বিচার আমরা কার চেয়েছিলাম? জামাতের নাকি যুদ্ধাপরাধীর? প্রথমত এদেশের মানূষ যখন আন্দোলনে নামে তখন কিন্তু যুদ্ধাপরীদের বিচার দাবীতে এক হয়েছিল তা হলে এখানে জামাতের নাম কেন আসল? জামাতের নাম এক কারনে আসল যে জামাত পরিচালিত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীর দ্ধারা তাই সময়ের দাবীতে সাধারন জনগনের দাবী এসে দাড়ায় জামাত নিষিদ্ধ হোক। আমরাও সাধারন জনগন তাই চেয়েছিলাম।
এই সময় আবার ও শুরু হল ভোটের রাজনীতি। আর জামাতের সূক্ষ খেলার চাল। সেই চালে আজকে এসে দেখি আবারও আওয়ামী বিএনপি মুখোমুখী। রাজাকারের ফাসি চাই এখন এক স্লোগান সর্বস্য হয়ে দাড়ায়। আজকের হরতালে বিএনপি সমর্থন দেয় ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে। ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে সামনে রেখে জামাত শিবিরের নেতা কর্মীরা পরিকল্পনা মাফিক অরাজকতার সৃষ্টি করে ফলশ্রুতিতে বেশ কয়েকটি লাশ পরে।
ধর্মের ব্যাপারের এই দেশের মানূষ সবসময় ই দূর্বল। সেই দূর্বলতা কে অত্যান্ত সুনিপুন ভাবে পরিচালিত করছে জামাত। বেশ কয়েক টি লাশ পরার পর ধর্মভিত্তিক দল গুলো আগামী ২৬ ও ২৮ তারিখ আবার প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল ডাকে, খেয়াল করুন আমি কিন্তু বলছি ধর্ম ভিত্তিক দল জামাত না। মানে জামাতের পক্ষ থেকে কি সুকৌশলে এদেশের মানূশের ধর্মীয় দূর্ব্লতা কাজে লাগানো হয়েছে।যেখানে আগনিত ধর্ম ভীরু মানূষের বিশ্বাসের আড়ালে আজকে ডাকা পরে গেছে যুদ্ধাপরাধীরা। তা হলে কি হল যুদ্ধাপরাধী তথা জামাত আবার ভিড়ে মুখ লুকাল?
আওয়ামী সরকার কি এরপর নিযামী বা গো আযমের ফাসি দেবার মত শক্ত মানসিকাতা দেখাতে পারবে? পারবে। অবশ্য ই পারবে যদি আওয়ামীলীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে এই মূহুর্তে বিএনপি কে যুক্ত করে। ঠিক এক দিন লাগবে এদেশ থেকে যুদ্ধাপরাধী নির্মূল করতে। কথা হল আওয়ামীলীগ কি বিএনপির সাথে বসে একমত হবে সমস্ত যূদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে?
এদিকে বিএনপি গত কিছুদিন যাবত জামাতের প্রতি দূর্বলতা দেখিয়ে আসছে কারন এদের মূক্তিযোদ্ধা লবির নেতারা অনেক আগে থেকেই দলে কোন ঠাসা। তারপর ও গনজাগরনের মুখে এক সময় বিএনপি বাধ্য হয়েছিল যুব সমাজকে সমর্থন করতে। ধর্ম ভিত্তিক দল সাথে রাখার জন্য স্বভাবগত ভাবেই বিএনপি একাজটা করে। কি হল ব্যাপারটা? এ মূহুর্তে আওয়ামীলীগ কে মুখোমুখি হতে হচ্ছে ধর্ম ভিত্তিক মানূষ আর বিএনপি র যেখানে জামাত কিন্ত ঢাকা পরে গেছে ধর্ম বিশ্বাসী মানূষ আর বিএনপির ছত্রছায়ায়।
৩ রা মার্চ আওয়ামীলীগ আবার বিক্ষোভ আয়োজন করছে। এই বিক্ষোভ হরতালে ঢাকা পরে গেছে যুব সমাজের এদেশের মানূষের প্রানের দাবী।
আওয়ামীলীগের কাছে আজকে দেশে দুই ধরনের মানূষ আছে এক হল স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষের আর স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি, এ ক্ষেত্রে আওয়ামী রাজনীতি কিন্তু একক ভাবে বিজয়ী দল। এনিয়ে কোন সন্দেহ নাই মানূষ এক্ষেত্রে আওয়ামী শক্তির পক্ষে। বিএনপির জামাত তোষনের কারনে জামাত এক্ষেত্রে সব সময়ই সুবিধা নিয়ে গেছে। কিন্তু আওয়ামীলীগ একটা জিনিস ভূলে গেছে বিএনপির সমর্থন ছাড়া এদেশের জামাতের বিচার সম্ভব না। কেন?
কারন হল জামাত কিন্তু আর শিশু না স্বাধীনতার ৪২ বছরে সেই বিষবৃক্ষ আজকে মহীরুহে পরিনত হয়েছে বিএনপিতে তো আছেই আওয়ামীলীগের নিজের দলেও সেই বিষ বৃক্ষ শাখা প্রশাখা বিস্তার করছে। আজকে যে কারনে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জোর গলায় দাবী করতে পারেনি সেই একই কারন আওয়ামীলীগেও ঢুকে যাবে, মানে আওয়ামীলীগেও জামাত আরো প্রভাব বিস্তার করবে।
কিভাবে করবে? যেভাবে বিএনপিতে করছে মানে অর্থনৈতিক ভাবে, অর্থনৈতিক ভাবে জামাত ভীষন রকম শক্তিশালী আর অর্থের কাছে অধিকাংশ বিবেকই এক সময় পরাস্ত হয়। শাহবাগ থেকে কিন্তু প্রাপ্তি আমাদের হয়েছে, সেটা হল এই বসন্ত কিন্তু আবার দ্বিতীয় যুদ্ধের অনুপ্রেরনা দিয়ে গেল। বলে গেল যুদ্ধাপরাধী তোমাদের ক্ষমা নেই।
এই গনজাগরন কিন্তু একটা অশনীসংকেত। কাদের জন্য তাকি জানেন? এই অশনী সংকেত কিন্তু আওয়ামীলীগ আর বিএনপির প্রতি। জনগন কিন্তু আপনাদের ডাকের জন্য আর অপেক্ষা করেনি এই বোধ হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় গনজাগরন যেখানে আওয়ামী বিএনপি যেয়ে পরে আত্মীকরন হয়েছে।
যে জনগন অন্যায়কে অন্যায় বলা একবার শুরু করছে তারা কিন্তু এখন থেকে যেকোন অন্যায় কে অন্যায় বলতে দ্বিধা করবে না। আমাদের প্রানের দাবী ছিল রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ। আমদের যত দেরী হবে এই কাজে ততই আমরা আপনাদের দায়ী করব। এবারের অন্দোলন আপনাদের বিশ্রী রাজনীতির জন্য প্রলম্বিত সেটাকে আপনারা যতই নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করেন না কেন আমরা কিন্তু বলে যাব।
প্রিয় আওয়ামীলীগ আজকে কিন্তু আমাদের একটি আঙ্গুল আপনাদের দিকে কারন আপনাদের এক তরফা সুযোগ নেবার জন্য আন্দোলন দলীয় রূপ নিয়েছে। প্রিয় বিএনপি আমাদের আর একটা আঙ্গুল কিন্তু আপনাদের দিকে অনেক আগে থেকেই, জামাত তোষন নীতি আপনাদের জনপ্রিয়তা কে কিন্তু অনেক আগেই নিম্নমূখী করা শুরু করেছে। কবে আপ্নারা এই দলীয় বাতাবরন থেকে বের হবেন?
পরস্পরকে দোষারোপ করার অসুস্থ্য মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসেন। না হলে কিন্তু ইতিহাসে আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। জনগনের শান্তিপূর্ন আন্দোলন আজকে আপানাদের দলীয় মনোবৃত্তির জন্য ভাঙ্গচুড়ের আন্দোলনে পরিনত। আমরা এটা চাই নি কিন্তু। আমরা শান্তি চাই। জামাত চায় গৃহযুদ্ধ। আপনারা এক না হলে কিন্তু আনেকটা তাই হবে, এর জবাবদিহী কিন্তু আপনাদের করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১