somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হঠাৎ পাওয়া সুযোগ এবং চমকে ওঠা!

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত রাতে আমার এক পরিচিত বড়ভাই আমাকে আজ সকালে শেরেবাংলা নগর এ অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবন দেখার সুযোগ করে দেন। তার এই হঠাৎ পাওয়া সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে আজ সকাল ১০ টায় আমি, রেদওয়ান রিদন এবং এনায়েত মনন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন পরিদর্শনে যাই। সংক্ষেপে সেই অভিজ্ঞতাই আপনাদের জানানোর জন্যই লিখতে বসা।প্রথমেই ক্ষ্মা চেয়ে নিচ্ছি কারন নিরাপত্তা জনিত কারনে সংসদ ভবনের ভেতরে ক্যমেরা নিয়ে কাউকেই প্রবেশ করতে দেয়া হয়না। তাই ভেতরের কোন ছবিই তুলতে পারিনি। ঝুকি নিয়ে যে কটি তুলতে পেরেছি তা এই লেখার সাথে দেয়া হবে। এবার আসুন লুই আই কান এর এই অনবদ্দ্য সৃষ্টি সম্পর্কে কিছু জানি।

সংসদ ভবন সম্পর্কে সবাই মোটামুটি যা জানে তা আর নতুন করে উল্লেখ করলাম না। কিছু নতুন তথ্য দেবার চেষ্টা করব। আমাদের জাতীয় সংসদ ভবন এর মূল ভবনের আয়তন ৪২৩০০০ বর্গ ফুট। সবকটি ব্লক মিলে মোট আয়তন দাড়ায় ১১০৫০০০ বর্গ ফুট। জাতীয় সংসদ ভবনের দেয়ালে কোন প্লাস্টার করা নেই। এর কারন কি কেউ বলতে পারেন? যদি বছরে এক বারও সম্পুর্ন ভবনটি প্লাস্টার করা হয় তবে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়ে যাবে।

সংসদ ভবনে ঢুকেই আমরা প্রথম যাই সভা কক্ষে। সেখানে স্লাইড শো' এর মাধ্যমে সংসদ ভবন তৈরীর ইতিহাস দেখান হয়। এ কক্ষ থেকে বেরিয়ে আমরা জাই নিচ তলার ঠিক মাঝখানে। সেখানে সংসদ ভবনের গ্রন্থাগার অবস্থিত। এই গ্রন্থাগারে বই এর সংখ্যা ৮৫০০০ এরও বেশি। আপনি চাইলে এ গ্রন্থাগারে বই দান করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে সংসদ সচিব বরাবর দরখাস্ত করতে হবে। আপনার দান করা বই টি তে আপনার নাম উল্লেখ করা থাকবে (নিজের নাম কে এই ভবনে রাখার এটা বিরাট
এক সুযোগ)।
এ গ্রন্থাগারে ১৯৭৪ থেকে আজ পর্যন্ত সকল পত্রিকা আছে।

এরপর আমরা চলে যাই দ্বিতীয় তলার ঠিক মাঝের ঘরে। এই ঘর টির নাম পিজন হল(Pigeon Hall)। প্রত্যেক সাংসদ এর নামে এ ঘরে ছোট ছোট বাক্স রাখা আছে। তাদের নামে আসা চিঠি গুলো এসব বাক্সে রাখা হয়। বাক্স গুলো দেখতে অনেকটা কবুতরের খোপের মতো বলে ঘর টির এমন নামকরন।

পিজন হল দেখা শেষে আমরা যাই পঞ্চম তলায়। এখানে আমরা সংসদ ভবনের নামাজঘর দেখি। নামাজঘরটির ছাদ মোটা কাঁচে ঢাকা যা ঘরটি কে সবসময় আলোতে ভরিয়ে রাখে।

এরপর আমরা চলে যাই মূল অধিবেশন কক্ষে। এটি তৃতীয় তলায় অবস্থিত। অধিবেশন কক্ষে মোট ৩৫৪ টি আসন আছে। এছাড়া আছে প্রেস বক্স, দর্শক গ্যালারী এবং ভি, আই, পি, গ্যালারী। মুল অধিবেশন কক্ষের ছাদে একটি বিশাল ছাতা আছে। এই ছাতাটির হাতলটি আছে নিচ তলায় অবস্থিত লাইব্রেরী তে। এই ছাতা টি “একই ছাতার নিচে আমরা সবাই” অরথ বহন করে। স্পিকার এর আসনটির পেছনে সাত রঙের সমন্বয়ে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” লেখা আছে।

মূল অধিবেশন কক্ষ পরিদর্শন শেষে আমরা যাই নর্থ প্লাজায় যার আরেক নাম প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা। বাজেট অধিবেশনের সময় মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংসদ ভবনে আসেন। তখন তিনি এই পথে ভবনে প্রবেশ করেন। এখান থেকে সংসদ ভবনের একটি ভিন্নধর্মী চেহারা দেখা যায়। এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। নর্থ প্লাজার ছাদে এক প্রকান্ড মৌচাক আছে। প্রতিবছর এ মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। আমরা আমাদের গাইডের কাছ থেকে জানতে পারি যে, এই মৌচাক সেই ১৯৮০ সাল থেকে ওই জায়গাতে আছে। বছর পাঁচেক আগে মৌচাকটি পুরপুরিভাবে কেটে ফেলা হয়। কিন্তু মাস দুয়েকের মাথায় সেখানে আবার মৌমাছিরা বাসা বাঁধে।

নর্থ প্লাজা পরিদর্শন শেষে আমরা বেরিয়ে আসি জাতীয় সংসদ ভবন থেকে। পেছনে ফেলে আসি জীবনের অমূল্য এক অভিজ্ঞতা।

আপনি যদি সংসদ ভবন পরিদর্শনে যেতে চানঃ

• ৫০০ টাকা ট্রেসারী চালানের মাধ্যমে সংসদ সচিব বরাবর আবেদন করতে হবে।
• তাৎক্ষনিক ভাবে প্রবেশের জন্য ৬০০ টাকা নগদ প্রদান করে আবেদন করতে হবে।
• উভয় ক্ষেত্রে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট এর ফটোকপি আবেদন পত্রের সাথে যুক্ত করতে হবে।

আশা করি আপনারা সবাই জাতীয় সংসদ ভবন দেখতে যাবেন এবং লুই আই কান’র এই অসাধারন স্থাপনা উপভোগ করবেন। অভিজ্ঞতা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!

ফেসবুকে একটি অ্যালবাম আছে। এখানে ক্লিক করে ছবিগুলো দেখে আসতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৫৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×