আমার বন্ধুরা সবাই আমার পতনোন্মুখ স্বভাবের সাথে কমবেশি পরিচিত।
আজ সকালে চলন্ত বাস থেকে নামতে গিয়ে ঝুলন্ত এই আমি পা পিছলে একেবারে পপাত চ মমার চ! আলুর দম হওয়া থেকে বেঁচে গেছি একটুর জন্য। নিজেকে আমি ভাবিটা কী? অ্যাকশন হিরোইন? কী জানি! তবে বাস থেকে আমি পড়ার সাথে সাথেই সাউন্ড ইফেক্ট শুনতে পেলাম। সবকয়টা যাত্রী একসাথে আহা, হায় হায়, ওরে ওরে টাইপ অনেক ধরণের কাতরোক্তি করে উঠল। হেলপারটা হতবুদ্ধি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বলে যাচ্ছে, "আমি তো থামাইতে আছি। আপনি ক্যান তাও ঝাঁপটা দিলেন?" এদিকে আমার জীবনে পতন এতবার হযেছে যে আমি ভাবলেশহীন মুখে উঠতে উঠতে বললাম," ধুর মিয়া। আমি নামমু শ্যাউড়াতে।আপনে থামাইতে থামাইতে সেই র্যাডিসন হোটেল যাবেন গিয়া!" বলে নির্বিবাদে উলটা ঘুরে হাঁটতে লাগলাম। ভাবলাম, এ যাত্রা আবারো অক্ষত থেকে গেললাম। কিন্তু হায় হায়! প্্যান্ট তো হাঁটুর কাছে ছিঁড়ে গেছে! হাঁটা দিলাম। এই ছেঁড়া প্যান্ট নিয়ে এখন কী করব ভাবতেই ভাব্তেই এক পথচারী সেইরকম উত্তেজিত মুখে বলল, 'আপনাকে ফেলে দিছে?' "না ভাইয়া, আমিই লাফায়া পড়ছি।' ভদ্রলোক ভাবলেন আমি বোধহয় মশকরা করছি। বাসের দিকে তাকিয়ে বললেন, "শালাদের পিটানো উচিত। আপনি কিছু বললেন না কেন?" বললাম, "ব্যাপার না, ভাইয়া। আমার ব্যাথা লাগে নি।"
হাঁটুর কাছে ছেঁড়া প্যান্টা চাদরে ঢেকে আমার বিদেশী কলিগকে ফোন করলাম। ও অফিসের কয়েকটা বিল্ডিং পরেই থাকে। বললাম," তোমার কাল প্যান্টা রেডি রাখ। আমি ওইটা পরার জন্য তোমার বাসায় আসছি।" একটু পজ নিয়ে বললাম," কারণ আমারটা ছিড়ে গেছে। " ও আমার পাগলামির সাথে পরিচিত। কোন প্রশ্ন না করে বলল, "চলে আস।"
আমার কলিগের অতিকায় বিশাল কাল পাজামা পরে আমি নতুন করে হাঁটা প্র্যাকটিস করছি। কারণ আমি আর ও সমমনা হলেও সমপেয়ে নই!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫