুতি এমনকি অলিম্পিক সাইটের রাস্তাঘাটগুলোর নামগুলোও খুবই ইন্টারেস্টিং ভাবে রহস্যজনক, আর মড়ার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে রয়েছে ১৯৯৫ সালের আবিষ্কৃত খুবই বিখ্যাত একটি কার্ড গেমের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা কিছু ভবিষ্যৎবানী, যা নিখুত ভাবে দেখিয়েছিল ছয় বছর পরে ঘটা টুইন টাওয়ার এবং পেন্টাগণ হামলার চিত্রপট।
আসুন আমাদের বিশ্লেষণ আমরা শুরু করি। প্রথমেই এবারের অলিম্পিকের লোগো।
চমৎকার, তাই তো! ২০১২ - এটি তো ফুটে উঠেছে সেখানে, তাহলে বলুন তো, সংখ্যা চারটির মাঝখানে ঐ পয়েন্টটা কি করছে? নাকি এটা অন্য কিছুর রুপক প্রতীক? লোগোটা থেকে Zion শব্দটা বানানো যায় কি? না কি কোইন্সিডেন্স, বা কল্পনা !
এবার ম্যাসকটগুলো দেখি চলুন। ওয়েন্ডলক আর ম্যান্ডেভিল।
দেখুন, তাদের চোখ একটি করে............ ইলুমিনাতি গোষ্ঠীর মূলমন্ত্র হল All Seeing Eye - এক চোখের বিশ্বনিয়ন্তা.ইসলামিক বিশ্বাসে দাজ্জাল, আর বাইবেলে যাকে বলা হয় Anti Christ.ওদের বুকে লোগোটাও আছে, ২০১২, নাকি Zion? তাদের অদ্ভুত শারীরিক গড়ন এলিয়েনদের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, আর এলিয়েন বা মহাজাগতিক জীবদের সাথে ইলুমিনাতি কানেকশন অনেক পুরনো।আবার দেখুন, ওয়েন্ডলকের মাথায় যে ত্রিকোণ দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে উপবৃত্ত............ সেটা কিসের পরিচায়ক? All Seeing Eye এর মতই যে মনে হচ্ছে !!
এটাও কোইন্সিডেন্স, নাকি অমূলক ধারণা, নাকি…………............... !!!
অলিম্পিক ভেন্যুর আশে পাশের রাস্তা গুলোর নামও বেশ ইন্টারেস্টিং। গ্রেট ইস্টার্ন রোড, কারপেন্টারস রোড, টেম্পল মিলস লেন, এঞ্জেলস লেন, চার্চ রোড............ বাইবেলের যুগের গন্ধ পাওয়া যায় যে ! ফ্রিম্যাসন বা ইলুমিনাতি গোষ্ঠী মানুষকে প্রতারিত করতে সবসময়ই ধর্মের আমেজ দিয়ে রাখতে চায়।
আরেকটা ছোট বিষয়, অলিম্পিক মশাল, বা টর্চ। সেটা বলার আগে এক নজরে দেখে নিন ২০০৪ এর এথেন্স অলিম্পিক আর ২০০৮ এর বেইজিং অলিম্পিকের মশালটা কেমন ছিলো?
এথেন্স অলিম্পিক মশাল
বেইজিং অলিম্পিক মশাল
আর এবারের লন্ডন অলিম্পিকের মশাল কি রকম ?
আবার কি চলে আসছে সেই গ্রেট পিরামিড !!! যা All Seeing Eye এর ভিত্তি ! এটাও কোইন্সিডেন্স, নাকি অমূলক ধারণা !!!
আচ্ছা, ধরেই নিচ্ছি উপরে যা কিছু ঘটে গেছে, সবই কন্সপিরাসি থিওরীর নাম দিয়ে চালানো গালগপ্পো। এবার আসুন আরেক দিকে।
১৯৯৫ এ টেক্সাসের ইনডোর গেম নির্মাতা স্টীভ জ্যাকসন মুক্তি দেন তার নতুন কার্ড গেম - ইলুমিনাতিঃ দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার। অফিসিয়াল সাইটটা এখানে ইলুমিনাতি সাহিত্যে অনুপ্রাণিত ওই সুপারহিট গেমটিতে আপনাকে খেলতে হবে সিক্রেট সোসাইটির সদস্য হিসেবে, এবং সারা পৃথিবী জুড়ে নানা দুর্ঘটনা আর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আপনাকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা। বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের বিবরণ দেয়া নানা রকম প্রায় ১২৫ টা কার্ড ঐ গেমটিতে আছে। এর মধ্যে দুটো কার্ড দেখুন (মনে রাখতে হবে, গেমটি ১৯৯৫ সালের)
কার্ড গুলো নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা পরবর্তী একটি পোস্টে দেবার ইচ্ছা। কিন্তু বিষয়টা কি? কিভাবে ছয় বছর আগেই এটা জানা গেলো, নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার প্রতিষ্ঠায় এই দু’টি মহা ঘটনা ঘটবে, বা ঘটানো হবে ! সে যাই হোক, আসুন দেখি অন্য আরেকটি কার্ড কি বলছে............
পিছনের যে ক্লক টাওয়ারটা দেখা যাছে, তাকে লন্ডনের বিগবেন বলা হলে কি খুব ভুল হবে? তার চেয়েও বড় কথা, যে পাচজন পালিয়ে যাচ্ছে পিছনের ছায়ামূর্তিগুলোর হাত থেকে বাঁচতে, তাদের রঙগুলো খেয়াল করুন, অলিম্পিকের প্রতীক পাচটি রিঙ এর রঙও যে একই রকম !!!
সব মিলিয়ে অনেকেই মনে করছেন ২০১২ সালের অলিম্পিকে ভয়াবহ কোন ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, আর তার সূত্র ধরে আমাদের চেনা এই পৃথিবী বদলে গিয়ে অন্য কোন রূপ নিতে পারে যেখানে অবশ্যম্ভাবী যুদ্ধ আর অত্যাচার-নিপীড়নে মানব সভ্যতাই হয়ে উঠবে হুমকির সম্মুখীন। এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার প্রবক্তা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন All Seeing Eye এর মালিক সেই একচোখা অপশক্তি, যার আসবার পথ প্রস্তুত করতে শত শত বছর ধরেই কাজ করে চলেছে ইলুমিনাতি এবং ফ্রিম্যাসনরা।
ভবিষ্যৎ জানেন একমাত্র আল্লাহ, কিন্তু ষড়যন্ত্র যদি সত্যিই বাস্তবিত হয়, আসন্ন ভয়াবহ মহাযুদ্ধের ডামাডোলে গরীব দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের অবস্থাটা দাঁড়াবে কি?
ভালো কথা, ২০০৮ এর দিকে এই বিষয়গুলো নিয়ে লন্ডনেই প্রথম আলোচনা ওঠান রিক ক্লে নামক ২৮ বছর বয়সী এক যুবক, তার ‘কসমিক মাইন্ড’ ব্লগে। ২০০৮ এর আগস্টে তার সাইটটা ডাউন হয়ে যায়, আর কিছুদিন পর তিনিও ‘"স্বাভাবিক ভাবে’" মারা যান।
সাপ্লিমেন্টারী হিসেবে ২০১০ এর গার্ডিয়ানে প্রকাশিত নিউজটা দেখতে পারেন এখানে
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১২ রাত ১০:০১