তোমার রূপ বর্ণনা করব সে সাধ্য আমার নেই। তবেতো মঞ্জুভাষ মিত্রের
দর্শনার মতো তোমার স্নানলীলার এক সুনিপুণ বর্ণনা তুলে ধরতাম। তোমার
চুলে শ্রীকৃষ্ণের অবিমিশ্র কালো বর্ণ। তোমার আয়ত চোখে তেরো দিনের
বিশুদ্ধ উদাসীনতা। তোমার ভ্রূপল্লব অর্জুনের ধনুক। তোমার তীব্র কটাক্ষ
সেই ধনুকের মতোই তীক্ষ্ণ। তোমার ঠোঁট ঠিক তোমার মতোই অভিমানী।
তোমার কানের লতিতে একশ স্বর্ণবাতি।
অরুন্ধতী, তোমার নাকে অদ্ভুত সুন্দর ললাটিকা। তোমার বুকের ভাঁজে
এক সাগর ঝরণা। সেই সাগরে বসে আমি বাল্মিকী হয়ে যাই। তোমার
চুচুক ধরে অস্থির শিশু নাচানাচি করে। অত:পর আমি শিশু হয়ে যাই।
রিরংসা আমার নেই। তোমার পাদমূলে বসে আমি পদসেবা করি।
'হাসলে কন্যা ফুটে উঠে পৃথিবীতে ফুল।' তোমার হাসিতে একশ
গোলাপ ফুটে। আর তোমার অন্ধকার ঠোঁটে ঝরে দুশো রজনীগন্ধা ।
তোমার রূপবর্ণনায় আমার যোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
আমি ভ্যানগগ নই যে তুলির আঁচড়ে এক তোমাকে বা লিওনার্দোও
নই যে এক মোনালিসাকে কল্পনা থেকে নামিয়ে নিয়ে আসব এই
মর্ত্যের পৃথিবীতে। আমি নিতান্তই এক রাসভনিন্দিত কবি। আমার
ভাবনাগুলি তাই কল্পনার আকাশেই দিব্যি তারা হয়ে জ্বলে।