এমিনুনু ফেরী এলাকা- ইস্তাম্বুল
এমিনুনু স্টেশনে নেমে রাস্তা পার হয়ে ফেরী স্টেশন, এখান থেকে বসফরাস প্রণালী দিয়ে এশিয়া অংশের বসফরাস এবং মারমারা সাগরের তীরের অনেক গন্তব্যে ফেরী চলাচল করে। আমার গন্তব্য মারমারা সাগর পাড়ের এশিয়া অংশের কাদিকয় এলাকা। ফেরিতে করে যেতে তিরিশ মিনিটের মত লাগে। সহনীয় ঠাণ্ডা বাতাস, সোনালি সূর্যের আলো নীল বস্ফরাসের হালকা দুলুনি আর ঢেউ বেশ ভাল লাগছিল। ফেরীতে অনেক মানুষ। আমি উপরে উঠে গেলাম। সেখান থেকে চারিদিকে সব দেখা যায়।কিছুক্ষণের মধ্যে ফেরী ছেড়ে দিল। আমরা বস্ফরাস থেকে মারমারা সাগরের দিকে চলতে লাগলাম। গালাতা ব্রিজ বামে রেখে আমাদের ফেরী ইউরোপ থেকে এশিয়া অংশে চলছে। একটু দূরে থেকে বসফরাসের উপর বানানো অন্য ব্রিজগুলো দেখলাম।
বসফরাসের পাড় থেকে ইস্তাম্বুল শহর
গালাটা সেতুপেরুতেই প্রথম চোখে পড়ে নিউ মস্ক বা নতুন মসজিদ। অটোম্যান সুলতানদের মাকেবলা হত ভ্যালিড সুলতান। এই মসজিদ একসময় আগুনে পুড়ে গেলে নতুনভ্যালিড সুলতান ১৬৬৩ সালে তা পুনরায় নির্মান করা শুরু করেন এবং ১৬৬৫ সালে এরনির্মান কাজশেষ হয় । তখন নাম রাখা হয় নতুন ভ্যালিড সুলতান মসজিদ, যা পরেনতুন মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে।
নতুন মসজিদ
ইস্তাম্বুল শহরের পুরোনো অংশ গোল্ডেন হর্ন হিসেবে পরিচিত। এটা অনেকটা ত্রিভুজাকৃতির এই ত্রিভুজের ডানদিকের বাহু মারমারা সাগর আর বাম দিকে সাগরের অংশ ইউরোপীয় ভুখন্ডের মধ্যে সাত কিলোমিটার ঢুকে গিয়ে ইউরোপীয় অংশকেদুভাগে ভাগ করেছে। এই অংশে সাগরের উপর দুটো সংযোগ সেতু আছে। কামাল আতাতূর্ক সেতু এবং গালাটাসেতু। গালাতা সেতু এই দুটোর মধ্যে পুরানো, এর উপর দিয়ে ট্রাম চলে। গালাতা সেতুর কাছেই ইমানুনু ফেরিঘাট।ফেরিতে বেশীর ভাগ মানুষ তুরস্কের, আমার মত দুই চার জন, বাকী কিছু ইউরোপীয়। আবহাওয়া ভাল থাকায় এই ভ্রমন বেশ ভাল লাগছিল। আমার পাশে একটা বাচ্চা খেলছিল তাকে একটা চকলেট দিলাম, সে বাবা মার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তারপর সেটা হাতে নিল, তার বাবা আমাকে ধন্যবাদ দিল। ফেরিতে হালকা নাস্তা ও কোমল পানীয় পাওয়া যায়। খোলা ডেকে দাঁড়িয়ে নাস্তা খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই আশেপাশের মনোরম দৃশ্যের ছবি তুলছিল। ফেরী বেশ পরিচ্ছন্ন, প্রায় সব সারিতে একটা করে বিন রাখা আছে। সবাই সেখানে ময়লা ফেলছে।
কাদিকয় এলাকা, ইস্তাম্বুলের এশিয়ার অংশ
ইস্তাম্বুলের এশিয়া অংশ ইউরোপীয় অংশ থেকে কোন দিক থেকে পিছিয়ে নেই। এখানেও অনেক সুন্দর অট্টালিকা আছে। মারমারা সাগরের পাড়ের দৃশ্য ও নয়াভিরাম। প্রায় ৩০ মিনিট পর আমাদের ফেরী কাদিকয় ফেরী ঘাটে লাগল। সেখান থেকে নেমে একটা টুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টারে গেলাম। সব ম্যাপ তুর্কী ভাষায়, ইংরেজি ভাষার কোন কিছু পেলাম না। ইউরোপীয় এবং অন্যান্য পর্যটকের পাশাপাশি তুরস্কেরও অনেক মানুষ তাদের নিজেদের দেশে ঘুরে বেড়ায়।
মারমারা সাগর ইস্তাম্বুল
- ঐতিহাসিক কিছু তথ্য নেট থেকে
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬