somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

য়োসা সাহিত্য না রাজনীতির কারণে নোবেল পেলেন

০৯ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৩:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

য়োসা নোবেল পাওয়ার পর তার সাহিত্য আলোচনার পাশাপাশি সক্রিয় আছে তার রাজনৈতিক মত বিশ্বাস সম্পর্কিত আলোচনাও। বিশেষ করে পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে তার নির্বাচন, এক সময়ে বামপন্থী রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং পরে আবার ডানে মোড় নেয়া সব মিলিয়ে রাজনৈতিকভাবে তিনি বিতর্কিত। এই দোষ অবশ্য রাজনীতির নাকি য়োসার সেই আলাপ ভিন্ন। কিন্তু নোবেল পাওয়ার পরে বিশেষত তার বিরুদ্ধ মতের লোকেরা মোটেও ছাড় দিচ্ছেন না তার সমালোচনায়। য়োসা ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা এলেন গার্সিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। তার দাবি ছিল বাজেট সংকুচিত করা এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতির সম্প্রসারণ। এই আন্দোলনের সূত্র ধরেই তারা একটি দল গড়ে তুলেন। এবং সেই দল থেকে ১৯৯০ সালে য়োসা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। ৯০-এর নির্বাচনে ফুজিমোরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধেও আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন। ফুজিমোরি বতর্মানে মানবাধিকার লঙ্ঘেনর দায়ে ২৫ বছরের কারাবাসে আছেন। লাতিন কবি আন্তোনিও চিসনেরস, যিনি সম্প্রতি পাবলো নেরুদা পদক জিতেছেন তার মত হচ্ছে- য়োসা নোবেল পাবার গুরুত্বপূর্ণ একটা কারণ তার রাজনীতি। তিনি সবসময়ই তার মতের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন বলেই তিনি এই পদক অর্জন করেছেন। একই রকম একটা কথা বলেছেন আলেজান্দ্রো গুরেরো, তিনি টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব পেরুর জার্নালিজম স্কুলের ডিন। তার মতে য়োসা যখন বামপন্থী ছিলেন তখনই তিনি অনেক বেশি যোগ্য ছিলেন পুরষ্কার পাওয়ার জন্য। য়োসা সাইনিং পাথ এবং টুপাক আমারু বিদ্রোহের স্মৃতিতে একটা জাদুঘর খোলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বছর কয়েক আগে তিনি এই দায়িত্ব থেকে সরে যান। য়োসার এই পরিবর্তন নিয়েই মূলত বিতর্ক। নোবেল জয়ি লউস ভেলেনজুয়েলা জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট মেলায় গিয়ে শুনেছেন য়োসার নোবেল জয়ের কথা। তার মতামত য়োসার জন্য পীড়াদয়াকই হবে- এটা দুঃখজনক, রাজনৈতিক মত পরিবর্তনই য়োসাকে এই পুরষ্কার এনে দিয়েছে, আমি ভেবেছিলাম কার্লোস ফুয়েন্তেস এই পুরষ্কার পাবেন। টুইটারের এক ব্যবহারকারী তো রাগে একেবারে অগ্নিশর্মা। তার বাক্যবাণ তীব্র- নোবেল পুরষ্কার এমন একজনকে দেয়া হল যিনি বর্ণবাদী, স্বৈরাচারি, হিস্পানিদের পক্ষের, আদিবাসীদের অধিকারের বিপক্ষে আর মনেপ্রাণে যিনি একজন ইউরোপিয়ান।

লাতিন আমেরিকায় সাহিত্যে নোবেল বেশ মর্যাদার আর আলোচ্য বিষয়। ফলে য়োসার নোবেল জয় নিয়ে নানা প্রকার মতামত আদান প্রদান চলছে। লাতিনে বর্তমান সময়ে এটাই বিবেচনা করা হচ্ছে যে য়োসা মূলত তার উপন্যাস লেখার জন্য নয় তার রাজনৈতিক মত পরিবর্তনের জন্যই নোবেল পেয়েছেন। য়োসা সমলিঙ্গীয় বিবাহরে পক্ষে এবং মাদক গ্রহণের বিপক্ষে অবস্থান যেমন নিয়েছেন তেমনি জোরালো অবস্থান নিয়েছেন শ্যাভেজ এবং ফিদেলের বিপক্ষে। য়োসা ঘোষণা দিয়েছেন তিনি স্বৈরাচারদের বিপক্ষে তা হোক বাম অথবা ডান। য়োসা নোবেল পাওয়ার পর সিএনএন-কে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে বলেন-আমি স্বৈরাচারদের বিপে সবময়ই সোচ্চার, এর কোন বাছ বিচার ছাড়াই। সিএনএন যখন তাকে জিজ্ঞেস করলো কেন তিনি ফিদেল আর শ্যাভেজের সাথে দেখা করতে চান- ‘আমি এটা বলার জন্যই দেখা করতে চাই যে তাদের উচতি সরকার থেকে সরে দাঁড়ানো। তারা তাদের দেশের উন্নতির জন্য প্রতিবন্ধক।’ এছাড়াও ১৯৯০ সালে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর য়োসা স্পেনে চলে যান। লাতিনে স্পেনের দীর্ঘ দিনের অমানবিক উপনিবেশ ভুলে গিয়ে উল্টো স্পেনের প্রতি তার আবেগ আর আসক্তি প্রকাশেও তিনি কুণ্ঠা বোধ করেন নাই। অনেকেই একে তার বেঈমানি বলে মনে করেন। বিশেষত যারা আদিবাসী অধিকার আন্দোলনে সক্রিয় তারা নানাভাবেই ক্ষুব্ধ য়োসার কর্মকান্ডে। ২০০৩ সালে তিনি একবার বলেছিলেন- বর্তমান সামাজিক প্রক্ষাপটে উন্নয়ন আর সভ্যতা এক কথা নয় । এখানে মূল বিষয় হচ্ছে ঐকমত্যে পৌঁছানো। আদিবাসীতত্ত্ব যা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল লোকজন তা আবারো একটা সামাজিক প্রপঞ্চ হিসেবে ফিরে এসেছে সেই লোকের পেছনে যিনি হচ্ছেন ইভো মোরালেস। ২০০৫ সালে মোরালেস মতায় আসাবার পরে য়োসা বলেছিলেন- একটা মিশ্র রক্তের মানুষ এসেছে ক্ষমতায় যিনি বলিভিয়াকে শেষ করে দিবেন। ১৯৭০ সালে তিনি কিউবান বিপ্লবের একজন সমর্থক ছিলেন কিন্তু পরে তিনি ফিদেলের একজন কড়া সমালোচক হিসেবে নিজেকে হাজির করেন। অন্য সব লেখকের মতোই তিনিও কিউবার বিপ্লবী আন্দোলনের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। সেখানেই তার সাথে মার্কেজ, ফুয়েন্তেস, হুলিও কোর্টাজারসহ বিভিন্ন জনের সাথে পরিচিত হন। ফিদেলের সরকার কবি হার্বার্টো পদিল্লাকে অন্তরীন করার পরে য়োসা প্তি হন। তিনি ফিদেলের শাসনের বিপে অবস্থান নেন। য়োসা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্বাবিদ্যালয়ে পাঠদান করছে।


সূত্র বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×