যেদিন তুমি প্রথম আমার হাতটি ধরলে আমি অবাক হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ঠিক জানিনা কেন! কিন্তু তুমি মাথা নিচু করে ছিলে। কেন? সেটা আজও বুঝিনি। হয়তো তোমার অতীত ইতিহাস মেনে নিয়েছিলাম বলে লজ্জা পাচ্ছিলে। বিশ্বাস করো, আমার কাছে সবসময় তুমি জরুরী ছিলে। তোমার এই হাতটি ধরার জন্য আমি আটটি বছর অপেক্ষা করেছি। আজ যখন সেই সুযোগ পাচ্ছি, তখন অন্য কারো ছায়া কেনো তোমার আমার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়াবে?
“বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে তোমার জন্য ক’টা ছেলে সারাদিন ভাবে? বলতে পারো, ক’জন ছেলে তুমি ডেকেছো বলে ফাইনাল এক্সাম ফেলে ছুটে আসে? শুনেছি মেয়েরা নাকি সত্যিকার ভালোবাসা বুঝতে পারে। এ ক্ষমতা প্রকৃতিই তাদের দিয়েছে। তুমি কেন আমার ভালোবাসা বুঝছ না? কেন আমাকে ফেলে অন্য কারো হাত ধরে ঘুরছ?” – হাত ধরার আগের রাতে ঠিক এ কথাগুলোই লিখেছিলাম ক্ষুদেবার্তায়। পড়ে তুমি জবাবে লিখেছিলে যা বলার তা সামনাসামনি বলবে। পরদিন বিকেলে তুমি আমার মুখমুখি হলে। আমাকে অবাক করে দিয়ে সপ্তম বারের মত আমাকে ‘না’ বললে। অভ্যস্ত ছিলাম আমি, সত্যি বলছি মন একটুও খারাপ হয়নি আমার। একটা ছেলের সাথে দেড় বছর সম্পর্কের পর তাকে ছেড়ে আসাটা সত্যি তোমার জন্য কঠিন ছিল। আমি কখনো তা আশাও করিনি। তবু তোমার কষ্ট আমার সহ্য হতো না। মাঝে মাঝে যখন কষ্ট পেয়ে আমার কাছে আশ্রয় খুজতে, ইচ্ছে করত টেনে নেই তোমায় বুকের মাঝে। পারতাম না। একটা ছায়া তোমার পাশে দেখতাম সবসময়। আমি চেয়েছিলাম তুমিই সেই ছায়াটি কে সরিয়ে আমার জীবনে আস। হয়তো এটাই আমার ভুল ছিল।
আমাকে যেদিন তুমি সপ্তম বারের মত ‘না’ বললে সেদিন আকাশে মেঘ জমেছিল। বৃষ্টি আমার জন্য সবসময় সৌভাগ্য বয়ে আনে। ভেবেছিলাম সেদিন কালো মেঘের পরে যে বৃষ্টি হবে তা আমার জন্য সৌভাগ্যই নিয়ে আসবে। এসেছিল। তুমি আধঘণ্টা পর আমাকে অবাক করে ‘হ্যাঁ’ বলেছিলে। বলেছিলে তুমি আর ঐ ছেলের কাছে ফিরে যাবেনা। এ সিদ্ধান্তে তুমি অটুট। আমি মুচকি হেসে বলেছিলাম, “এখন কি আই লাভ ইউ” বলবো? তুমি কিছু না বলে মুচকি হেসেছিলে। বাড়ি ফেরার পথে পুরোটা রাস্তা আমার হাত ধরে ছিলে তুমি। মনে হচ্ছিল সপ্ন দেখছি। বিধাতা আমার জন্য এতোটা আনন্দ রেখেছিল এটা আমি সপ্নেও ভাবিনি। মেঘের পর ঐ বৃষ্টি আমার জন্য সত্যিই সৌভাগ্য নিয়ে এসেছিল।
দু’দিন পর যখন তুমি আমাকে আবার না বললে আমি একদমই চমকালাম না। অভ্যস্ত ছিলাম আমি, সত্যি বলছি মন একটুও খারাপ হয়নি আমার। পরের কোথাগুলো এখন আমার কানে বাজে। তুমি বলেছিলে আমি তোমার জীবনে শেষ অপশান! কাউকে না পেলে আমি তো আছিই। আমি চমকালাম। অভ্যস্ত ছিলাম না আমি, সত্যি বলছি অনেক মন খারাপ হয়েছিল আমার।
একটা মেয়ের কাছে বারবার ছোট হতে কার ভালো লাগে বলো? আমিও তো মানুষ। বারবার ‘না’ শোনার পরও তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তুমি আমার চোখে চোখ রেখে বলতে ‘সম্ভব না’, আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলতাম। বিশ্বাস করো, আমি আর ছোট হতে চাইনা। তাই ভালোবাসা, তোমায় দিলাম ছুটি।
তুমি বলেছিলে বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমার মাঝে তুমি পার্থক্য করতে পারো না। আমার সাথে থাকলে তুমি খুশি থাকো। সেটা তো তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথে থাকলেও থাকো। তাহলে তোমার জীবনে আমার বিশেষত্ব কোথায়?
তুমি পাশে না থাকলে আমি কষ্ট পাই... সেটা তো তুমি থাকলেও পাই।
বলতে পারো আমার জীবনে তোমার বিশেষত্ব কোথায়?
আজ তুমি সেই ছায়ায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছ। ওখান থেকে বেরিয়ে আসার উপায় তোমার নেই। কখনো ছিলোও না। আমিও তোমার ছায়ায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি। এখান থেকে বেরিয়ে আসার উপায় আমার নেই। কখনো আসবেও না।
আমাকে যেদিন তুমি সপ্তম বারের মত না বললে সেদিন আকাশে মেঘ জমেছিল। বৃষ্টি আমার জন্য সবসময় সৌভাগ্য বয়ে আনে। ভেবেছিলাম সেদিন কালো মেঘের পরে যে বৃষ্টি হবে তা আমার জন্য সৌভাগ্যই নিয়ে আসবে।
মেঘের পর ঐ বৃষ্টি আমার জন্য সত্যিই সৌভাগ্য নিয়ে এসেছিল।